শনিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১০

দৌলতপুরে জবাই করা লাশ


কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের মাঠ থেকে আজ সকালে এক যুবকের জবাই করা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এলাকাবাসী জানায়, শুক্রবার বিকেলে হোগলবাড়িয়ার ফারাকপুর গ্রামের বজলা ফকিরের ছেলে সেলিম (২৫) বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে যায়নি। আজ সকালে পাশ্ববর্তি পল্লী বিদ্যুত ষ্টেশনের পাশের মরগাটি মাঠে তার জবাই করা লাশ পাওয়া যায়।

রবিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১০

শীর্ষ চরমপন্থী শাহিন ভারতে গ্রেফতার...!


কুষ্টিয়া পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী গণমুক্তিফৌজের শীর্ষস্থানীয় নেতা শাহীন (৩৮)কে ভারতে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁ থানার পুলিশ তাঁকে গত শনিবার গভীর রাতে আটক করে। সেখানকার পুলিশ বিষয়টি অনানুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করলেও এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, বনগাঁ থানার এসডি শ্যামেন্দ্রনাথের নেতৃত্বে পুলিশের বিশেষ একটি দল নদীয়া জেলার শান্তিপুরের পাঁচপোতা গ্রামের মিকাইল নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে তাকে আটক করে। কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন খানও শাহিন আটকের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ভারতের ওই স্থানে সে সোহেল আহম্মেদ মন্ডল ওরফে দিপু পরিচয়ে গত কয়েক মাস ধরে বসবাস করে আসছিলো। আটক করার আগে তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন বলে জানা গেছে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে দুটি মুঠোফোন ও বেশ কয়েকটি সিম জব্দ করা হয়। শাহীন দীর্ঘকাল যাবত তাঁর পরিচয় গোপন করে ‘সোহেল আহমেদ মন্ডল ওরফে দীপু’ নামে সেখানে বাস করে আসছিলেন। তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুরে। কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভারতের বনগাঁ থানার পুলিশ সোহেল আহমেদ ওরফে দীপু নামে এক বাংলাদেশিকে আটক করেছে বলে আমরা জেনেছি। তিনি শাহীন বলেই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।’ শাহিন দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের শীর্ষ চরমপন্থী সংগঠন গণমুক্তিফৌজের সামরিক শাখা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। সোহেল আহমেদ ওরফে দীপুর নামে বনগ্রাম থানায় দুইটি হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বাংলাদেশে কুষ্টিয়াঞ্চলের বিভিন্ন থানায় শাহিনের বিরুদ্ধে হত্যাসহ প্রায় দুই ডজন মামলা ও অর্ধশতাধিক জিডি রয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের মোষ্ট ওয়ান্টেড শাহিন কুষ্টিয়ার শহরের কালিশংকরপুরের সুলতান রুমীর পুত্র।
কে এই শাহিন :বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শাহিনের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানা কৃত্তিনগর গ্রামে। তার পিতা কুষ্টিয়া পশু হাসপাতালে চাকুরী করতেন। এই সুবাদে কুষ্টিয়ার শহরের কালিশংকরপুর জামতলা মোড়ে নিজেরা বাড়ি তৈরী করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে শাহিনের পরিবার। এসএসসি পাশ করার পর শাহিন ভর্তি হয় যশোর পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটে। একবছর পর সেখান থেকে বদলী হয়ে আসে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে। পাওয়ার বিভাগের ছাত্র শাহিন ১৯৯৮ সালে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ছাত্র সংসদের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভিপি নির্বাচন করেন। অল্প ভোটের ব্যবধানে পারাজিত হন শাহিন। স্থানীয় সামাজিক দ্বন্দ্ব, তার পরিবারের সদস্যদের ওপর এলাকার সন্ত্রাসীদের নির্মম অত্যাচার শুরু হয়, শাহিনের মায়ের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলা, তার বাড়ি ঘর লুটপাটের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ছাত্র থেকে রাতারাতি শীর্ষ সন্ত্রাসী হয়ে ওঠে শাহিন। এলাকায় গড়ে তোলে বিশাল এক সন্ত্রাসী বাহিনী। একদিকে নসু-শাহিন বাহিনী অপরদিকে সিরাজ বাহিনী। এই দুই বাহিনীর কোন্দলে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটতে হতে থাকে কালিশংকপুর এলাকায়। অল্প দিনের মধ্যে অপরাধ জগতের মুকুটহীন সম্রাট বনে যায় শাহিন। ১৯৯৯ সালে কুষ্টিয়া ষ্টেডিয়ামে তৎকালীন স্বরাষ্টমন্ত্রী নাসিমের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পন করে শাহিন। এরই মধ্যে খুন হয় নসু। নসু খুনের প্রতিশোধ নিতে আবারও মরিয়া হয়ে ওঠে শাহিন রুমী। তাত্ত্বিক কমিউনিষ্ট নেতা মীর ইলিয়াস হোসেন দিলীপের হাত ধরে শাহিন যোগ দেয় শ্রমজীবী মুক্তি আন্দোলনে। কিছুদিনের মধ্যে সামরিক শাখার প্রধান বনে যায়। কালিশংকরপুরের আক্তার, আড়–য়াপাড়ার আল হেলাল মদন, হরিশংকরপুরের রফিক, ভাটা পাড়ার হেরোইন সম্রাজ্ঞী আলেয়া, ঠিকাদার নান্নু, ফয়েজ, জামু, হাবিব, সন্ত্রাসী মানু, সুলতান ,কালিশংকরপুরের শফি, জাসদ নেতা জামাই বাবুসহ প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ খুন হয়েছে শাহিনের নেতৃত্বাধীন গণমুক্তিফৌজ ক্যাডারদের হাতে। অপরাধের তুলনায় শীর্ষ এই চরমপন্থী নেতা নামে মামলার সংখ্যা অনেক কম বলে পুলিশ জানিয়েছে। জামাত বিএনপি জোট সরকারের মাঝামাঝি সময় থেকে এ পর্যন্ত ক্রসফায়ারে শাহিনের প্রায় আাড়াইশ ক্যাডার নিহত হয়েছে। ক্রসফায়ার চালু হলে শাহিন অবস্থা বেগতিক দেখে ভারতে পাড়ি জমায়। সেখান থেকেই তিনি নিয়ন্ত্রন করতেন দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের আন্ডার্রওয়াল্ড। টেন্ডারবাজিকে তিনি একমাত্র অর্থ উপার্জন মাধ্যম হিসেবে গ্রহন করেন। কুষ্টিয়া ঝিনাইদহ জেলার সকল সরকারী দপ্তরের টেন্ডার গণমুক্তিফৌজের নিয়ন্ত্রনে। সম্প্রতি গণমুক্তিফৌজের প্রধান আমিনুল ইসলাম মুকুল ভারতে গ্রেফতার হন। বর্তমানে তিনি ভারতের কারাগারে রয়েছেন। মুকুল গ্রেফতারের পর থেকে শাহিন নদীয়া জেলার ওই গ্রামে বসবাস করতো বলে জানা গেছে। এর আগেও গত বছর শাহিনকে ভারতে পশ্চিমবঙ্গের বনগ্রাম থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। অল্পদিনের মধ্যে তিনি সেখান থেকে জামিনে বেরিয়ে যান।

কুষ্টিয়ায় পুলিশের ক্রসফায়ারে একজন নিহত....

শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের দরবেশপুর গ্রামের পেঁপে ও কলা বাগানে নিহত হয় চরমপন্থি আলমগীর মন্ডল (৩০)। পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধের সময় সে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ আরো জানায়, নিহত আলমগীর নিষিদ্ধ ঘোষিত শীর্ষ চরমপন্থী সংগঠন গণ মুক্তিফৌজের দুর্ধর্ষ কিলার। তারা সেখান থেকে একটি বন্দুক, ৫টি ককটেল বোমা, ৫ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, ৪ গুলির খালি খোসা ও বেশ কয়েকটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে।পুলিশ বক্তব্য....শনিবার রাত ১১ টায় তারা গোপন সংবাদ পায় শীর্ষ চরমপন্থী সংগঠন গণমুক্তিফৌজের দূর্ধষ কিলার (শুটার) আলমগীর মন্ডল তার সহযোগিদের নিয়ে বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টির লক্ষে দরবেশপুর গ্রামের বাগানে বৈঠক করছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে তাৎক্ষনিকভাবে কুষ্টিয়া সদর থানা ও স্থানীয় ক্যাম্প পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। পুলিশ সদস্যরা সেখানে পৌছে ঘটনাস্থলের চারিদিক ঘিরে ফেলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চরমপন্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। শুরু হয় বন্দুকযুদ্ধ। ২০ মিনিটের এ বন্দুকযুদ্ধে ক্রসফায়ারে পড়ে চরমপন্থী আলমগীর মন্ডল ঘটনাস্থলেই মারা যায়। অপর সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি বন্দুক, ৫ টি ককটেল বোমা, ৫ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, ৪ গুলির খালি খোসা, ও দেশীয় ধারালো অস্ত্র একটি রাম দা, চাইনিজ কুড়াল ও ছোরা উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আলমগীর কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল মিলপাড়ার মৃত হাসান মন্ডলের ছেলে। তার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া সদর থানায় ৪টি হত্যা ও একটি ডাকাতি, বিষ্ফোরক এবং চাঁদাবাজিসহ ৭টির অধীক মামলা রয়েছে বলেও পুলিশ জানায়।

বুধবার, ৭ এপ্রিল, ২০১০

কুষ্টিয়ায় ক্রসফায়ারে নিহত চরমপন্থি মান্দার


কুষ্টিয়ায় ক্রসফায়ারে নিহত চরমপন্থি মান্দার

কুষ্টিয়ায় ক্রসফায়ারে গণবাহিনীর প্রধান মান্দার নিহত

গণবাহিনীর প্রধান শীর্ষ চরমপন্থি আশরাফুল ইসলাম ওরফে মান্দার (৪০)কুষ্টিয়ায় নিহত হয়েছে। র‌্যাব জানিয়েছে তাদের সাথে বন্দুকযুদ্ধের সময় সে নিহত হয়েছে। এ সময় সেখান থেকে একটি পয়েন্ট টুটু বোর রাইফেল, একটি দেশী তৈরী এলজি, ৪টি হাত বোমা, ১২ রাউন্ড গুলি ও বেশ কয়েকটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে র‌্যাব।
র‌্যাব বক্তব্য এমন...বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানাধীন ঝাউদিয়া ইউনিয়নের মধ্য খোর্দ্দ বাখইল গ্রামে একটি মাঠে চরমপন্থী সংগঠন গণবাহিনীর বর্তমান প্রধান মান্দার তার সহযোগিদের নিয়ে বড় ধরনের অপরাধ সংগঠিত করার জন্য বৈঠক করছিল। এমন সংবাদে র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ইউনিটের একটি দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। র‌্যাব সদস্যরা সেখানে পৌছে ঘটনাস্থলের চারিদিক ঘিরে ফেলে। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে এবং অবস্থা বেগতিক ভেবে চরমপন্থীরা প্রথমে বেশ কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় র‌্যাব সদস্যরা মাটিতে শুয়ে নিজেদের রক্ষা করে। এরপর ঘটনাস্থল থেকে পালাতে চরমপন্থিরা র‌্যাবকে লক্ষ্য গুলি বর্ষণ শুরু করে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। শুরু হয় বন্দুকযুদ্ধ। ২০-২৫ মিনিটের এ বন্দুকযুদ্ধে সন্ত্রাসীরা টিকতে না পেরে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। গুলি বিনিময় থেমে যাওয়ার পর র‌্যাব সদস্যরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘটনাস্থলে ব্যাপক তল্লাশী চালায়। এ সময় সেখানে একজন গুলিবিদ্ধ লাশ পরে থাকতে দেখা যায়, যা স্থানীয়রা গণবাহিনীর প্রধান চরমপন্থী মান্দার বলে সনাক্ত করে বলে ।
সেখান থেকে র‌্যাব সদস্যরা চরমপন্থীদের ফেলে যাওয়া একটি পয়েন্ট টুটু বোর রাইফেল, একটি দেশী তৈরী এলজি, ৪টি হাত বোমা, ১২ রাউন্ড গুলি ও বেশ কয়েকটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে বলে দাবি করে। র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়ার মেজর জাকির হোসেন জানান, নিহত চরমপন্থী মান্দার বাখইল গ্রামের আফজাল মন্ডলের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ইবি থানায় ৪টি হত্যাসহ মোট ৭টি মামলা ও ১১টি জিডি রয়েছে। মান্দার তার চাচা জাসদ গণবাহিনীর প্রধান আজিবর চেয়ারম্যান ভারতে নিহত হওয়ার পর দলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করে আসছিল। শারিরীক গড়নে শক্তিশালী মান্দার ওপারেশন ক্লিনহার্টের সময় সেনাবাহিনীর সাথে কাদার মধ্যে লড়াই করে পালিয়ে গিয়েছিল।

মিরপুরে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে একজন নিহত

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নের আটিগ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ৪ জন। নিহতের নাম আসাদুল ইসলাম (৩৫)। গ্রামবাসীর নিকট থেকে শোনা তথ্যমতে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আটিগ্রামে একটি মেয়েকে কেন্দ্র করে তর্কে লিপ্ত সাইদুল-রহিম গ্রুপ ও আসাদুল গ্রুপ। পরে সাইদুল-রহিম গ্রুপ ধারালো অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে আসাদুলের পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা করে। এসময় আসাদুল ও তার দুই ভাই মুসা, কালু এবং ভাতিজা রাকিবুলসহ ৫ জন আহত হয়। এদেরকে ভর্তি করা হয় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আসাদুলের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে তার ভাই মুসা ও কালু। এদিকে, আসাদুলের মৃত্যুর পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকাবাসী জানায়, যে কোন সময় আবারও ভয়াবহ সংর্ঘষ হতে পারে।