সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০০৯

স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা, স্বামী-শ্বাশুরী গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামে ঘটেছে এ ঘটনা। রোববার সকাল ১০টার দিকে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী-শ্বাশুরী পিটিয়ে হত্যা করেছে ৩ সন্ত্রানের জননী গৃহবধূ সাবানা খাতুন (৩৪) কে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্য এমন, পিটিয়ে হত্যার পর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে সাবানা খাতুন বিষ পান করেছে এ কথা বলে স্বামী ইউনুস আলী তাকে ডাক্তারের নিকট নিয়ে যাচ্ছিল। ইউনুস আলীর গতিবিধি সন্দেহজনক হলে গ্রামবাসী তাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করতে থাকে। একপর্যায়ে সে মৃত স্ত্রীকে ফেলে রেখে দৌড়ে পালাতে যায়। গ্রামবাসী তাড়া করে ধরে ফেলে তাকে পুলিশে দিয়েছে। ইউনুস পুলিশের নিকট স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এ কাজের সাথে তার মায়ের সম্পৃক্ততার সন্দেহে পরে পুলিশ তাকেও গ্রেপ্তার করেছে।

কুষ্টিয়া : ঈদের জামাতে দুদু ও র‌্যারিষ্টার

কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রধান জামাত। এখানে জামাত শুরুর আগে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর আসনের এমপি খন্দকার রশীদুজ্জামান দুদু। এছাড়াও বাংলাদেশ সূপ্রীম কোর্ট আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি ব্যারিষ্টার আমীর উল ইসলাম, জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিবর্গ এখানে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে খন্দকার রশীদুজ্জামান দুদু ও ব্যারিষ্টার আমীর উল ইসলাম পরস্পর কোলাকুলি করেন।

সংগ্রহে রাখার মতো : বিআরবি গ্র“প’র সৌজন্যে কুষ্টিয়া পুলিশের ঈদ কার্র্ড

ব্যতিক্রমী ঈদকার্ড বিতরণ করেছে কুষ্টিয়া পুলিশ। ঈদ শুভেচ্ছার পাশাপাশি এই কার্ডে সংযুক্ত করা হয়েছে তৃনমূল পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্থায়ী মোবাইল এবং টেলিফোন নাম্বার। যে কারনে কার্ডটি হয়ে উঠেছে সংগ্রহে রাখার মতো। অন্য সব প্রতিষ্ঠানের বিলি করা গতানুগতিক কার্ডের বাইরে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ছাপা কার্ডটি এখন সুধী মহলে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে। অন্যান্য কার্ডের ভীড়ে এটি হারিয়ে যাচ্ছে না, বরং গুরুত্বপূর্ণ হয়েই এটি যেন পুলিশ ডাইরীর ভূমিকা পালন করছে। শুধুমাত্র এই একটি কার্ড সাথে থাকলেই কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের যে কোন পর্যায়ে যোগাযোগ সহজতর হবে। যে কারনে টেবিলের কাচের নীচে এবং মানিব্যাগে ঢুকিয়ে রাখতেও দেখা গেছে অনেককে। এর ফলে কুষ্টিয়া জেলার চরমপন্থী-সন্ত্রাসী দমনে পুলিশ যেমন আরো বেশি তথ্য পাবে তেমনি সাধারন মানুষ যে কোন সময়ে উপযুক্ত পর্যায়ে সেবা চেয়ে খুব সহজেই যোগাযোগ করতে বা সাহায্য চাইতে পারবে। জেলার মেধাবী ও চৌকস পুলিশ প্রধান শাহাবুদ্দিন খান, বিপিএম-এর ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং পরিকল্পনায় অনন্য অসাধারন এ কার্ড প্রস্তুতে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে দেশ সেরা কেবল প্রস্ততকারী প্রতিষ্ঠান বিআরবি গ্র“প অব ইন্ডাষ্ট্রিজ। শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিই নয় এ কার্ড পাচ্ছেন জেলার বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার ২২ হাজার মানুষ। সুধীজন এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে। আর পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন, এ উদ্যোগের ফলে পুলিশি কর্মকান্ডে জনগনের অংশিদারিত্ব নিশ্চিত হবে।বিআরবি গ্র“প’র চেয়ারম্যান মজিবর রহমান’র আর্থিক সহযোগিতায় এ ব্যতিক্রমধর্মী এবং অতি প্রয়োজনীয় সংগ্রহে রাখার মত ঈদ কার্ড দিয়ে ঈদুল আযহা’র শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি বেশ কিছু ম্যাসেজও প্রচার করেছে জেলা পুলিশ। সাদামাটা কিন্তু বাহারি ডিজাইনের এ ঈদ কার্ডে রয়েছে কুষ্টিয়া জেলার পুলিশ সুপারসহ শীর্ষ সকল পুলিশ কর্মকর্তা, সকল থানার ওসি, ৪টি পুলিশ ফাঁড়ি এবং প্রত্যন্ত এলাকার ৩৩টি পুলিশ ক্যাম্পে’র আইসি/ইনচার্জদের স্থায়ী মোবাইল ফোন নম্বর। ব্যক্তিগত হওয়ায় আগে ক্যাম্পের আইসিরা বদলী হয়ে গেলে নতুন আগত আইসি বা ইনচার্জদের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করা লাগতো। কিন্তু অতি সম্প্রতি পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন খানের নিজ উদ্যোগে ৪টি ফাড়ি বা তদন্ত কেন্দ্র থেকে শুরু করে ৩৩টি পুলিশ ক্যাম্পের আইসিদের ু প্রত্যেক থানার ডিউটি অফিসারের জন্য একটি করে গ্রামীনের স্থায়ী মোবাইল নাম্বার প্রদান করেছেন। যা প্রতিটি মানুষেরই সংগ্রহে রাখার মত। জেলা পুলিশের তথ্য মতে এ ধরনের প্রায় ২২ হাজার ঈদ কার্ড ছেপে এখন তা তুনমূল পর্যায়ে বিতরণ করা হচ্ছে পুলিশের সকল ইউনিট থেকে শুরু করে ওয়ার্ড কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের মাধ্যমে। জেলার সুধি সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, রাজনীতিক, আইনজীবী, শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, প্রকৌশলী থেকে শুরু করে বিভিন্ন সমাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের জেলা পর্যায় থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পযায়ের মানুষদেরও এ কার্ড দেয়া হচ্ছে এ ব্যতিক্রমী ঈদকার্ড। নব দিগন্তের সূচনাকারী জেলা পুলিশের ঈদ কার্ডের শুরুতেই পুলিশের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়াবাসির জন্যে করনীয় বিষয়ে কিছু জরুরী কথা বলা হয়েছে।এরমধ্যে রয়েছে, পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ। পুলিশের কর্মকান্ডে জনগণের অংশীদারীত্ব নিশ্চিত করুন। আপনার এলাকায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা গড়ে তুলুন। এছাড়া আরো বলা হয়েছে, কমিউনিটি পুলিশিং এর অবদান, সমাজিক সমস্যার সমাধান। চরমপন্থী, অস্ত্রধারী, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াই একসাথে। সকল প্রকার জঙ্গীপনা ও চরমপন্থীর বিরুদ্ধে গণজাগরণ গড়ে তুলুন। প্রতি ইংরেজী মাসের নিদ্ধারিত তারিখে ওপেন হাউজডে-তে সবাই মিলে থানায় চলো, পুলিশ জনগণ খোলা মনে কথা বলো। নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে পুলিশ অফিসার কর্তৃক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন কর্মসূচী সফল করুন। জীবনে আইনি সহায়তা প্রয়োজন হয়নি এমন মানুষ এ সমাজে খুজে পাওয়া ভার। সে আইনি সহায়তা পেতে এখনকার সময়ে যখন বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছে, সেখানে তৃনমূলের মোবাইলের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রথম বারের মত কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের ঈদ কার্ডে দেওয়া নম্বর সমূহ হচ্ছে, ওসি, কুষ্টিয়া থানা ০১৭১৩৩৭৪২২০, ০১৭২৭০৪৩২০১ ওসি, কুমারখালী থানা ০১৭১৩৩৭৪২২২, ০১৭২৭০৪৩২১২, ওসি খোকসা থানা ০১৭১৩৩৭৪২২১, ০১৭২৭০৪৩২২০ ওসি, মিরপুর থানা ০১৭১৩৩৭৪২২৫, ০১৭২৭০৪৩২২৩, ওসি, ভেড়ামারা থানা ০১৭১৩৩৭৪২২৩, ০১৭২৭০৪৩২৩২, ওসি, ইবি থানা ০১৭১৩৩৭৪২২৬, ০১৭২৭০৪৩২০৬, ওসি, দৌলতপুর ০১৭১৩৩৭৪২২৪, ০১৭২৭০৪৩২৩৫, ওসি, ডিবি কুষ্টিয়া ০৭১-৬২৪০৭, ০১৭১৩৩৭৪২২৭, পুলিশ কন্ট্রোল রুম ০৭১৬২৪১২, ০১৭৩২২৩৮৩২২, এএসপি কুষ্টিয়া সার্কেল ০৭১-৬২৪০৩, ০১৭১৩৩৭৪২১৭, এএসপি ভেড়ামারা সার্কেল ০৭০২২-৭১৩৬৯, ০১৭১৩৩৭৪২১৮, এএসপি (হেডকোয়ার্টার) ০৭১-৬২৪০৭, ০১৭১৩৩৭৪২১৬, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ০৭১-৬২৪০৫, ০১৭১৩৩৭৪২১৫, পুলিশ সুপার ০৭১-৬২৪০০, ০১৭১৩৩৭৪২১৪, সদর পুলিশ ফাঁড়ি ০১৭২৭০৪৩২৪৩, মিলপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি ০১৭২৭০৯১৬৩০, চৌরঙ্গী তদন্ত কেন্দ্র ০১৭২৭০৪৩২১৩, কুমারখালী শহর পুলিশ ফাঁড়ি ০১৭২৭০৪৩২৪৫। এছাড়াও রয়েছে জেলার আরো ৩৩টি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জদের মোবাইল নম্বার। এ সব বিষয়ে গতকাল জেলার পুলিশ প্রধান শাহাবুদ্দিন খান কুষ্টিয়াবাসীকে পবিত্র ঈদ-উল-আযহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, জেলা পুলিশের আহবানে সাড়া দিয়ে চরমপন্থী ও জঙ্গী মুক্ত এবং সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত কুষ্টিয়া গড়ার দৃপ্ত শপথে জেলাবাসীর অবদানের জন্য আন্তরিক অনিন্দন। পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি অপরাধ ও অপরাধি সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়ে পুলিশকে আগামীতেও সহায়তা করার আহবান জানান এবং কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমে একান্ত সহযোগিতা কামনা করেছেন।

কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে ৫লাখ টাকা অনুদান বসুন্ধরার

কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার উন্নয়নে ৫ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে ঢাকার বসুন্ধরা গ্র“প। শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়া সার্কিট হাউজে এক অনারম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়। কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার রশীদুজ্জামান দুদু জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নানের হাতে অনুদানের চেক তুলে দেন। এ অনুষ্ঠানে এমপি দুদু বলেন, সংস্কৃতি ও ক্রীড়াক্ষেত্রে কুষ্টিয়ার যে ঐতিহ্য ছিল পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তা হারিয়ে গেছে। সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে কুষ্টিয়ার যে কুখ্যাতি হয়েছে সে বদনাম ঘুচাতে হলে আমাদের আবার সংস্কৃতি ও ক্রীড়ার উপর জোর দিতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। সুইমিং পুল নির্মানসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজে কুষ্টিয়া ক্রীড়া সংস্থাকে ৭ কোটি টাকা বরাদ্দের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। এ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলী ও সাংবাদিক মনজুর এহসান চৌধুরী।

কুষ্টিয়ায় অপহৃত যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার ২

কুষ্টিয়ায় অপহৃত এক যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার সকালে কুষ্টিয়া পুলিশ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার একটি বাড়ি থেকে গলিত এ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে পুলিশ অপহরণকারী চক্রের জাকির ও মিসকাত নামে দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধারকৃত লাশটি ফিরোজ আহমেদ ওরফে কাজলের। কুষ্টিয়া থেকে ৪ মাস ১৬ দিন আগে সে অপহৃত হয়।
কুষ্টিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার বড়িয়া গ্রামের দেলবার হোসেনের ছেলে ফিরোজ আহম্মেদ কাজলকে গত ১২জুলাই অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা অপহরন করে। এ ব্যাপারে অপহৃতের বাবা মিরপুর থানায় মামলা করে। অপহরণকারীদের ধরতে গত বৃহস্পতিবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকা থেকে পুলিশের তালিকা ভুক্ত চরমপন্থি সন্ত্রাসী নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন পুর্ববাংলা কমিউনিষ্ট জনযুদ্ধের সক্রিয় সদস্য জাকিরকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মেহেরপুরের গাংনীর হাড়াভাঙ্গা গ্রামের মৃত জেকের মোল্লার ছেলে মিসকাত মোল্লা ওরফে কসাই কে আজ শুক্রবার সকালে গ্রেফতার করা হয়। উভয় দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তিতে গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা গ্রামের একটি নির্মানাধীন বাড়ীর মেজে খুঁড়ে অপহৃত কাজলের গলিত মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০০৯

ঈদে সংবাদপত্রে ছুটি, কুষ্টিয়া নিউজ চলবে

পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে আগামীকাল থেকে তিনদিন সকল পত্রিকা অফিস বন্ধ থাকবে। এসময় কোন পত্রিকা প্রকাশিত হবে না। তবে আপনাদের খবরের ক্ষুধা মেটাতে নিরবিচ্ছিন্ন সংবাদ সরবরাহ করবে কুষ্টিয়া নিউজ।

বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০০৯

বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনীর সাধারণ সম্পাদক রতন চৌধুরী আর নেই

বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট সমাজ সেবক মনজুরুল হক চৌধুরী ওরফে রতন চৌধুরী আর নেই। হাজার হাজার ভক্ত আর স্বজনদের কাঁদিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পূর্ব মজমপুরস্থ নিজ বাসভবনে (কতকথা) তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহে.....রাজেউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৬ বছর। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ মুহুর্তের মধ্যে চারিদেকে ছড়িয়ে পড়লে আতœীয়-স্বজনদের পাশাপাশি রাত থেকে শুরু হয় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শুভাকাংখি ও ভক্তদের আগমন। সকাল হতে না হতেই হাজার-হাজার নারী-পুরুষ তাঁর বাসভবনে ভীড় করেন মিষ্টভাষী, নম্র, ভদ্র ও সুন্দর মনের অধিকারী প্রিয় মানুষ রতন চৌধুরীকে শেষবারের মতো দেখার জন্য। সকলের আহাজারিতে সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সকালে তাঁর বাসভবনে উপস্থিত হন কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, বিআরবি গ্র“পের বিশিষ্ট শিল্পপতি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মজিবর রহমান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলী, সদর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি হাজী সেলিনুর রহমান, সাপ্তাহিক ইস্পাত পত্রিকার সম্পাদক আলহাজ্ব ওয়ালিউল বারী চৌধুরী, দৈনিক বাংলাদেশ বার্তার সম্পাদক আবদুর রশীদ চৌধুরী, বিশিষ্ট গবেষক প্রফেসর ড. আবুল আহসান চৌধুরী, বিএইচটি গ্র“পের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান কাকন, জেলা বাস-মিনিবাস মালিক গ্র“পের সাবেক সভাপতি সিহাব উদ্দিন, সাবেক সাধারন সম্পদক এস.এম.রেজাউল ইসলাম বাবলু, কুষ্টিয়া চেম্বারের সভাপতি আশরাফ উদ্দিন নজু, মজমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বশিরুল আলম চাঁদ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন লাবলুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক, সামাজিক, সাংস্কৃতি ও ক্রীড়া সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। গতকাল বুধবার বাদ আসর কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরের ঈদগাঁহ ময়দানে মরহুমের জানাযার নামাজ শেষে পূর্ব মজমপুরস্থ পারিবারিক গোরস্থানে পিতা-মাতার কবরের পাশে তাঁর দাফন সম্পন্ন করা হয়। জানাযার নামাজে শরীক হন অগণিত মানুষ। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী রেখে গেছেন।মনজুরুল হক চৌধুরী রতন ১৯৬১ সালে পূর্ব মজমপুর পিতৃালয়ে জন্ম গ্রহন করেন। তিনি লাঠি খেলার সর্বোচ্চ খেতাব “চক্রমণি” তে ভূষিত হন। তিনি বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা মরহুম সিরাজুল হক চৌধুরীর (ওস্তাদ ভাই) ছোট ছেলে। পিতার মৃত্যুর পরে লাঠিয়াল বাহিনীর হাল ধরেন তিনি। ১৯৮৫ সালে তিনি বাহিনীর সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ছোটবেলা থেকেই বাবার উত্তরসূরী হিসেবে এ বাহিনীকে দেশের সর্বপ্রান্তে ছড়িয়ে দিতে তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিবেদিত ছিলেন। আগামী ৯ ফেব্রয়ারী ঢাকা বঙ্গবন্ধু জাতীয় ষ্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য সাফ গেমসে লাঠি খেলা ও বিভিন্ন কসরত প্রদর্শনের জন্য সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনীর প্রায় ১৩’শ সদস্য সংগ্রহ শেষে বাড়িতে আসেন। তিনি বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনী কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক ছাড়াও কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের পরিদর্শক, কুষ্টিয়া ফ্রেন্ডস্ ক্লাবের সাধারন সম্পদকসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলেন।

বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০০৯

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র পাল্টাপাল্টি সম্মেলন

কুষ্টিয়ায় বিএনপির জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে এক গ্রুপ শিল্পকলা একাডেমিতে, অন্য গ্রুপ ল কলেজে এই সম্মেলন করে। জেলা বিএনপির আহবায়ক সোহরাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে শিল্পকলায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু। এখানে সম্মেলন শেষে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীকে সভাপতি আর সোহরাব উদ্দিনকে সাধারন সম্পাদক মনোনিত করা হয়।
ওদিকে ল কলেজে অনুষ্ঠিত পাল্টা সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির প্রবীণ সদস্য হাবিবুর রহমান। এখানে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মিনহাজুর রহমান আলো। এ সম্মেলনে মিনহাজুর রহমান আলোকে সভাপতি, কুমারখালী পৌরসভার মেয়র নুরুল ইসলাম আনসারকে সাধারন সম্পাদক, এমএ শামীম আরজুকে সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফিরোজ আফতাব উদ্দিনকে ১ নং যুগ্ম সাধারন সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা বিএনপি কমিটি গঠন করা হয়।
কেন দু’টি কমিটি? এ প্রশ্নের জবাবে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পক্ষের সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ শামীম আরজু বলেন, আমরাই প্রকৃত বিএনপি করি। অন্য গ্রুপ লুটপাটকারি, দল ধবংসকারি। তারা ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে ব্যাক্তিস্বার্থে ব্যবহার করতে চায় বলে ত্যাগী ও কার্যকর নেতৃত্ব বাদ দিয়ে ইচ্ছামতো কমিটি গঠন করেছে। বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশ অমান্য করে তারা একই ব্যাক্তিকে জেলা ও থানা কমিটির পদে বসিয়েছে। পক্ষান্তরে আমরা তৃণমূল নেতা-কর্মিদের সমন্বয়ে একটি সুন্দর কাউন্সিল সম্পন্ন করেছি।
অন্য কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের পক্ষের এক নেতা জানান, কিছু নির্দিষ্ট পদ দাবি করে না পেয়ে গুটি কয়েক লোক নিয়ে একটি গ্রুপ জেলা বি্েনপির নামে একটি কমিটি গঠন করেছে। একই ব্যাক্তির দুই পদের ব্যাপারে তিনি বলেন, যারা দুটি পদে মনোনিত হয়েছেন তারা যে কোন একটি ছেড়ে দেবেন।

কুষ্টিয়ায় ক্রসফায়ার : চরমপন্থি ক্যাডার নিহত

কুষ্টিয়ার কুমারখালিতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে (ক্রসফায়ার) তাজু ওরফে তাজবর (৩৫) নামের এক ব্যাক্তি নিহত হয়েছে। পুলিশ বলছে, নিহত তাজু চরমপন্থি সংগঠন নিউ বিপ্লবী কমিনিউষ্টি পার্টির সামরিক ক্যাডার। সে কুমারখালী উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের মৃত আহমদ আলীর ছেলে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৪রাউন্ড গুলিসহ একটি রিভলবার উদ্ধারের খবরও দিয়েছে পুলিশ ।
পুলিশের ভাষ্যমতে, কুমারখালী উপজেলার মীর মোশাররফ হোসেন সেতুর নিকট হাবাসপুর মাঠের মধ্যে নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তাজবর তার সঙ্গীদের নিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছে এমন সংবাদ পেয়ে কুষ্টিয়া ডিবি পুলিশ ও কুমারখালী থানা পুলিশের সদস্যরা মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে সেখানে অভিযান চালায়। সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাজবর ও তার সঙ্গীরা তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ শুরু করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। পুলিশের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বন্দুক যুদ্ধে চরমপন্থিরা পুলিশের প্রতিরোধে টিকতে না পেরে এক পর্যায়ে পিছু হটে। এ সময় এলাকার মানুষ ও পুলিশ সেখানে তাজ বরের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখে। পরে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাতেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত তাজবর দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় নানা অপকর্ম চালিয়ে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে কুমারখালী থানায় একটি হত্যাসহ চারটি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-১, আহত-২

গরু বোঝায় নছিমনের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষে এক গরু ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো দু’জন। নিহতের নাম বাদশাহ। আহত দু’জনকে আশংকাজনক অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পুলিশ লাইন’র সামনে(কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়ক) এ দূর্ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, রাত আড়াইটার দিকে পাবনা থেকে ছেড়ে আসা গরু ভর্তি নছিমনের সাথে বিপরিত দিক থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি দ্রুতগামী ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় নছিমনে থাকা গরু ব্যবসায়ী বাদশাহ। বাদশাহ’র বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ড উপজেলায়।

দৌলতপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ১ কৃষক নিহত, আহত-১৫

ক্ষেতে বিষ দেওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার রাত ৯টার সময় দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মাদাপুর দু’পক্ষের সংঘর্ষে নজরুল ইসলাম ওরফে নজু (৪৫) নামে এক ব্যাক্তি নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে কমপক্ষে আরো ১৫ জন। আহতদের দৌলতপুর ও কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় দৌলতপুর থানায় মামলা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। দৌলতপুর থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, মাদাপুর গ্রামের আফেল উদ্দীনের ছেলে নজরুল ইসলাম নজু কয়েকদিন আগে তাঁর আলুর ক্ষেতে বিষ দেয়। একই গ্রামের নাহারুল ইসলামের পোষা মুরগী সোমবার ক্ষেতের ওই বিষ খেয়ে মারা যায়। এতে নাহারুল ও তার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে নজরুল ইসলামের উপর হামলা চালালে উভয় গ্রুপের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের নজরুল ইসলাম ওরফে নজু (৪৫) নাহারুল ইসলাম (৪০), মাজেদা খাতুন (২৫), কিতাব আলী (৩৫), ইয়াদ আলী (৩২), লেকিমন নেছা (৬০), আতুজান (২০), মাহাতাব আলী (৪০), রোজিনা (২২) সহ প্রায় ১২ জন আহত হয়। এদের মধ্যে নজুকে প্রথমে কুষ্টিয়া ও পরে রাজশাহী হাসপাতালে নেয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০০৯

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় মুকুল গ্রেফতারের খবর

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় মুকুল গ্রেফতারের খবর প্রকাশিত হয়েছে ২৩ নভেম্বর দ্বিতীয় সংস্করনে প্রথম পাতায়। পুরো খবর দেখতে এখানে ক্লিক করুন http://www.anandabazar.com/23south1.htm


ফটো মুডে পড়ুন নিচে।

বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০০৯

লালের মৃত্যুর খবর ভারতের জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার-এ

লালের মৃত্যুর খবর দিয়ে ভারতের জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার ১৮ নভেম্বর দ্বিতীয় সংস্করনে বিস্তারিত লিখেছে। ইন্টারনেট এডিশনে হোমপেজে গুরুত্বপুর্ণভাবে উপস্থাপন করা হয় নিউজটি। লিংক http://www.anandabazar.com/archive/1091118/18south2.htm

নিউজের বাকী অংশ দেখুন

তবে এ পত্রিকাসহ ভারতের আরো বেশক'টি পত্রিকা ঘেঠে আজ আজিবর নিহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।

কুমারখালী বিএনপির বিরোধ আদালতে গড়ালো

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিএনপির একপক্ষ আদালতে আবেদন করে স্থগিত করে দিয়েছে থানা ও শহর বিএনপির কাউন্সিল। গতকাল কুমারখালী পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম আনসারসহ মোট ৬জন বিএনপি নেতা আদালতে আবেদন করেন। কুষ্টিয়ার সহকারি জজ (কুমারখালী) জাবেদ ইমামের আদালতে তারা জেলা বিএনপির আহবায়ক সোহরাব উদ্দিনসহ ১৬ জন নেতাকে বিবাদী করে উল্লেখ করেন, গঠনতন্ত্র না মেনে তারা কুমারখালী থানা ও শহর শাখার কাউন্সিল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ অবস্থায় তারা কাউন্সিল আহবান করলে প্রতিপক্ষ বিএনপি নেতা-কর্মিদের সাথে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষ হতে পারে। আদালত আবেদন বিবেচনা করে বিবাদীদের ৫দিনের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। একই সাথে কুমারখালী পৌর ও শহর বিএনপির কাউন্সিলের উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। উল্লেখ্য কুমারখালী বিএনপির অন্যতম জনপ্রিয় নেতা নূরুল ইসলাম আনসারকে বাদ দিয়ে থানা আহবায়ক কমিটি করায় সেখানে বিএনপির বিভক্তি আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দুই গ্রুপ সকল কর্মসূচী পাল্টা পাল্টি পালন করে। এদের মধ্যে ইতোপুর্বে দু-দফা সংঘর্ষও হয়েছে। এর মধ্যে আগামী ২২ তারিখ একপক্ষ কাউন্সিলের ঘোষনা দেয়।

ইবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম, আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা উদ্ধার

আগামী কাউন্সিলে দলীয় পদ ও হলের কতৃত্ব নিয়ে বিরোধের জের ধরে আজ দুপুরে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মুস্তাক বিল্লাহ নামের এক ছাত্রলীগ নেতাকে এলোপাথারী কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেছে প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগ নেতারা। গুরুতর অবস্থায় তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবুল আরফীনের নেত্বত্বে কুষ্টিয়া ডিবি পুলিশ বঙ্গবন্ধু হলে তল্লাসী চালিয়ে ৫টি হাতবোমা, তিনটি হালকা বন্দুক ও ৪টি রামদা উদ্ধার করেছে। অভিযান চলছে।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চুড়ান্ত রায়কে স্বাগত জানিয়েছে কুষ্টিয়াবাসী

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চুড়ান্ত রায়কে স্বাগত জানিয়েছে কুষ্টিয়াবাসী। কুষ্টিয়ার রাজনীতিবিদ সচেতন মানুষ এ রায়কে ঐতিহাসিক রায় বলে মন্তব্য করেছেন। আওয়ামী লীগের দুটি গ্র“প এ উপলক্ষে মিলাদ, দোয়া, শোকরানা আদায় ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিকেলে শহরের থানাপাড়ায় জেলা আওয়ামি লেিগর কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক আজগর আলীর নেতৃত্বে সন্ধ্যায় মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আজগর আলী বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো মহান নেতাকে কুন করা হয় অথচ এমন সময় ছিল এর বিচার চাওয়ার সাহস ছিলনা। মামলাও করতে পারিনি আমরা। তিনি বলেন, দেরীতে হলেও বিচারের যে চুড়ান্ত রায় হয়েছে তাতে জাতি আজ কলঙ্কমুক্ত হলো। আমরা কুষ্টিয়া বাসী এ রায়কে স্বাগত জানাই। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। অন্যদিকে শহরের আড়–য়াপাড়ায় জেলা আওয়ামী লীগের পৃথক কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলীর নেতৃত্বে সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয় মিলাদ ও আলোচনা। আনোয়ার আলী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় এ মামলার বিচার কার্যক্রম বিলম্ব হয়েছে। তিনি এ রায়কে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে বলেন, এর ফলে এ ধরনের হত্যাকান্ড আর কেউ ঘটাতে সাহস করবে না। তিনি বলেন, শুভবুদ্ধির সকল মানুষ এ রায়কে স্বাগত জানাবে। এদিকে রায় শোনার পর দুপুরেই কুষ্টিয়া আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের নেতা-কর্মিরা রাস্তায় নেমে আসেন। তবে পরিস্থিতি যাতে উত্তপ্ত না হয় সেজন্য সিনিয়র নেতারা মিছিল করতে বারন করেন।

বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০০৯

কুষ্টিয়া পলিটেকনিকে বোমা বিষ্ফোরণ, আহত-১॥ হল খালি করার নির্দেশ

কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটে বোমা বিষ্ফোরণে ছাত্রলীগের এক নেতা গুরুতর আহত হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ জরুরী বৈঠক শেষে ছাত্র-ছাত্রীদের বিকেল ৪টার মধ্যে হল ত্যাগের নিদের্শ দিয়েছে। নির্দেশ মোতাবেক তারা হল ত্যাগ করেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল সকাল ১১টার দিকে এ বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, ইনষ্টিটিউটের মীর মোশাররফ হোসেন ছাত্রাবাসের ২০৯ নং কক্ষের সামনে হঠাৎ করে একটি বিকট শব্দ শোনা যায়। এর পর পরই সেখানে অবস্থানরত ইনষ্টিটিউটের ছাত্র ও কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক তানভির আলম পারভেজ বোমার আঘাতে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। আহত তানভীর জানায়, কিছুদিন আগে বহিরাগত কিছু নামধারী ছাত্রের সাথে ইনষ্টিটিউটের ছাত্রদের গন্ডগোল হয়। এর প্রেক্ষিতে এ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে বলে সকলের ধারণা।

এ কেমন নির্মমতা ?

জানতাম অনেক কষ্ট হবে, চরের মধ্য দিয়ে কাদা পানির মেখে অনেক পথ হাটতে হবে। তবুও গেলাম মানুষ কত নির্মম হতে পারে নিজ চোখে দেখার জন্য। সহকর্মিদের সাথে করে প্রথমে কুষ্টিয়া শহর থেকে যানবাহনে করে মহিষকুন্ডি গেলাম। সেখান থেকে ভারত সীমান্ত সংলগ্ন পদ্মার তীরে গিয়ে যখন দাড়ালাম তখন ঘড়ির কাটায় একদম ঠিক ঠিক দুটো বাজে। যারা আমাদের খবর দিয়ে নিয়ে গেছে অর্থাত নির্মমতার শিকার যারা তারা দু’জন চরের দিকে হাত দিয়ে দেখাচ্ছে ওই যে ওখানে আমাদের জমি। তাদের বলার স্টাইলে মনে হলো এই তো এখানেই কিন্তু তাকিয়ে দেখি বিস্তৃর্ণ এলাকা। বিশাল পদ্মার চর। যতদুর চোখ যায় শুধু ফাকা মাঠ আর নদীর পানি। দুরে আবছা দেখা যায় একদিকে ভারত অন্যদিকে রাজশাহী। যা হোক চরের ভেতর নেমে হাটা শুরু করলাম। প্রথমেই কাদা আর পানি পেরুতে হলো। কাদার মধ্যে বেছে বেছে পা ফেলতে লাগলাম। হঠাত পায়ে এসে লাগলো শীতল পানি। তখন যেমন মনে হলো তেমনটিই করলাম। পানির মধ্যে পুরোপুরি পা ডুবিয়ে নিলাম। আমার দেখাদেখি সহযাত্রী সাংবাদিক সাজ্জাদ রানাও একই কান্ড ঘটালো। দেখাদেখি জহুরুল ইসলামও। যা হোক আমরা হেটে যাচ্ছিতো যাচ্ছিই। এইতো এখানে..বলা আর শেষ হয়না তাদের। আমরা নরম মাটি, বাদামের ক্ষেত, কালাইএর ক্ষেত ফাকা মাঠ পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। যামেলা করছিল কাধের ব্যাগটি। আড়াই কেজি ওজনের ল্যাপটপের ব্যাগটির ওজন মনে হচ্ছিল আধামন। বারবার কাধ বদল করা দেখে কৃষকদের একজন আমার কাছ থেকে ব্যাগটি চেয়ে নিল। পরে একইভাবে পাতলা হলো সাজ্জাদ রানাও। যা হোক আমরা যখন হেটে হেটে ক্লান্তি নিয়ে স্পটে পৌছালাম তখন চোখ আকাশে উঠলো। মাঠের পর মাঠ ফসল শুন্য। দীর্ষ চরে কোথাও ফসল আছে। কোথাওবা শুন্য। এক প্রভাবশালী ব্যাক্তি মহিষ দিয়ে খাইয়ে দিয়েছে এসব কালাই ও বাদামের ক্ষেত। ভিডিও ক্যামেরায় বিভিন্ন এ্যাঙ্গলে টেক করলাম দৃশ্য। এরপর কৃষকদের সাক্ষাতকার নিলাম। তাদের বক্তব্য হলো-এসব জমি একসময় তাদের জমির ক্ষেত ছিল। পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। পদ্মা আবার দুরে সরে যাওয়ায় চর জেগে উঠেছে। তারা এবার চীনাবাদাম ও মাসকালাই রোপন করেছিল। চরের অদুরে রুবেল মহলদার নামের এক ব্যক্তির মহিষের বাথান আছে। তার অর্ধশতাধিক মহিষও আছে। শোনা যায় কালাই, বাদাম বা কাচা ফসল খাওয়ালে গরু মহিষ তাজা হয়। সে কারনে রুবেল একেকটি চরে গিয়ে গভীর রাতে মহিষ দিয়ে ক্ষেত খাওয়ায়। আমাদের আসার খবর শুনে একে একে আরো কৃষকরা আসতে থাকলো। একেক জনের কারো ২০ বিঘা, কারো ৮ বিঘা, কারো ৪ বিঘা কারো ৩ বিঘা জমির ফসল খেয়ে গেছে তার মহিষ। কেউ কেউ বললো দিনের বেলা চোখের সামনেও মহিষ দিয়ে খাইয়েছে ফসল, কিছুই বলতে পারেনি তারা। সবমিলে ১৫জন কৃষকের ১২০ বিঘা জমির ফসল নষ্ট করেছে মহিষে। যখন সব কৃষক একত্রিত হয়ে ফুসে উঠেছে তখন চর ছেড়ে অন্য চরে চলে গেছে রুবেল মহলদার। থানায় মামলা করতে গিয়েছিল ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা। মান্নান নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা রুবেলের পক্ষ নিয়ে তাদের থানা থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। বলেছে স্থানীয়ভাবে পুলিশিং কমিটিতে বিষয়টির সুরাহা করা হবে। কিন্তু কোন সুরাহাই হয়নি। আমরা যখন দৌলতপুর থানার ওসি সাহেবের নিকট বিষয়টি জানতে চাই, তিনি বলেন এ অপরাধে সরাসরি মামলা নেবার বিধান নেই। কোর্টের অনুমতি প্রয়োজন হয়। নানা আইনের কথা বলে আমাদেরকে হাসি মুখে বিদায় দেন। তার বক্তব্যও আমরা রেকর্ড করেছি। আমরা গিয়েছিলাম গত সোমবার। মঙ্গলবার আমাদের এক সহকর্মির নিকট ফোন করেছে ক্ষতিগ্রস্থরাই। বলেছে, ভাই নিউজ করেন না। তারা আমাদের ক্সতিপূরন দিতে রাজি হয়েছে। আপনারা এখন নিউজ করে দিলে আমরা আর কিছুই পাব না। তারা পাওয়ারফুল তো।
বলুন তো এখন কি করবো?

রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় পুলিশ এনকাউন্টারে চরমপন্থী নিহত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে পূর্ব বাংলা কমিউনিষ্ট পার্টি (এম এল) জনযুদ্ধের আঞ্চলিক কমান্ডার মামুনুুর রশিদ ওরফে মামুন (৩৮)। গতকাল রবিবার ভোরে উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের খলিসাকুন্ডি-কাতলামারী মাঠের পাঁচপীর তলার একটি আমবাগানে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১টি এলজি গান, ৪ রাউন্ড বন্দুকের গুলি ও ২ টি রামদা উদ্ধার করেছে। দৌলতপুর থানার ওসি হাসান হাফিজুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন পূর্ব বাংলা কমিউনিষ্ট পার্টি (এম এল) জনযুদ্ধের ক্যাডাররা ওই স্থানে গোপন বৈঠক করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া (সদর) ও দৌলতপুর থানা পুলিশের বিশেষ একটি যৌথ টিম ঘটনাস্থলে যায় এবং বাহিনীর অবস্থান জেনে চারিদিক থেকে তাদের ঘিরে ফেলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। শুরু হয় এক বন্দুকযুদ্ধ। প্রায় আধাঘন্টা ব্যাপী বন্দুকযুদ্ধে চরমপন্থী মামুন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। পুলিশ জানায়, সে তালিকাভুক্ত চরমপন্থী সন্ত্রাসী। তাকে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালিত হয়েছে। চরমপন্থী মামুনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া সদর, দৌলতপুর, মিরপুর ও গাংনী থানায় ২টি হত্যা, ১টি চাঁদাবাজী সহ অর্ধডজন মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। নিহত চরমপন্থী মামুন মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের হোগলবাড়িয়া গ্রামের রেজাউল করিম বান্টু বিশ্বাসের ছেলে।

শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় মাথা কাটার নেপথ্য নায়ক ‘লাল’ ভারতে খুন

যার নাম শুনলেই পিলে চমকে যায় কুষ্টিয়াবাসীর। ধড় আর মাথা একত্রে থাকবে কি-না তা নিয়ে উদ্বেগের শেষ থাকেনা। সেই ভয়ংকর প্রকৃতির চরমপন্থি মাথা কাটার নেপথ্য নায়ক ওবাইদুল ওরফে লাল ভারতে খুন হয়েছে। খুন হয়েছে নিজের সংগঠন গণবাহিনীরই প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপের গুলিতে। পারিবারিক সূত্রে এ খবর নিশ্চিত করা হলেও পুলিশ কিছুই বলতে পারেনি। তার বলেছে আমরাও খবরটি শুনেছি। একের পর এক মানুষের দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে নতুন বিভীষিকার জন্ম দিয়েছিল এই লাল। দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে চরম নির্মমতায় তা বাজার করা ব্যাগে ভরে কয়েক কিলোমিটার দুরে আলাদা করে রাখতো। দুঃসাহসিকভাবে কাটা মাথা রেখেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে। কুষ্টিয়া সড়ক ভবনের গেটে একযোগে তিনটি কাটা মাথা রেখে হিম আতঙ্কের জন্ম দেয় লাল। এ বিভৎসতায় সারা দেশ হতবাক হয়ে যায়। কিন্ত চরম ঔধ্যত্ব দেখিয়ে অবলীলায় এসব কাটা মাথার পাশে জাসদ গনবাহিনী (লাল) ও নিজের মোবাইল নাম্বার লেখা চিরকুট রেখে যায়। অল্প ক’দিনেই সে পুলিশ প্রশাসনের মাথা বিগড়ে দেয়। তাকে ধরার জন্য এবং তার বাহিনীকে দমনের জন্য আদাজল খেয়ে নামে পুলিশ। পুলিশ ও র‌্যাবের প্রধানকে আসতে হয় কুষ্টিয়ায়। পরে পুলিশ ও র‌্যাব আক্রমনাত্মক অভিযান চালিয়ে একের পর এক বন্দুকযুদ্ধে চরমপন্থি মারা পড়তে থাকলে লালসহ শীর্ষ চরমপন্থিরা সীমান্ত গলিয়ে চলে যায় ভারতে। সেখানে গিয়েও তারা শান্ত থাকেনি। প্রতিপক্ষকে হত্যার মিশনে লেগে পড়ে। এমনি এক মিশনে লাল অধ্যায়ের যবনিকাপাত ঘটেছে। গণবাহিনীরই প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপের ক্যাডাররাই লালকে হত্যা করেছে বলে নিশ্চিত করেছে তার সহযোগী চরমপন্থিরা।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় ছাপা হওয়া এ সংক্রান্ত খবর।
দেখুন এই ঠিকানায়
আজিবর ও কালুর দায় স্বীকার
ওবাইদুল হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেছে গণবাহিনীর প্রধান আজিবর চেয়ারম্যান ও সামরিক শাখার প্রধান কালু। ভারত থেকে কুষ্টিয়ার সাংবাদিকদের মোবাইলে শনিবার রাতে ফোন করে তারা এ হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে। এসময় তারা পার্টির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি পড়ে শোনান। এতে বলা হয়, পার্টির নির্দেশ অমান্য করে টেন্ডারবাজি, নিরীহ লোকজনকে ধরে মাথা কেটে হত্যা, সামরিক শক্তি নিজের কাজের ব্যবহার ও অর্থ আত্মসাতের কারনে পার্টির সকল নেতাকর্মির সিদ্ধান্তক্রমে ওবাইদুল ওরফে লালকে সব্বোর্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নির্ধারন করা হয়। সামরিক শাখার কমান্ডার কালুর নের্তৃত্বে পার্টির একদল গেরিলা রাত ৯টায় গুলি করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। একই সাথে বিবৃতিতে তারা গনবাহিনীর নতুন কমিটির ঘোষনা দেয়। নতুন কমিটিতে আজিবর চেয়ারম্যানকে পার্টির শীর্ষপদ সম্পাদক ও কালুকে পার্টির সামরিক শাখার সম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে। লালের শাস্তি কার্যকরের ব্যাপারে পার্টির কর্মিদের বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য কমিটির পক্ষ থেকে ওই বিবৃতিতে আহবান জানানো হয়।

রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় ৮টি হাতবোমাসহ দুই চরমপন্থী আটক

কুষ্টিয়া গোয়েন্দা পুলিশ এক অভিযান চালিয়ে ৮টি হাতবোমাসহ জাসদ গণবাহিনীর দুই চরমপন্থীকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, মইনুদ্দিন ও ইমদাদুল হক। শনিবার গভীর রাতে এদের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার শান্তিডাঙ্গা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। মইনুদ্দিন সদর উপজেলার পিয়ারপুর গ্রামের ইউসুফ মোল্লার ছেলে এবং ইমদাদুল হক ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার জুগিপাড়া গ্রামের ইরাদ আলীর ছেলে।কুষ্টিয়া সহকারি পুলিশ সুপার (সদরদপ্তর) আলমগীর হোসেন জানান, গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রাত পৌনে ১২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শান্তিডাঙ্গা এলাকার একটি কলা বাগানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে মইনুদ্দিন ও ইমদাদুল হককে। এসময় আরো ৫ চরমপন্থী পালিয়ে যায়। পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের কাছে থাকা ব্যাগ তল্লাশী করে ৮টি হাতবোমা উদ্ধার করে। পরে বোমা গুলো পানিতে ভিজিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়। পুলিশ জানায়, মইনুদ্দিন ও ইমদাদুল হক নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন জাসদ গণবাহিনী ওবাইদুল ওরফে লাল গ্র“পের সক্রিয় সদস্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের টেন্ডার সামনে রেখে আতংক সৃষ্টির জন্য বোমাগুলো ব্যবহার করতো।

মিরপুরে যুবলীগ নেতা অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার, অর্ধদিবস ধর্মঘট পালন

কুষ্টিয়ার মিরপুরে পৌর যুবলীগের সভাপতি ব্যবসায়ী ওয়াহেদ জোয়ার্দ্দারকে গ্রেফতার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে আধাবেলা ধর্মঘট পালিত হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা গতকাল রোববার সকাল থেকে মিরপুরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অর্ধদিবস ধর্মঘট পালন করে। নতুন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আহবানে এ ধর্মঘটে সকল দোকানপাট বন্ধ করে দেয় ব্যবসায়ীরা। ধর্মঘটের কারনে শহরের মধ্যদিয়ে বিভিন্ন রুটের যানবাহন চলাচলও বন্ধ ছিল। ধর্মঘট চলাকালে যুবলীগ নেতা-কর্মি ও ব্যবসায়ীরা দফায় দফায় মিছল করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।শনিবার দুপুরে র‌্যাব সদস্যরা যুবলীগ নেতা ওয়াহেদ জোয়ার্দ্দারকে ধারালো অস্ত্রসহ তার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করে। র‌্যাব জানায়, দেশীয় তৈরি অস্ত্র ও ফেন্সিডিলের বোতলসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। মামলা দিয়ে তাকে আদালতে প্রেরন করা হয়। এদিকে যুবদলের নেতা-কর্মি ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন কোন কারণ ছাড়াই র‌্যাব ওয়াহেদ জোয়ার্দ্দারকে গ্রেফতার করে নির্যাতন চালায়।

শনিবার, ৭ নভেম্বর, ২০০৯

ওভারলুক, টোপ আর সেক্স এই তিন কারনে নারীদের দলে টানছেন চরমপন্থি নেতারা

হাসান জাহিদ, কুষ্টিয়া নিউজ :
প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দেয়া, প্রতিপক্ষকে ফাঁদে ফেলা ও যৌন সংস্পর্শ এই তিন কারনে নারীদের বেশি বেশি দলে টানছেন চরমপন্থি নেতারা। তাদের টার্গেট অসহায়, চালাক-চতুর বখে যাওয়া নারী। বিশেষ করে যাদের চরমপন্থি স্বামী পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে অথবা প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন তারা। প্রথমে এইসব অসহায় নারীদের প্রতি দায়িত্ববোধ দেখিয়ে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সহযোগিতার হাত বাড়াতে গিয়ে আস্তে আস্তে দলের প্রতি দুর্বল করে ফেলা হয়। এরপর স্বামী বা স্বজন হত্যার প্রতিশোধস্পৃহা জাগিয়ে তুলে এদের সাহসী করে তোলা হয়। তারপরই দেয়া হয় ট্রেনিং। একসময় এরাই হয়ে ওঠে দুর্ধর্ষ কিলার। এরা সহজেই একস্থান থেকে অন্যত্র অস্ত্র, অর্থ ও খবর পৌছে দেয়। প্রেমের ফাঁদ পেতে অপহরন করে ফেলে প্রতিপক্ষকে। চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও শীর্ষ রাজনীতিবিদদের যোগাযোগের জন্যও এরা হয়ে ওঠে উপযুক্ত। প্রেপ্তারকৃত মহিলা চরমপন্থিদের গতি, প্রকৃতি, চরিত্র বিশ্লেষন করে এবং পুলিশসহ বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে বের করা হয়েছে এসব তথ্য। প্রশাসনের চোখ ফাকি দেয়া:গত জুন, জুলাই ও আগষ্ট মাসে কুষ্টিয়ার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে আগষ্ট মাসের ২০ তারিখে কুষ্টিয়া সফরে আসেন পুলিশ ও র‌্যাবের প্রধান। তারা পুলিশ ও র‌্যাবকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়ে যাবার পরই শুরু হয় বিশেষ আক্রমনাত্বক অপারশেন। কোন কোন ক্ষেত্রে পুলিশ ও র‌্যাব যৌথভাবে অপারেশন শুরু করে। একের পর এক চরমপন্থিদের গোপন বৈঠকস্থল ও আস্তানায় হানা দিতে থাকে তারা। এরপর সেসবস্থানে বন্দুকযুদ্ধে মারা পড়তে থাকে চরমপন্থি সন্ত্রাসীরা। প্রতিনিয়ত এ ধরনের বন্দুকযুদ্ধ চলতে থাকায় কোনঠাসা হয়ে পড়ে দোর্দান্ড প্রতাপশালী একেকটি চরমপন্থি সংগঠন। খুন খারাবি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। মানুষের মন থেকে ভীতি কমে যায়। আর একারনে চাদাবাজি ও টেন্ডারবাজির ঘটনাও কমে যায়। দক্ষিণ পশ্চিমে সত্রিয় অধিকাংশ চরমপন্থি সংগঠন অপহরনের পর মুক্তিপন আদায়, চাদাবাজি ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে সংগ্রহিত অর্থেই চলে। এসব টাকার উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা নতুন নতুন ফন্দি আটতে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম হলো মহিলাদের দলে ভেড়ানো। কারন আখি গ্রেপ্তারের আগে পর্যন্ত পুলিশ বা র‌্যাব মহিলাদের এভাবে সন্দেহ করতো না। কোন কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনায় দু একজন মহিলার নাম আসলেও পুলিশ তা আমলে নেয়নি। আর একারনে চরমপন্থিরা মহিলাদের দলে ভিড়িয়ে তাদের দিয়ে কার্য হাসিল শুরু করে। কোথাও চাঁদা চাওয়া আবার তা নিয়ে আসতে যাওয়া সবই করা হচ্ছিল মহিলাদের দিয়ে। টেন্ডারবাজির জন্য বিভিন্ন তদবির বা অফিস থেকে কাগজপত্র ও তথ্য নিয়ে আসার কাজে তাদের ব্যবহার করে সহজেই প্রশাসনের চোখ ফাকি দেয়া সম্ভব ছিল। এছাড়াও সচারচর মহিলাদের চেক করা হয়না, সেই সুযোগে প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে এদেরকে দিয়ে অর্থ, তথ্য ও অস্ত্র একস্থান থেকে অণ্যস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। বেছে বেছে রিক্রুট করে ট্রেনিং দিয়ে সবেমাত্র এদের দিয়ে কাজ শুরু করেছিল দু’টি চরমপন্থি সংগঠন। আখি গ্রেপ্তার হবার পর এ পুরো প্রক্রিয়া পুলিশের কাছে ফাঁস হয়ে গেছে। নতুন করে দু’টি চরমপন্থি সংগঠন মহিলাদের নিয়ে এসব কর্মকান্ড শুরু করলেও পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি এমএল-জনযুদ্ধ এ কাজটি অনেক আগেই শুরু করেছিল। প্রায় ৪বছর আগে তারা মহিলাদের দলে ভিড়িয়ে তাদের একটি আলাদা ইউনিট তৈরী করে। যে ইউনিট সহজেই পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে প্রকাশনার কাজসহ পার্টির পক্ষে নানারকম কাজ করে বেড়াতো। র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে এ পার্টির শীর্ষ নেতা আবির হাসান, দাদা তপন, রিক্তা, আকাশ ও টিক্কা কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হবার পর এ অঞ্চলে এ পার্টির তৎপরতা কমে এসেছে। এ কারনে ‘নারী চরমপন্থি’ বিষয়টি চাপা পড়ে ছিল। গত চারদিনে কুষ্টিয়া পুলিশ আখিসহ চার নারী চরমপন্থি প্রেপ্তার হওয়ায় বিষয়টি আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। কুষ্টিয়া সহকারি পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) আলমগীর হোসেন বলেন, নারীদের পক্ষে চোঁখ ফাকি দিয়ে অপরাধ করা একটু সহজ। তবে আমরাও এখন বেশ সতর্ক। নারী চরমপন্থিদের গ্রেপ্তারে বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতিপক্ষকে ফাঁদে ফেলা:চরমপন্থি দলে নারীদের বেশ কদর। এর আরেকটি কারণ হলো তাদেরকে টোপ হিসেবে ভাল ব্যবহার করা যায়। সুন্দরী নারী হলে তো সোনায় সোহাগা। প্রেমের অভিনয় করে যে কাউকেই ডেকে আনা যায়। তার যেমন প্রয়োজন তেমন ব্যবহার করা যায়। অপহরনের কাজেও তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে সচারচর। মোবাইলে প্রেম করে অপহরন করার চেয়ে সহজ আর কোন পদ্ধতি নেই। এভাবে ডেকে এনে হত্যাও করা যায় সহজে। দুই বছর আগে ঢাকার এক সচিবের ছেলে মোবাইলে প্রেমে পড়ে কুষ্টিয়া এসে অপহরন হয়। পরে টাকার বিনিময়ে তাকে ছাড়িয়ে নেয়া হয়। বুধবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া চুমকি স্বীকার করেছে সে বিয়ে করে তার দ্বিতীয় স্বামীকে হত্যা করে। তারপর টার্গেটমতো তৃতীয় স্বামীর সাথে চলছিল। শুধু প্রতিপক্ষকে ফাদে ফেলাই নয়, প্রয়োজনে এদেরকে দিয়ে যে কোন তদবিরের কাজও খুব সহজে কর যায়। টেন্ডারের কাজ পছন্দের ঠিকাদারকে পাইয়ে দেবার জন্য এরা নির্দিধায় সরকারি কর্মকর্তার কাছে তদবিবের জন্য পাঠানো যায়। অনেকসময় কার্য হাসিলের জন্য এরা দৈহিক সম্পর্কও স্থাপন করে। আবার প্রতিপক্ষ কোন ঠিকাদার বা প্রেসার গ্রুপকে হুমকি দিতে তার বাড়িতে পৌছে যায় এরা। মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে হয়রানী করার হুমকি দিয়েও এদের দিয়ে কার্য হাসিলের রেকর্ড রয়েছে। এছাড়াও দলের কোন চরমপন্থির মামলা চালানোর জন্য উকিলের সাথে যোগাযোগের কাজে মেয়েদের জুড়ি নেই। আর কোন হত্যাকান্ডের আগে ঘটনাস্থল ও সিলেক্টেড ব্যাক্তির চলাফেরা রেকি করতে মহিলাদের কাজে লাগানো হয়েছে। সোমবার কুষ্টিয়ায় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া আখি ও রানী কুষ্টিয়ার দুটি হত্যাকান্ডের আগে রেকির কাজ করেছে। শুধুমাত্র নারী হবার কারনে এ সকল কাজে তাদের সফলতা আসে শতভাগ। যৌন সংস্পর্শ :চরমপন্থি দলে নারী সদস্য থাকলে বোনাস হিসেবে নেতারা যৌন সংস্পর্শ পায়। তাদের দলে ভেড়ানোর এটিও একটি উল্লেখযোগ্য কারন। চরমপন্থি নেতা ও ক্যাডারদের গ্রেপ্তারের ভয়ে দীর্ঘদিন পরিবার পরিজন ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হয়। এ কারনে তাদের এ বিষয়ক অতৃপ্তি থেকে যায়। যার ফলে দেখা যায় অনেক চরমপন্থিই অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অন্যের ঘরে ঢুকে ধর্ষনের মতো ঘটনা ঘটায়। আবার জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে স্বামী স্ত্রীর মতো একসাথে থাকার নজিরও কম নেই। সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত চরমপন্থি রশিদ পিয়া নামের এক মেয়েকে এভাবে জোরপূর্বক স্ত্রীর মতো সাথে নিয়ে বেরিয়েছে। এ জন্য সে পিয়ার প্রেমিক জুবায়েরকেও খুন করেছে। মঙ্গলবার কুষ্টিয়ায় গ্রেফ্তার হওয়া চুমকিও দীর্ঘদিন সবুজ নামের এক চরমপন্থির স্ত্রীরূপে ছিল। দাদা তপনের সাথে রিক্তা নামের এক চরমপন্থি র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। রিক্তা দাদা তপনের সার্বুক্ষনিক সহকর্মি ছিল। দলে নারী সহকর্মি থাকলে যৌনকর্ম সম্পাদনের জন্য তাদের ঝুকি নিয়ে অন্যত্র যেতে হয়না। এছাড়াও যেসব চরমপন্থি পুলিশ বা র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে অথবা প্রতিপক্ষের অস্ত্রের আঘাতে মারা যাচ্ছে দলের পক্ষ থেকে তাদের স্ত্রী ও পরিজনকে দেখভাল করা হয়। কুষ্টিয়া জেলায় খুনোখুনি ও বন্দুকযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেক বেশি। এ কারনে এরকম অসহায় বিধবা নারীর সংখ্যাও অনেক। বেশিরভাগ চরমপন্থি সংগঠন দায়বোধ থেকে এসব অসহায় নারীর নিকট অর্থও পৌছে দেয়। এসব অর্থ পৌছাতে গিয়ে তাদের সাথে চরমপন্থিদের সুসম্পর্ক তৈরি হয়। কোন প্রয়োজনে ওইসব মহিলা তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে। একসময় দলের হয়ে তথ্য আদান প্রদান শুরু করে। অনেকের সাথে সৃষ্টি হয় দৈহিক সম্পর্কও। সময় বুঝে স্বামী হত্যার প্রতিশোধের বিষয়টি সামনে এনে এইসব স্ত্রীদের মন শক্ত করে দলে ভেড়ানো হয়। আবার চরমপন্থি কানেক্টেড ব্যাক্তিদের বাড়িতে আসা যাওয়া ও রাত্রি যাপনের কারনে ওই বাড়ির স্ত্রী ও মেয়েরা অনেক সময় তাদের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। একসময় তার চরমপন্থি দলে স্থান পাওয়া ছাড়া কোন গতি থাকেনা। অনেক মেয়ে অপহরন হয়ে চরমপন্থিদের ভোগের পাত্র হয়ে থাকতে থাকতে একসময় তাদের সাথে মানিয়ে নিতে বাধ্য হয়। এছাড়াও মেয়ে সদস্য দলে থাকলে রান্নাসহ মেয়েলি নানারকম কাজে সহযোগিতা পাওয়া যায়।এসব কারনে দিনদিন চরমপন্থি দলে নারী সদস্যর কদর বেড়েছে। বেড়েছে সংখ্যাও। পুলিশের হিসেবে কুষ্টিয়া জেলায় ৩০-৪০ জনের মতো নারী চরমপন্থির কথা বলা হলেও অনেকের ধারণা এ সংখ্যা একশ’র উপরে। আর দলের বাইরে কানেক্টেড নারীর সংখ্যাও আছে দুইশতাধিক। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন, বর্তমানে জেলায় ৩০ থেকে ৪০ জনের মতো নারী চরমপন্থি রয়েছে। তিনি বলেন, নারী হোক পূরুষ হোক অপরাধপ্রবন মানুষের সংখ্যা কম। সমাজের বেশিরভাগ মানুষ আইনমান্যকারি শান্তিপ্রিয়। তিনি বলেন, নারী চরমপন্থিরা একটু বেশি সুবিধা পেয়ে থাকে। এজন্য আমাদেরকেও তীক্ষè দৃষ্টি দিতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে থানা পুলিশের পাশাপাশি আমাদের ডিবি পুলিশ বিশেষভাবে কাজ করছে। তিনি জনগনের সহায়তা কামনা করে বলেন, নারী হোক আর পূরুষ হোক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীর কেউই পুলিশের হাত থেকে পার পাবেনা।

শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০০৯

কুষ্টিয়ার মিরপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গণমুক্তিফৌজের আঞ্চলিক নেতা বাবু নিহত

কুষ্টিয়া ৬ নভেম্বর ২০০৯
কুষ্টিয়ার মিরপুরে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধের সময় নিহত হয়েছে চরমপন্থি সংগঠন গণমুক্তিফৌজের পোড়াদহ অঞ্চলের কমান্ডার মজিবর রহমান ওরফে বাবু। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নের কৈমারা বিলের পাশে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, রাতে কৈমারা বিল এলাকায় গণমুক্তিফৌজের আঞ্চলিক নেতা বাবু সহযোগীদের নিয়ে বৈঠক করছে এ সংবাদের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া গোয়েন্দা পুলিশ ও মিরপুর থানা পুলিশের একটি যৌথ টিম রাত আড়াইটার দিকে সেখানে অভিযান চালায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাদের উপর লক্ষ করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়লে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। এক পর্যায়ে চরমপন্থী নেতা বাবু ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি ও ৪ রাউন্ড বন্দুকের গুলি উদ্ধার করেছে। নিহত বাবুর বিরুদ্ধে ২টি হত্যাসহ মোট ৬টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় গোয়েন্দা পুলিশের চমক : চারদিনে চার চরমপন্থি মহিলা গ্রেপ্তার

চমকের পর চমক দেখাচ্ছে কুষ্টিয়া গোয়েন্দা পুলিশ। গতকালও এক মহিলাসহ দুই চরমপন্থিকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। সোমবার রাত থেকে এ নিয়ে তারা মোট ৪ জন মহিলা চরমপন্থিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। এদের সাথে গ্রেপ্তার করা হয় আরো ৪ পুরুষ। এদিকে বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া মহিলা চরমপন্থি বৈশাখী রহমান ওরফে চুমকিকে বিস্ফোরক, অপহরন ও ছিনতাই মামলায় আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়েছে। আর রিমান্ডে থাকা আওয়ামী লীগ নেত্রী আখিসহ চারজন বিভিন্ন হত্যাকান্ডের বর্ণনাসহ চাঞ্চল্যকর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। বৃহ¯পতিবার দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের আড়–য়াপাড়া এলাকার রবিউল ইসলামের বাড়ি থেকে বের হবার সময় নাহিদ পারভীন চম্পাকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। এসময় রবিউল ইসলামের ছেলে তুষারকেও (২৮) সেখান থেকে গ্রেপ্তার করে তারা। এসময় বাড়ির ভেতর থেকে পালিয়ে যায় তুষারের বড় ভাই তুহিন। পুলিশ জানায়, সেও চরমপন্থি দলের সদস্য। চম্পা শহরের আমলাপাড়া এলাকার ডাঃ আবু বক্কর সিদ্দিকের মেয়ে। বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া মহিলা চরমপন্থি বৈশাখী রহমান ওরফে চুমকি পুলিশের নিকট দুই বোন চম্পা ও নাসরিন তাদের সাথে জড়িত বলে জানিয়েছিল। চম্পা গ্রেপ্তার হবার পর নাসরিন উধাও হয়ে গেছে। কুষ্টিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার সদর দপ্তর আলমগীর হোসেন জানান, চম্পা দীর্ঘদিন ধরে চরমপন্থী সংগঠন গণমুক্তিফৌজের নারী স্কোয়ার্ডের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড ঘটিয়ে আসছিল। আর তুষার একই সংগঠনের জন্য বিভিন্ন এলাকায় চাঁদা তুলতো। জিজ্ঞাসাবাদে চম্পা জানিয়েছে, তার স্বামী আব্দুস সালাম বিশ্বাস দীর্ঘদিন জাপানে ব্যবসা করে। চম্পা সালামের দ্বিতীয় স্ত্রী। দুই বছর আগে সে জাপান থেকে এসে এই বিয়ে করেছে। সালাম ১৯ বছর ধরে জাপানে আছেন। পুলিশ বলছে, ঢাকার মহম্মদপুর এলাকায় শ্বশুর বাড়ির লোকদের সাথে না থেকে চম্পা বেশিরভাগ সময় কুষ্টিয়ায় অবস্থান করে দীর্ঘদিন ধরে চরমপন্থী দলের নারী স্কোয়ার্ডের সক্রিয় সদস্য হিসেবে নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। স্বামী না থাকায় সে অসংলগ্ন চলাফেরা করে থাকে। চরমপন্থিদের হয়ে নানা অপকর্ম করে থাকে। গত দুর্গা পুজার ভীড়ের মধ্যে আমলাপাড়ার এক মন্দিরে এই চম্পা লম্বা ভাঙ্গা কাচের টুকরা দিয়ে ৪/৫ জন ছেলেকে রক্তাক্ত জখম করে। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে চম্পা জানান, গ্লাসে আমারই হাত কেটে যায়। আমি কাউকে আঘাত করেনি। তিনি বলেন, ওই হাতকাটার জন্যই গাছ নিতে তুহিনদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে গ্রেপ্তারকৃত তুষার জানান, তাদের বাড়িতে কোন গাছ দেয়া হয়না। এরা দুজনই গ্রেপ্তারের পর থেকে অসংলগ্ন কথা বার্তা বলে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তুষার একবার চম্পাকে বিয়াইন পরিচয় দেয়। আবার পরক্ষনেই বলেছে তাকে চিনি। আমার কিছুই হয়না।

আঁখির মতো ২৫ নারী চরমপন্থি দলে, আরেকজন গ্রেফতার

কুষ্টিয়ায় একে-৪৭সহ গ্রেপ্তার হওয়া আওয়ামী লীগ নেত্রী তাসলিমা খান আখিসহ ৪ জনের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইনস্পেক্টর মিজানুর রহমান গতকাল দুপুরে আসামীদের কুষ্টিয়ার আমলী আদালত-১ এ হাজির করে তাদের ৭দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করেন। আদালতের বিচারক ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল আজিজ মন্ডল তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ডিবির এসআই নওশাদ বাদী হয়ে মঙ্গলবার আখিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া থানায় অস্ত্র আইনের ১৯-ক ধারায় মামলা করেন। এদিকে গতকাল দুপুরেই আরো এক নারী চরমপন্থিকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। আখিসহ ৪ জন ৫ দিনের রিমান্ডে : সোমবার রাত পৌনে ১১ টায় একটি একে ফোরটি সেভেন, একটি শর্টগান ও ৮২ রাউন্ড গুলিসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েন কুষ্টিয়া শহর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদিকা তাসলিমা খান আখি। কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কের ত্রিমোহনী নামক স্থানে পুলিশ চেক পোষ্টে তাদের বহনকারি সাদা রঙের মাইক্রোবাস তল্লাশ করলে আখির কোমরে গুঁজে রাখা অবস্থায় এ অস্ত্র পাওয়া যায়। এ সময় ওই গাড়িতে থাকা আরো ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত অন্য তিনজন হলো পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং সি/২ এলাকার চরমপন্থী গুড় সোহেলের স্ত্রী রানী খাতুন (২২), কালিশংকরপুরের জামাল উদ্দিনের ছেলে রাজ্জাক (৩৫) ও মাইক্রোবাসের চালক ইবি থানার মহিষডাঙ্গা গ্রামের উমেদ আলীর ছেলে শাহীন (৩২)। পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাদের সাথে নিয়ে রাতেই অভিযান চালিয়ে দৌলতপুরের ডাংমড়কা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে এসব অস্ত্রের সরবরাহকারি আক্কাস আলী (৪৫)কে গ্রেফতার করে। সোমবার রাতে এদের গ্রেফতার করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদ ও অভিযান অব্যাহত থাকায় মঙ্গলবার তাদের থানায় সোপর্দ করা হয়। এইদিন আখিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া থানায় অস্ত্র আইনের ১৯-ক ধারায় মামলা করা। মামলা নং-৩। এদের মধ্যে ড্রাইভার শাহীনকে বাদ রেখে বাকী চারজনকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে গতকাল বুধবার আদালতে তোলেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা। এদিকে রিমান্ড না চাওয়া ড্রাইভার শাহীনকে গতকাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আকরাম হোসেনের আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।মামলায় যা বলা হয়েছে : ডিবির পুলিশের এসআই নওশাদ বাদী হয়ে মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০ টায় কুষ্টিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এতে বলা হয়, হাইচ মাইক্রোবাসে করে আসামীরা কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। সোমবার রাত সাড়ে ১০ টায় সিগনাল লাইটের মাধ্যমে মাইক্রোবাসটি থামানো হয়। মাইক্রো থেকে নেমে তাসলিমা খান আখি কোমরে হাত দিতে গেলে মহিলা কনষ্টেবল ডলি খাতুন ও সালেহা খাতুন তাকে জাপটে ধরেন। পরে তার কোমরের ডান পাশ থেকে একটি একে ৪৭ রাইফেল (এসএমজি) ও বাম পাশ থেকে একটি শর্টগান বের করা হয়। তার ০১৮১৬৫৯২৫৩৭ নাম্বারের মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়। গাড়ীতে থাকা রানীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে মোট ৬৫ রাউন্ড তাজা ও ১ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। রানীর যে মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়েছে তার নাম্বার ০১৯২৫৬৮৬৭৫৬। গাড়ীতে থাকা অপরজন আব্দুর রাজ্জাকের গেঞ্জির নীচ থেকে দুটি ম্যাকজিন পাওয়া যায়। তার কাছ থেকে একটি নকিয়া ও অপরটি সিটিসেলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। মামলায় উল্লেখ করা হয় আখি গত ৮/৯ বছর ধরে চরমপন্থি সংগঠন গণমুক্তিফৌজের হয়ে কাজ করছে। অন্য আসামীরা একই দলের হয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে তথ্য ও অস্ত্র আদান প্রদান করে থাকে। আরেকজন মহিলা চরমপন্থি গ্রেপ্তার : পুলিশ জানায়, বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর এলাকার একটি মোবাইল ফোনের দোকান থেকে বৈশাখী রহমান ওরফে চুমকি (২৪) নামের আরেক মহিলা চরমপন্থীকে আটক করা হয়েছে। চুমকি শহরের আড়–য়াপাড়া এলাকার আব্দুর রশীদের মেয়ে। কুষ্টিয়া সহকারী পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) আলমগীর হোসেন জানান, চুমকি দীর্ঘদিন ধরে চরমপন্থী দলের হযে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড ঘটিয়ে আসছে। সে চরমপন্থী সংগঠন গণমুক্তিফৌজের কিলিং মিশনের অন্যতম সদস্য। চরমপন্থী সংগঠনের হয়ে প্রতিপক্ষ গ্র“পের ক্যাডারদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের পর তাকে হত্যা করে আসছে। তিনমাস আগে ঘটে যাওয়া সবুজ হত্যাকান্ডসহ অপহরন, মোটর সাইকেল ছিনতাই ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সে। চুমকি পুলিশকে জানায়, কয়েক বছর আগে মানিকগঞ্জে মামুন নামে একজনকে বিয়ে করে সে। মামুন ষ্ট্রোক করে মারা যাওয়ার পর কুষ্টিয়ায় এসে আমলার সবুজ নামে আরেকজনকে বিয়ে করে। পুলিশ জানায়, গণমুক্তিফৌজ নামের চরমপন্থী সংগঠনের হয়ে সে সবুজকে প্রেমের ফাদে ফেলে। পরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মিরপুর উপজেলার আমলা বাজারে সবুজ নিহত হয়। এরপর সে নতুন শিকার হিসেবে বেছে নেয় শহরের চৌড়হাসের রিমন নামে এক যুবককে। বর্তমানে সে তার সঙ্গে শহরে বসবাস করছিলো বলে পুলিশ জানিয়েছে। এছাড়া সে ভেড়ামারা শহরে আনোয়ার নামের এক যুবককে অপহরণ করে তার মটর সাইকেল ছিনিয়ে নেয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।চরমপন্থি দলে ২৫ নারী সদস্য : সহকারী পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) আলমগীর হোসেন আরো জানান, কুষ্টিয়ায় সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান জোরালো করার পর চরমপন্থীরা অস্ত্রপাচার এবং অন্যান্য অপরাধ কর্মকান্ডের জন্য নারী সদস্যদের বেছে নেয়। গনমুক্তিফৌজ, জনযুদ্ধ ও গণবাহিনীসহ বিভিন্ন চরমপন্থী সংগঠনের সঙ্গে কুষ্টিয়ার অন্ততঃ ২৫ জন নারী সম্পৃক্ত রয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। তবে এ সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এরমধ্যে পুলিশের নিকট ১২ জনের তালিকা রয়েছে। যার মধ্যে ৫জন হলো নিহত চরমপন্থির স্ত্রী। এসকল নারীরা বিভিন্ন ব্যাক্তির ছত্রছায়ায় থেকে অপরাধমূলক বিভিন্ন কাজ করে আসছে। আওয়ামীলীগ নেত্রী আঁখি গ্রেফতার হওয়ার পরে নারী সদস্যদের গ্রেফতারে পুলিশ বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। তিনি বলেন, কৌশল পাল্টেও শেষ রক্ষা হবে না চরমপন্থী সংগঠনগুলোর। ক্রসফায়ার আর পুলিশের সাড়াশি অভিযানে কোনঠাসা হয়ে পড়া চরমপন্থী সংগঠন গণমুক্তিফৌজের নারী সদস্যদের দিয়ে নাশকতা সৃষ্টি করার যে মাষ্টার প্লান করেছিল তা শুরুতেই ভেঙে দিতে পেরেছে কুষ্টিয়া পুলিশ। সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়া চুমকি তার সহযোগি শহরের আমলাপাড়ার দুই বোন নাসরিন ও চম্পার নাম বলেছে। চুমকির দাবি এরা দুজনও গনমুক্তিফৌজের সদস্য। আখির যাত্রা শুরু যে ভাবে : আখির ভাই নিপু কুষ্টিয়া পলিটেকনিক কলেজে অধ্যয়নের সময় বর্তমান এক শীর্ষ চরমপন্থি নেতার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। সেই সময় থেকেই তার সাথে আখির পরিচয় হয়। পরে ওই কলেজ ছাত্র যখন শীর্ষ চরমপন্থি নেতাতে পরিণত হন তখন আখি তাদের হয়ে কাজ শুরু করেন। গতকাল আদালতে যখন আখিকে হাজির করা হয় তখন নিপুকে হন্তদন্ত হয়ে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। দিনে ব্যবসায়ী রাতে চরমপন্থি : এলুমিনিয়াম, মেলামাইন ও কাসা-পিতল সামগ্রীর দোকানী আব্দুর রাজ্জাক। কুষ্টিয়া শহরের রক্সিগলির আলিয়া মাদ্রাসা মার্কেটে আরফা ট্রেডার্স নামে তার এ দোকান। পাশেই ভাই রাজুর দোকান। নয় বছর মালেশিয়া থেকে এসে সে এ ব্যবসা শুরু করেছিল। এদের পূর্ব পূরুষেরা একই ব্যবসায় নিয়োজিত ছিল। সোমবার একে-৪৭সহ গ্রেপ্তার হওয়া আখির সহযোগি হিসেবে সেও গ্রেপ্তার হয়েছে। তার কোমর থেকেও দুটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, সে দিনে ব্যবসা করে লোক দেখানোর জন্য। আর রাতে চরমপন্থিদের হয়ে কাজ করে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রায় প্রায়ই রাজ্জাক দুই একদিনের জন্য দোকান বন্ধ করে কোথায় যেন হারিয়ে যেত। সদালাপী এই ব্যবসায়ীর আড়ালে যে চরমপন্থী লুকিয়ে ছিল তা ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা কখনই বুঝতে পারেনি। তবে মেয়ে মানুষের প্রতি তার আসক্তির কথা অনেকেই জানে। পুলিশ বলছে সম্প্রতি সে গণমুক্তিফৌজের সিরিয়াস কিলার হিসেবে নাম লিখিয়েছে। ব্যবসায়ী সাইনবোর্ড থাকার কারনে এতোদিন তা ধরা পড়েনি। তবে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ অনুসন্ধান করে এসব তথ্যই পেয়েছে। আখির বহিস্কার নিয়ে হাস্যরস : একে-৪৭ রাইফেল, শর্টগান এবং বিপুল পরিমান গুলি সহ গ্রেপ্তারের পর শহর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তাসলিমা খান আখিকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদিকা শাহানারা বেগম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাপারে বলা হযেছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও বেআইনী কর্মকান্ডের কারনে আখিকে শহর কমিটির সাধারন সম্পাদিকার পদ ও দলীয় সদস্যপদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের এক জরুরী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নিয়ম না মেনে মহিলা আওয়ামী লীগ দায়ভার এড়াতে তড়িঘড়ি করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারাই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, শহর কমিটির সাধারন সম্পাদককে জেলা কমিটি বহিস্কার করার এখতিয়ার রাখেনা। তাছাড়াও এ সভায় জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বেগম নুরজাহান মীনা সভাপতিত্ব করার কথা বলা হলেও তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন আমি ঢাকাই অবস্থান করছি। তিনি বলেন, কুষ্টিয়া ফিরে মিটিং এর মাধ্যমে তাকে বহিস্কার করার প্রস্তাব কেন্দ্রে পাঠানো হবে। ফেসে যাচ্ছেন দুই কমিশনার : আখি গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল। চরমপন্থি কানেকশনের দায়ে ফেসে যাচ্ছেন দুই পৌর কমিশনার। একজন সাবেক। তিনি আখির স্বামী ওমর হায়দার খান কোহিনুর। কোহিনুর ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপরজন বর্তমান কমিশনার। তিনিও আওয়ামী লীগের নেতা। চরমপন্থিদের হয়ে চাদাবাজি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। আখি ধরা পড়ার পর থেকে এদের দুজনকে শহরে দেখা যাচ্ছেনা।

বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০০৯

একে-৪৭ লেডি আওয়ামী লীগ নেত্রীর আখির গল্প

একটি একে ফোরটি সেভেন, একটি শর্টগান ও ৮২ রাউন্ড গুলি নিয়ে কুষ্টিয়া শহর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদিকা তাসলিমা খান আখিসহ মোট ৫জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার রাত পৌনে ১১টায় কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কের ত্রিমোহনী নামক স্থানে পুলিশ চেক পোষ্টে তাদের বহনকারি সাদা রঙের মাইক্রোবাস তল্লাশ করলে এ অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাওয়া যায়। সাদা রঙের ওই মাইক্রোবাসে করে তারা কুষ্টিয়া শহরের দিকে আসছিল। পুলিশ জানায়, অত্যাধুনিক এ অস্ত্র দুটি বোরখা পরিহিত তাসলিমা খান আখি (৪২)র কোমরে আটকানো ছিল। এ সময় ওই গাড়িতে থাকা আরো ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত অন্য তিনজন হলো পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং সি/২ এলাকার চরমপন্থী গুড় সোহেলের স্ত্রী রানী খাতুন (২২), কালিশংকরপুরের জামাল উদ্দিনের ছেলে রাজ্জাক (৩৫) ও মাইক্রোবাসের চালক ইবি থানার মহিষডাঙ্গা গ্রামের উমেদ আলীর ছেলে শাহীন (৩২)। এদের নিকট থেকে মোট ৬টি মোবাইল ফোনও জব্দ করে পুলিশ। পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাদের সাথে নিয়ে রাতেই অভিযান চালিয়ে দৌলতপুরের ডাংমড়কা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে এসব অস্ত্রের সরবরাহকারি আক্কাস আলী (৪৫)কে গ্রেফতার করেছে। আক্কাস আলী ওই গ্রামের আনসার আলীর ছেলে। পুলিশ বলেছে, গ্রেফতারকৃতরা চরমপন্থি সংগঠন গণমুক্তিফৌজের সদস্য। পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের নিয়ে আরো অস্ত্র উদ্ধারের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ ও অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
কে এই আখি
কুষ্টিয়া পৌরসভার সাবেক কমিশনার আওয়ামী লীগ নেতা ওমর হায়দার খান কোহিনুরের স্ত্রী এই আখি। কোহিনুর কুষ্টিয়ার ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। নাম আখি হলেও জš§গতভাবে তার একটি চোখ খারাপ। সে কারনে সে ছোটবেলা থেকেই কালো চশমা পরে থাকে। বেশ ফিটফাট পোশাক পড়ে সে চলাফেরা করে। কোহিনুরের সাথে বিয়ে হবার পরই সে আওয়ামী লীগের কর্মি হিসেবে কাজ শুরু করে। বিভিন্ন মিছিল মিটিংএ চশমা পরা আখির সরব উপস্থিতি দেখেছে শহরবাসী। ১৯৯৩ সালে কোহিনুর যখন পৌরসভার কমিশনার পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা শুরু করে তখন এই আখি একটু খোলামেলা পোশাক পড়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইতে নামে। সে সময়ই প্রথম আলোচনায় আসে কোহিনুর। তার পরিচিতিও ঘটে বেশ।
আখির রাজনৈতিক উত্থান
মিছিল মিটিংসহ দলীয় কার্যক্রমে সরব উপস্থিতির কারনে আওয়ামী লীগের ৮ নং ওয়ার্ডে ানচের অবস্তান শক্ত করে ফেলে আখি। সেসময় তার স্বামী কোহিনুর খান যুবলীগের নেতা হবার সুবাধে একটু বাড়তি সুবিধা হয় তার। নির্বাচনে স্বামী কমিশনার পদে জয়লাভ করলে আখির আরো বাড়তি সুবিধা হয়। জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বেগম নুরজাহান মীনা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার উদ্দেশ্যে ২০০৩ সালের দিকে কুষ্টিয়ার রাজনীতিতে ব্যারিষ্টার আমীর উল ইসলাম সক্রিয় হলে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক পৌর ষাবার চেয়ারম্যান আনোয়ার আলীর সাথে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়। এসময় র‌্যারিষ্টার আমীর নতুন করে আওয়ামী লীগকে চাঙ্গা করেন। তিনি বিভিন্ন কমিটি সক্রিয় করতে থাকেন। এরই অংশ হিসেবে ২০০৫ সালে মহিলা আওয়ামী লীগের শহর ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। মীনা বেগম বলেন, এসময়ও আমি আখিকে চিনতাম না। সে সময় সে ৮ নং ওয়ার্ড মহিলা আওযামী লীগের সদস্য ছিলো। এসময় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন রওশন আরা মজিদ ও সাধারন সম্পাদক ছিলেন পৌর কমিশনার সালমা রহমান যুথিকা। এই কমিটি ঠিকমতো সক্রিয় না থাকা ও আমাদের সহযোগিতা না করায় নাজমা খুররমকে আহবায়ক করে শহর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ২০০৫ সালে মাজামাঝি কুষ্টিয়া শিল্পকলায় শহর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বনিবনা না হওয়ায় আনোয়ার আলী গ্রপের নেত্রীরা উঠে চলে আসেন। তারা পাশে পৌরসভার বিজয় উল্লাস চত্বরে পাল্টা সমাবেশ করে। র‌্যারিষ্টার আমীরের পক্ষে সেলিনা হক আয়নাকে সভানেত্রী ও এই তাসলিমা খান আখি হন সাধারন সম্পাদক। পাল্টা কামটিতে সভানেত্রী হন আলম আরা জুই আর সাধারন সম্পাদক হন সালমা রহমান যুথিকা। এই দুটি কমিটিই অন্য কমিটিকে মানেন না। এদিকে এই কমিটিতে থেকে জাতীয় নির্বাচনের জন্য দল গোছানোর কাজ করার কারনে আখি র‌্যারিষ্টারের বেশ ঘনিষ্ট হযে যান। পরে ব্যারিষ্টার নির্বাচনে পরাজিত হন। এবং এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি কুস্টিয়ার রাজনীতি থেকে দুরে সরে যান। এসময় আখি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদ আজগর আলীর বিশ্বস্থ হয়ে ওঠেন। দলীয় সকল কর্মকান্ডে সবসময়ই তাকে সক্রিয় দেখা গেছে। আজগর আলীর গ্রুপে কাজ করার কারনে জেলা আওযামী লীগের বর্তমান সভাপতি সদর আসনের এমপি খন্দকার রশীদুজ্জামান দুদুর বেশ ঘনিষ্ট হয়ে পড়েন আখি। কুষ্টিয়ায় প্রচার রয়েছে এমপি দুদুর সাথে তার শ্যালিকা দুলাভাই সম্পর্ক। তবে গতকাল গ্রেফতারের পর সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি অস্বীকার করেন। তবে এমপি সাহেব কুষ্টিয়া আসলে আখি ও তার বরকে সবসময় কাছাকাছি থাকতে দেখা গেছে। এমপির সাথে ভাল সম্পর্কের কারনে সে দলে বেশ শক্ত অবস্থান সৃষ্টি করেছিল।
বহিস্কার হতে পারেন
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বেগম নুরজাহান মীনা বলেন, আখি যে কাজ করেছে। সে অস্ত্রসহ ধরা পড়েছে। দলের শৃঙ্খলা বহির্ভূত কাজের জন্য সে বহিস্কার হতে পারেন। আমার কাছে এরকম প্রস্তাব দিয়েছেন অনেকেই। শহর কমিটির সভানেত্রী সেলিনা হক আয়না জানান আমরা ইতোমধ্যেই আলোচনা করেছি। আখির বহিস্কারের বিষয়ে চুডান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে।
যুবলীগ নেতা জামু হত্যার সাথে জড়িত
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত আখি জেলা যুবলীগ নেতা জামিরুল ইসলাম জামু হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামী ছিলেন। গত ২০০৬ সালের ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যায় জামু আঁখির বাসায় বেড়াতে যায়। এ সময় জামুর কাছে মোবাইলে ফোন আসে। সে আখিঁর বাসার নিচে রাস্তায় নেমে,মোটর সাইকেলে ওঠার সাথে সাথে সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে হত্যা করে। দুইটি ঠিকাদারি কাজ নিয়ে সেসময় জামুর সাথে একটি চরমপন্থি দলের সদস্যদের বিরোধ চলছিল। এ হত্যার সাথে আঁখি জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ তখনই তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে জামূ হত্যা মামলার আসামী করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। দীর্ঘদিন হাজতবাস করার পর সে হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পায়। আখিকে ১ নং আসামী রেখে ওই মামলার চার্জশীট হয়ে গেছে।
অবৈধ সম্পর্ক
আখির অসংলগ্ন চলাফেরা ও অবৈধ সম্পর্কের কথা মানুষের মুখে মুখে। কুষ্টিয়ার সবাই জানে জামুর সাথে আখির খুব ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। আখির বাসায় জামুর যাতায়াত ছিল। এছাড়াও একটি রেডিওর দোকানকে কেন্দ্র করে আখির সাথে ব্যবাসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘনিষ্টতার খবরও কুষ্টিয়াবাসীর মুখে মুখে।
পুলিশ সুপারের বক্তব্যকুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন, অস্ত্রবাহী একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাসযোগে দৌলতপুর থেকে কুষ্টিয়া শহর অভিমুখে আসছিল। এএসপি হেডকোয়ার্টার আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ টিম আগে থেকেই বারখাদা ত্রিমোহনীতে চেক পোষ্ট বসিয়ে ছিল। গত আড়াই মাস কুষ্টিয়া পুলিশে বিশেষ অভিযান শুরুর পর এরকম চেকপোষ্ট প্রায়ই বসানো হয়। রাত ১১টার দিকে ত্রিমোহনীতে পৌছামাত্র মাইক্রোটিকে চ্যালেঞ্জ করে ডিবি’র ওই টিম। এ সময় গাড়ীর আরোহীদের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে তাদের দেহে তল¬াশী চালানো হয়। এসময় আখির কোমরে গুজে রাখা একটি একে-৪৭ রাইফেল ও একটি শর্টগান উদ্ধার করা হয়। কাপড় দিয়ে অতি সুরক্ষিতভাবে আগ্নেয়াস্ত্র দুটি মুড়িয়ে রাখা হয়েছিল। এরপর অস্ত্রবহনকারীদের ঘটনাস্থলেই ব্যাপক জিজ্ঞসাবাদ করে পুলিশ। আঁখির দেয়া গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তাৎক্ষনিকভাবে অভিযানে বের হয়। এএসপি হেডকোয়ার্টার আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, কুষ্টিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে মহিলারা চরমপন্থি ক্যাডার হিসেবে কাজ করছে। মহিলা ক্যাডারদের একটি তালিকাও করেছি আমরা। গ্রেফতারকৃতরা চরমপন্থি সংগঠন গনমুক্তিফৌজের ক্যাডার। তারা শহরে বড় কোন অপরাধ ঘটানোর জন্য এইসব আধুনিক অস্ত্র নিয়ে আসছিল।
অস্ত্র দুটি যেখানে ছিল
পুলিশের বিশেষ দলটি গ্রেফতারকৃতদের সাথে নিয়ে জেলার দৌলতপুর উপজেলার ডাংমড়কা গ্রামে অভিযানে যায়, যেখান থেকে অস্ত্রগুলো আনা হয়েছিল। গভীর রাতে পুলিশ ডাংমড়কা গ্রামের আক্কাস আলী মোল্ল¬ার বাড়ীতে সাঁড়াশি অভিযান চালায়। পুলিশ চারিদিক থেকে বাড়ী ঘিরে ফেলে। এ সময় আক্কাস আলী মোল্ল¬া বাড়ীতেই অবস্থান করছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে শেষ রক্ষা হয়নি তার, গ্রেফতার হয় পুলিশের হাতে। সেখান থেকে তাকে কুষ্টিয়ায় আনা হয়। আক্কাস আলী জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে কুষ্টিয়া শহরের এক দূর্ধর্ষ কিলার পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হবার আগে এ অস্ত্র তার কাছে রেখে যায়। আক্কাস সেগুলো তার বাড়ীর পাশে একটি বাগানের মধ্যে মাটি নিচে পুতে রেখেছিল। সে আরো জানায়, গণমুক্তিফৌজের ওই কিলার নিহত হওয়ার আগে অস্ত্র গোলাবারুদগুলো আঁখিকে দিতে বলে যায়।
অস্ত্রের ব্যাপারে আখি যা বলেন
আখি বলেন ভিন্ন কথা। তার বক্তব্য আক্কাস তাকে ফোন করে দৌলতপুর নিয়ে যায়। এজন্য সে আখির ছেলেকে অপহরনের হুমকি দেয়। সেখানে গেলে তাকে ভয় দেখিয়ে অস্ত্রগুরো শহরে নিয়ে যেতে বলে। বলে আপনি নিয়ে গেলে কেউ চেক করবে না। কুষ্টিয়া নিয়ে গেলেই আপনাকে ফোন করে আমার লোক অস্ত্র ও গুলি নিয়ে নেবে।
আখির চরমপন্থি কানেকশন
যুবলীগ নেতা জামু হত্যাকান্ডের পরই আখির চরমপন্থি কানেকশনের বিষয়টি চাউর হয়ে যায়। সে চরমপন্থি নেতাদের সাথে সম্পর্ক রেখে ঠিকাদারী কাজ ভাগ করে দিত বলেও অভিযোগ রয়েছে। একারনে চরমপন্থি কানেক্টেড ঠিকাদারদের তার বাসায় যাতায়াত ছিল। পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন খান গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, সে অন্য কারো জন্য অস্ত্র বহন করছিলো এমন ভাবা ঠিক হবে না। সে নিজে চরমপন্থি দলের সদস্য। নিজেও এটা কোন নাশকতামূলক কাজে ব্যবহার করতে পারতো। গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেয়া এক মহিলা পুলিশ সদস্য জানান, যে ভাবে তার কোমরে দুটি ভারি আগ্নেয়াস্ত্র রাখা ছিল এবং তা নিয়ে যে যেভাবে গাড়ী থেকে নেমেছে তাতে মনে হয়েছে সে এসবের ব্যবহার জানে। এছাড়া তার সাথে গ্রেফতার হওয়া চরমপন্থি গুড় সোহেলের স্ত্রী রানীও এ ব্যাপারে বেশ পারদর্শী বলে মনে হয়েছে। গুড় সোহেল পুলিশের সাথে এনকাউন্টারে নিহত হয়েছিল।
আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য
জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম বলেন, এ খবরে আমার বিষ্মিত হয়েছি। তার মধ্যে যে এতোবড় অপরাধ মানুষ লুকিয়ে ছিল তা আমরা কখনই টের পাইনি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাসী হলে আমার দলের লোককে আগে গ্রেফতার করবেন। বর্তমান সরকার যে প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দিচ্ছে এটা তার প্রমান। তিনি বলেন, আখির এ অবৈধ কারবারের সাথে আওয়ামী লীগের কোন সম্পর্ক নেই। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলী বলেন, আমাদের সাথে আখি রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিল। রাজনীতির মাঠের বাইরে সে কি করেছে তা আমাদের জানা থাকার কথা নয়।

সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০০৯

খোকসায় এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় একজন আটক

কুষ্টিয়ায় কলেজ ছাত্রী শিলার উপর এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় একজনকে সন্দেহমূলক আটক করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার বিকেলে তাকে খোকসার কামালপুর গ্রামের মাঠ থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। আটককৃত ব্যাক্তির নাম আব্দুল মজিদ(৪২)। সে কামালপুর গ্রামের আফাজের ছেলে। খবর কুষ্টিয়া নিউজের।গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে ওই গ্রামের ইদ্রিস আলীর কলেজ পড়–য়া মেয়ে নিলুফার ইয়াসমীন শিলাকে ঘুমন্ত অবস্থায় ঘরের জানালা দিয়ে এসিড ছুড়ে মারে দুবৃত্তরা। এসিডে শিলা ও তার বড় বোন শিমুলীর মুখ গলা ও দেহ ঝলসে যায়। এ ঘটনায় ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে ওইদিনই থানায় একটি অভিযোগ দেয়। সেই অভিযোগে চারজনের সন্দেহজনক চারজনের নাম উল্লেখ থাকলেও সেখানে আটক মজিদের নাম নেই। ওই মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই আকরাম কুষ্টিয়া নিউজকে জানান, সন্দেহমূলকভাবে আব্দুল মজিদকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।