শনিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০০৯

বিয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে এসিড দগ্ধ শিলার

কুষ্টিয়া নিউজ : এসিড দগ্ধ শিলার বিয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে। বরপক্ষ দফায় দফায় আলোচনা করেও বিয়ের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারেনি। সৌদি প্রবাসী বর শিমুল তার পরিবারের সদস্যদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এ ব্যাপারে আপাতত আর কোন আলোচনা নয়। এ বিয়ের ব্যাপারে কোন কথা শুনতেও রাজি হচ্ছেন না তিনি। গতকাল শুক্রবার তাদের বিয়ে হবার কথা ছিল। গায়ে হলুদের দিন বৃহস্পতিবার ভোররাতে জানালা দিয়ে ঘুমন্ত শিলার উপর এসিড ছুড়ে মারে একদল দুর্বৃত্ত।বর্তমানে সে ঢাকার বনানীতে ব্র্যাকের এসিড সারভাইভরস ফাউন্ডেশন এ চিকিৎসাধীন। শিলার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তাদের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে বেশ ভাল। তবে শিলা সে একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। চঞ্চল প্রকৃতির শিলা এখন একেবারে নিথর হয়ে পড়ে আছে। মুখে এসিড দগ্ধের যন্ত্রনার চেয়েও সে বেশি মানসিক যন্ত্রনায় আছে।

ঘটনাটি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার কমলাপুর গ্রামের। গ্রামের সরকারি চাকরিজীবি ইদ্রিস আলী খাঁ বড় মেয়ে নিলুফার ইয়াসমীন শিমুলী, তার শিশুকন্যা জ্যোতি, মেজ মেয়ে পাংশা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী শিরীন আক্তার শিলা ও তাদের খালাত বোন রোখসানা আক্তার একই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিল। বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বাইরে থেকে কৌশলে ধাক্কা দিয়ে জানালা খুলে বাঁশের কঞ্চির মাথায় বাধা বোতলে করে দুই বোন শিলার (২০) মুখের উপর এসিড ঢেলে দেয় পাষন্ডরা। যার কিছুটা পড়ে বড় বোন শিমুলী(২২) গলায়ও। এসিডে দুই বোনের মুখ ও গলা ঝলসে যায়। এ ব্যাপারে শিলার বাবা ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার খোকসা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং ৯। এতে প্রতিবেশি মৃত বানাত আলীর ছেলে মিরাজ হোসেন(২৫), আইয়ুব আলী(২৫), ছের আলীর ছেলে মনোয়ার হোসেন (১৮) ও আমজাদ হোসেনের ছেলে রেজাউল (১৮) কে ঘটনার সাথে সন্দিগ্ধ বলে বাদী উল্লেখ করেছেন। তবে গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আসামীদের কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে থানা সুত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বেলাল হোসেন কুষ্টিয়া নিউজকে জানান, এডিস নিপেক্ষের ঘটনায় ৪ জনকে সন্দিগ্ধ আসামী করে একটি মামলা হয়েছে। আসলেই তারা জড়িত কি না তদন্ত না করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, বাদীর দাবি পূর্ব শত্রুতার কারনে এরা এসিড ছুড়ে মারতে পারে। তবে সিরিয়াসলি তদন্ত না করে এ ব্যাপারে কোন ডিসিশন নেয়া যাবে না। তাই কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।শিলা ও তার বোন শিমুলের উপর এসিড নিনেক্ষের ঘটনা নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। প্রেমের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে বলে অনেকে দাবি করেছে। এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শিলাকে একই গ্রামের বিদ্যুত নামের একটি ছেলে পছন্দ করত। কলেজে আসা যাওয়ার পথে বিভিন্ন সময় শিলাকে সে নানা ভাবে উতক্ত করত। তবে এ কথা শিলার বাড়ির লোকজন জানত না। বিয়ে পাকাপাকি হওয়ার পর বিদ্যুত তার বন্ধুদের সাথে নিয়ে এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে এলাকার অনেকেই মনে করেন। ঘটনার পর থেকে বিদ্যুতকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। এতে সবার সন্দেহ আরো ঘনীভুত হচ্ছে।ওদিকে মামলার সন্দিগ্ধ আসামী আইয়ুব আলী কুষ্টিয়া নিউজকে জানান, ঘটনার দিন আমি বাড়িতে ছিলাম না তার পরও আমাকে আসামী করা হয়েছে। তিনি জানান ইদ্রিস আলীর সাথে জমি নিয়ে আমাদের বিরোধ চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। মেয়ের উপর কারা এসিড মেরেছে এই সুযোগে সে আমাদের ফাসানোর চেষ্টা করছে।শিলার বিয়ে ঠিক হয়েছিল রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের পরাণপুর গ্রামের শিমুলের সাথে। শিমুল সৌদি আরবে থাকেন। বিয়ের উদ্দ্যেশ্যে তিন মাসের ছুটি নিয়ে দেশে এসেছেন। শিমুলের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে মোবাইলে কথা হয়। কলিমহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্কাস আলী কুষ্টিয়া নিউজকে জানান, শিমুলের বিয়েতে আমারও বর যাত্রী যাওয়ার কথা। গতকাল দুপুরে তিনি বলেন, আমি ওই বাড়ির দিকেই যাচ্ছি। এসিড নিক্ষেপের পর বিয়ে হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন এ ঘটনার কথা আমিতো জানিই না। ওই বাড়িতে গিয়ে বলতে পারব। পরে চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোনে কথা হয় শিমুলের ছোট চাচা আইয়ুব মোল্লার সাথে। তিনি বলেন, খোদার লিখন না থাকলে বিয়ে কেন কোন কিছুই হয়না। হয়তো এখানে শিমুলের বিয়ে লেখা ছিল না। তিনি বলেন, আত্মীয় স্বজনে বাড়ি ভরে গেছে। সব কেনা কাটা শেষ। মাইক্রোবাসও ঠিক করা ছিল। তারাও এসে গেছে বাড়ির উপর। মেয়ে সুস্থ্য হলে আবার বিয়ে হবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা পারিবারিকভাবে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেইনি। আলোচনা চলছে। তবে ছেলে এ ব্যাপারে আলোচনা করতে রাজি হচ্ছেন না। তার মত ছাড়া তো কিছুই সম্ভব না। চেয়ারম্যান আক্কাসসহ অনেক দাওয়াতী বরের বাড়ি এসে খবর শুনে ফিরে গেছে। চেয়ারম্যান বলেন, এ বিয়ে ফের হবার সম্ভাবনা খুবই কম।

বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০০৯

খোকসায় বিয়ের একদিন আগে দুর্বৃত্তদের ছোড়া এসিডে ঝলসে গেলো শিলার মুখ, সাথে বড় বোনও

হাসান জাহিদ, কুষ্টিয়া নিউজ : কলেজ ছাত্রী শিলার বিয়ে শুক্রবার। গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল গায়ে হলুদ। কিন্তু বিধি বাম। সূর্য্য উঠার আগেই ভেঙে গেলো তার সব স্বপ্ন। ভোর রাতেই একদল পাষন্ড জানালা দিয়ে এসিড ছোড়ে ঘুমন্ত শিলার মুখে। পুডে যায় তার মুখ, সাথে রঙিন স্বপ্নও। বাদ যায়নি একই বিছানায় শুয়ে থাকা বড় বোন শিমুলীও। তার গলাও পুড়ে গেছে ওই এসিডে। তবে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে শিমুলীর দু’বছর বয়সী শিশু কন্যা জ্যোতি ও খালাত বোন রোখসানা। এরাও একই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিল। বিয়ের বাড়ি তাই বাড়ি ভর্তি ছিল আত্মীয় স্বজনে। একারনেই এক বিছানায় গাদাগাদি। গভীর রাত পর্যন্ত আনন্দ করেছিল সবাই। কিন্ত কে জানতো সকালেই তাদের বাড়িতে নেমে আসবে বিষাদের ছায়া। এ ঘটনা কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার কামালপুর গ্রামের। গ্রামের সরকারি চাকরিজীবি ইদ্রিস আলী খাঁ বড় মেয়ে নিলুফার ইয়াসমীন শিমুলী, তার শিশুকন্যা জ্যোতি, মেজ মেয়ে শিরীন আক্তার শিলা ও তাদের খালাত বোন রোখসানা আক্তার একই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিল। বাড়ির দেয়াল পাকা হলেও জানালা ছিল অরক্ষিত। বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বাইরে থেকে কৌশলে ধাক্কা দিয়ে জানালা খুলে বাঁশের কঞ্চির মাথায় বাধা বোতলে করে দুই বোন শিলার (২০) মুখের উপর এসিড ঢেলে দেয় পাষন্ডরা। যার কিছুটা পড়ে বড় বোন শিমুলী(২২) গলায়ও। এসিডে দুই বোনের মুখ ও গলা ঝলসে যায়। বিছানার চাদর, বালিশ ও তোষকও পুড়ে গেছে। যন্ত্রনায় চিৎকার করে উঠলে পরিবারের লোকজন তাদেরকে মুমুর্ষ অবস্থায় খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জানা গেছে, এসিড সন্ত্রাসের শিকার শিলা পাংশা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বাংলা অনার্সে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের ধারণা প্রেমঘটিত কোন কারনে এ ঘটনা ঘটেছে। এসিড আক্রান্ত শিমুলী ও শিলার বাবা মেহেরপুর জেলা পরিষদের কর্মচারী ইদ্রিস আলী কুষ্টিয়া নিউজকে জানান, ঘরের জানালাটি ভেতর থেকে শিকল লাগানো থাকলেও বাইরে থেকে ধাক্কা দিলে খুলে যায়। বাড়িতে বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। মেয়েরা অনেক রাত জেগে তারপর ঘুমাতে যায়। তারা গভীর ঘুমে ছিল। বাইরে থেকে ধাক্কা দিয়ে জানালা খুলে হাত দিয়ে মশারী উচু করে লাঠির মাথায় বাধা বোতলের ভেতর থাকা এসিড ঢেলে দেয় দুই মেয়ের মুখে। শিমুলী ও শিলার সাথে ওই বিছানাই শুয়ে থাকা তাদের খালাত বোন রোখসানা কুষ্টিয়া নিউজকে জানান, ঘুমিয়ে ছিলাম কিছুই টের পাইনি। শিমুলী আপা চিৎকার করে উঠে দেখি তার ও শিলা আপার মুখ পুড়ে গেছে। শিলার বৃহস্পতিবার গায়ে হলুদ ছিল। পাংশার পরানপুর গ্রামের শিমুল নামের এক ছেলের সাথে কাল শুক্রবার তার বিয়ে হবার কথা ছিল তিনি জানান, ঘটনার রাতে আপার মোবাইলে অচেনা নাম্বার থেকে একটি মেসেজ আসে। ইংরেজী অক্ষরে বাংলা করে সেখানে লেখা ছিল যে আগুনে আমি পুড়ছি সে আগুনে তোমাকেও পুড়তে হবে। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশ ওই মোবাইল ফোন সিজ করেছে। সকালে কুষ্টিয়ার সহকারি পুলিশ সুপার সি এ হালিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি কুষ্টিয়া নিউজকে বলেন, বিষয়টি সিরিয়াসভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে আমরা অপরাধীদের সনাক্ত করতে পারবো বলে আশাবাদী। শিলাকে কেউ বিয়ে করতে চেয়ে না পেয়ে গায়ে হলুদের আগের রাতেই এ ঘটনা ঘটায়।

বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০০৯

ন্যায্যমূল্য না পেয়ে আখ ছেড়ে তামাক চাষে উৎসাহী হচ্ছে কৃষক, এবার চিনি কিনতে হবে ১০০ টাকা কেজি


হাসান জাহিদ, কুষ্টিয়া নিউজ : এবার আখ চাষে এমন ধ্বস নেমেছে যে কুষ্টিয়ায় জগতি সুগার মিলের আখ মাড়াই নিয়েই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর নভেম্বরে আখ মাড়ায় শুরু হলেও চলতি মৌসুমের জন্য এবার এখন পর্যন্ত কোন প্রস্তুতি নেই কর্তৃপক্ষের। ন্যায্যমূল্য না পাওয়াসহ নানা জটিলতার কৃষকরা এবার আখ চাসে নিরুৎসাহিত হন। অথচ চিনির জন্য ক’দিন আগে অস্থির হয়ে পড়েছিল সরকার। মনে হচ্ছিল চিনির কারনেই সরকার পড়ে যাবে। যে চিনি এতো প্রয়োজনীয়, এতো স্পর্শকাতর সেই চিনি উৎপাদনের কাচামাল আখ চাষীদের প্রতি কোনরূপ খেয়াল নেই সরকারের। আখ বিক্রি করতে গেলে তারা বরং হয়রানীর শিকার হন। অতি প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য চাষের জন্য যাদের পুরস্কার পাবার কথা, যাদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আসার কথা তারা বরং লোকসানের মুখে পড়ছে। এ কারণে আগামী দিনে চিনির সংকট আরো ঘনীভুত হবে। এতে লাভবান হবে পার্শ্ববতি দেশ ভারত। তাদের চিনি বেশি দামে কিনে খেতে হবে আমাদের। আগামীতে ১০০ টাকা কেজি চিনি কিনতে হবে এমন আশংকাও দেখা দিচ্ছে। তাহলে সরকারের নীতি নির্ধারক পর্যায়ে বসে কর্থা ব্যাক্তিরা কি করেন? কাদের স্বার্থ হাসিল করেন? এ ক্ষেত্রে কৃষকদের যা করার তাই করছে। তাদের তো আর রাজার হালত নেই যে লোকসান দিয়েই আখ চাষ করবে। হয়রানী মেনে নেবে। তারা চলে যাচ্ছেন তামাক চাষে। গত ৩ বছরের মধ্যে এবারই সর্বনিম্ন ৪০ হাজার মেঃটন আখ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কুষ্টিয়া চিনিকিল কর্তৃপক্ষ। তবে এ পরিমান আখও শেষ পর্যন্ত পাওয়া যাবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার উপর চাষীরা এবার একেবারেই বেকে বসেছেন। মিলগেটে প্রতিমণ আখ ১০০টাকা করা না হলে চাষীরা কোন আখ সরবরাহ করবে না বলে তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে। গতবছর এর মূল্য ছিল ৬৬ টাকা। এ অবস্থায় চলতি মৌসুমে আখ মাড়াই কবে নাগাদ বা আদৌ শুরু হবে কিনা তা সঠিক করে বলতে পারছে না কেউই। আখ চাষী ও মিল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছরে কুষ্টিয়া চিনিকল জোনে সবচেয়ে কম আখ চাষ হয়েছে। যা গত ৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, গত ২০০৭ সালে চিনিকল জোনে আখ উৎপাদন হয় ১ লাখ ৬০ হাজার মেঃটন। ২০০৮ মাড়াই মৌসুমে তা অর্ধেকে নেমে এসে উৎপাদন হয় ৭৯ হাজার মেঃটন। চলতি ২০০৯-১০ মৌসুমে উৎপাদনের হার একেবারে তলানিতে এসে দাড়িয়েছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ৪০ হাজার মেঃটন। তবে এ পরিমান আখও এবার চাষ হয়নি বলে চিনিকল কতৃপক্ষ মনে করছেন। কুষ্টিয়া চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম আরশেদ হোসেন জানান, আগে যেসব জমিতে আখ চাষ হতো সে সব জমিতে এখন তামাক চাষ হচ্ছে। তামাকের দাম আখের চাইতে বেশি। তাই দিন দিন আখ চাষীরা তামাক চাষের দিকে ঝুকছে। নতুন করে আর কোন আখ চাষী যাতে তামাক চাষের দিকে ঝুকে না পড়ে যে জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এরমধ্যে আখের দাম বাড়ানোর চিন্তাভাবনা চলছে। এছাড়া চাষীদের অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও বাড়ানো হবে। কুষ্টিয়া পোড়াদহ এলাকার আখ চাষী হাবিবুর জানান, যে ভাবে আখ চাষ কমছে তাতে করে মিল বাঁচানো মুশকিল হয়ে পড়বে। এখন কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়া হলে সবারই ক্ষতি হয়ে যাবে। ত্ইা আখের দাম বাড়াতে হবে। চিনিকল কর্তৃপক্ষ ৪০ হাজার মেঃটন আখ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও বাস্তবে চাষ হয়েছে এর চাইতে অনেক কম। মাঠে যে পরিমান আখ আছে তাতে করে ২৫ হাজার মেঃটনের বেশি হবে না। এর মধ্যে আবার অনেকেই ক্রাসিং মেশিনে আখ মাড়াই করেন। চাষীরা চলতি মৌসুম থেকেই আখের দাম বাড়নোর দাবি তুলেছেন। মিলগেটে প্রতিমণ ১০০ টাকা করা না হলে যে আখ রয়েছে তাও মিলে দেয়া হবে না বলে কয়েকজন চাষী জানান। বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষী ফেডারশনের সাধারন সম্পাদক আক্কাস আলী জানান, কুষ্টিয়া জোনে আখ চাষে বিপর্যয় নেমে এসেছে। প্রতিবছর উৎপাদনে ধ্বস নামছে। অথচ সরকার চিনিকল রক্ষায় তেমন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। আখের দাম বাড়ানো না হলে আগামী বছর উৎপাদন আরও কমে যাবে। আর উৎপাদম কমে গেলেও মিলের চাকাও বন্ধ হয়ে যাবে। সেই সাথে বন্ধ হয়ে যাবে অনেকের রুটি রুজি। তামাকই এ এলাকার আবাদী জমি গুলো গ্রাস করে নিচ্ছে। তাই তামাক চাষ বন্ধ হওয়া দরকার।

কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এর সাধারন সভা অনুষ্ঠিত






কুষ্টিয়া, ২৮ অক্টোবর ২০০৯
দেশসেরা কেবল প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান বিআরবি কেবল এর চেয়ারম্যান শিল্পপতি মজিবর রহমান বলেছেন দেশ সংকটে পড়লে ব্যবসায়ীদের উচিত সরকারকে সহযোগিতা করা। আবার ব্যবসায়ীদের সুবিধা অসুবিধাও সরকারের দেখা উচিত। আজ বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়ার ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বৃহৎ সংগঠন দি কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্টি এর বার্ষিক সাধারন সভায় তিনি এসব কথা বলেন। কুষ্টিয়া চেম্বার ভবনে অনুষ্ঠিত এ সভায় চেম্বারের সদস্য জেলার সর্বস্তরের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। চেম্বার সভাপতি আশরাফ উদ্দিন নজুর সভাপতিত্বে এ সভায় প্রবীণ সাংবাদিক ওয়ালিউল বারী চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। শিল্প বিকাশের স্বার্থে কুষ্টিয়া অঞ্চলে অবিলম্বে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের দাবি ওঠে এ সভায়।

রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০০৯

চোর পেটানো সওয়াবের কাজ

পুলিশ যখন পারছে না চোরের সাথে। পুলিশ ধরছেও না চোরদের। তখন জনগনের কি করার ছিল। পিটিয়ে দু-একটা চোর না মারতে পারলে শান্তি আসবে কি করে। তাছাড়া চোর পেটানো অনেক সওয়াবের কাজ। এ কথাগুলো বললেন একজন ইমাম। পুলিশের দিকে তাকিয়ে না থেকে এবার কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে এক চোরকে পিটিয়ে হত্যা করেছে গ্রামবাসী। রোববার সকালে উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের শিয়ালা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই গ্রামের হেতু নামের এক ব্যক্তির দোকানের চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার মধ্যরাতে গাংনী উপজেলার মহম্মদপুর গ্রামের নবীর উদ্দিনের পুত্র জুয়েলকে গনপিটুনী শুরু করে এলাকাবাসী। গতকাল রোববার সকালে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।এদিকে রোববার সকালে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের আব্দুর রাজ্জাক মিলানায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে দৌলতপুর উপজেলার হাকিমপুর গ্রামের ভূক্তভোগি মোঃ রসুলে পন্থী লিখিত বক্তব্যে বলেন, দৌলতপুর থানার ওসি হাসান হাফিজুর রহমানের সাথে চোর সিন্ডিকেটের রয়েছে সখ্যতা। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নির্দেশ প্রদান করার পরেও তিনি আসামী গ্রেফতার করেননি। রসুলে পন্থী লিখিত বক্তব্যে বলেন, এপর্যন্ত তার বাড়িতে ছয়বার চুরি গেছে। এছর ১৭ সেপ্টেম্বর তার বাড়ি থেকে দুইটি গরু চুরি হয়ে যায়। যার মূল্য দেড় লাখ টাকা। এ বিষয়ে দৌলতপুর থানায় মামলা করা হয়। যার নং- ৩৭৭/০৯। থানা মামলা গ্রহন করলেও আসামীদের গ্রেফতারে গরিমসি শুরু করে। বাদীর সহযোগিতায় আসামীদের মধ্যে ৩ জন গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু বাকী আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেফতার করেনি থানার ওসি হাসান হাফিজুর রহমান। গ্রেফতারকৃত তিনজন আসামী জামিনে বের হয়ে এসে অন্য আসামীদের সঙ্গে নিয়ে তাকে হত্যার হুমকি প্রদান করছে বলে তিনি লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছেন। রসুলপন্থী এব্যাপারে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কাছে ২০ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দেন। গত ২১ অক্টোবর কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার ২৫/৩৬ নম্বর স্বারকে ওসিকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও এসপির নির্দেশের পরও ওসি অদৃশ্য কারণে চুপচাপ রয়েছেন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করার জন্য তিনি উল্টো রসুলপন্থির ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে শায়েস্তা করার হুমকি দিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। অভিযোগ সম্পর্কে কথা বলার জন্য ওসি হাসান হাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রসূলেপন্থীর অভিযোগ সঠিক নয়। বরং তাদের বাড়িতে চুরি বিষয়ে আমরা অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখেছি।

মর্মান্তিক !

দেড় বছরের শিশুকন্যা স্নিগ্ধা কিছুই বুঝতে পারছে না। চারিদিকে অবাক চোখে তাকাচ্ছে। মায়ের কান্না দেখে সেও মাঝেমধ্যে কান্নাকাটি করছে। সে বুঝতে পারছে না তার বাবা আর ফিরে আসবে না। আর আদর করতে পারবে না। সকালেও ওয়াসিম মেয়েকে আদর করে শ্বশুড়বাড়ি চৌড়হাস থেকে এসেছে। ব্যবসায়ীক কাজ সেরে দুপুরেই আবার ফিরে যাবার কথা ছিল। স্ত্রী সন্তানের সাথেই তার দুপুরের খাওয়ার কথাও ছিল। খাওয়াতো দুরের কথা আর কোনদিন তাদের সাথে দেখাও হবেনা তার। মোটর সাইকেল যোগে ব্যবসায়ীক তাগাদায় যাবার সময় আজ দুপুর ২টার দিকে আলফার মোড়ে উল্টো দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় ওয়াসিম রাস্তায় পড়ে যায়। এরপর ঘাতক ট্রাকটি তার শরীর ছিন্নভিন্ন করে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। মজমপুরে পুলিশ ওই ট্রাকটিকে আটক করেছে। খবর কুষ্টিয়া নিউজের।নিহত ওয়াসিম (২৮) শহরতলীর যুগিয়া কদমতলার মৃত মোশাররফ হোসেন মুশার ছেলে। সে প্লাস্টিক ব্যবসায়ী। তার স্ত্রী সুমি অন্তসত্তা হওয়ায় ১৫-১৬দিন আগে বাপের বাড়ি চৌড়হাসে যায়। তাদের দেড় বছর বয়সী একটি মেয়েও আছে। মেয়ে আর স্ত্রী চৌড়হাসে থাকায় ওয়াসিমও বেশিরভাগ সময় সেখানেই থাকতো। গত রাতেও সে ওই বাড়িতে ছিল। সকালে ব্যবসায়ীক কাজে মোটর সাইকেল নিয়ে বের হয়। দুপুরেই ঘটে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।

শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০০৯

ইবি ছাত্রলীগের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যক্ষ সাহজাহান আলী সাজুকে সংবর্ধনা প্রদান

কুষ্টিয়া, ২৪ অক্টোবর ২০০৯
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের উদ্যোগে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাষ্টের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ সাহজাহান আলী সাজুকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। আজ সকালে ইবি ক্যাম্পাসের টিএসসিসিতে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে ছাত্র সমাজ। এ লক্ষে আরো আন্তরিকতার সাথে কাজ করার জন্য তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি আহবান জানান। জমকালো এ সংবর্ধনার জবাবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাহজাহান আলী সাজু বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ইতিহাস অনেক সংগ্রামের। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আধুনিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি ছাত্র-শিক্ষক সকলের প্রতি আহবান জানান। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি শাহনুর আলম কেরামতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেস অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য্য প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন।

শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০০৯

৩১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বিআরবি কেবলস-এ উতসব মুখর পরিবেশ

কুষ্টিয়া ২৩ অক্টোবর ২০০৯

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দেশসেরা কেবল প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান বিআরবি কেবল ইন্ডাষ্টি্রঁজ লিমিটেডের ৩১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কারখানা চত্বরে উতসব মুখর পরিবেশে চলছে নানা অনুষ্ঠান মালা। কুষ্টিয়ার বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত বিআরবির কারখানা প্রাঙ্গনে আজ শুক্রবার সকালে এ উপলক্ষে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। সকালে জাতীয় ও প্রতিষ্ঠানের পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিআরবির চেয়ারম্যান মজিবর রহমানকে দেয়া হয় বর্ণাঢ্য গার্ড অব অনার। বিশালাকৃতির কেক কেট অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিআরবি গ্রুপের চেয়ারম্যান মোঃ মজিবর রহমান। প্রতিষ্ঠানের উত্তরোত্তর উন্নতি কামনা করে মিলাদ মাহফিল শেষে মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করা হয়। এরপর পর শুরু হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, বিআরবি কেবলসের চেয়ারম্যান মোঃ মজিবর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক পারভেজ রহমান, এমআরএস ইন্ডাষ্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামসুর রহমান, কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, ইসলামী ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাইজুল করিম ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। বক্তারা বিআরবিকে আরো সামৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নেবার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আকর্ষনীয় তোরণ ও বর্ণিল পতাকা টানিয়ে বিসিক শিল্প নগরীকে মোহনীয় সাজে সাজানো হয়। দুপুরে বিনোদন অনুষ্ঠানে যেমন খুশি সাজো সবার দৃষ্টি কাড়ে।

শংকরদিয়া : যে গ্রামের অর্ধেকই ঘরজামাই

সাজ্জাদ রানা, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, দৈনিক সমকাল ::
প্রথমদিকে ঘরজামাইরা নানা ভাবে অপদস্ত অপমানিত হলেও এখন আর সেদিন নেই। এখন ঘরজামাইদের উপর চোখ রাঙ্গিয়ে কথা বলার কোন সুযোগ নেই। আগের চেয়ে ঘরজামাইরা অনেক বেশি সু-সংগঠিত। সামনে ইউপি নির্বাচনে ঘরজামাইদের পক্ষ থেকে একজন মেম্বার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এ জন্য ঘরজামাই ফোরাম নামে একটি কমিটি গঠন করা হবে। সব খরচও ফোরাম বহন করবে। তবে এখনও ঘরজামাইদের নানা সমস্যা মোকাবেলা করে বসবাস করতে হচ্ছে। এভাবেই ঘরজামাইদের নানা সমস্যা ও পরিকল্পনার কথা বলছিলেন আরেক ঘরজামাই বসির উদ্দিন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার গোস্বামী দূর্গাপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম শংকরদিয়া। কাগজে কলমে নাম শংকরদিয়া হলেও সে নামটি এখন সবাই ভুলতে বসেছে। এখন গ্রামটির নাম হয়ে গেছে ‘ ঘরজামাই’। বর্তমানে ১১০ জন ঘরজামাই গ্রামটিতে বাস করছে। ওয়ার্ডটির ৩ হাজার ভোটারের মধ্যে সাড়ে ৫শ’ ভোটারই ঘরজামাই ও তাদের পরিবার পরিজন। সবমিলিয়ে শংকরদিয়াসহ আশেপাশের গ্রামে ঘরজামাইদের প্রভাব কোন অংশেই কম নয়। বরং দিনকে দিন তা বাড়ছে ।
প্রথম ঘরজামাই
অনুসন্ধান করে দেখা গেছে শংকরদিয়া গ্রামের প্রথম ঘরজামাই তফেজ মন্ডল। বর্তমানে তার বয়স ৮৯ বছর। শরীরে আর তেমন বল শক্তি নেই। তবে নিজের বিয়ের কথা মনে আছে এখনো। কথা হলে তিনি জানান, আজ থেকে আনুমানিক ৭৩ বছর আগের কথা। তখন আমার বয়স ১৬ বছর। আমার বাড়ি ছিল পাশাপাশি গ্রামে। আমার চাচারা এ গ্রামে বাস করতেন। তাদের সুত্র ধরেই শংকরদিয়া গ্রামের জিন্নাত আলীর এক মাত্র সন্তান ছামেয়া খাতুনকে বিয়ে করেন। জিন্নাত আলীর বাড়িতেই থাকা শুরু করেন তফেজ। জিন্নাত আলী মারা যাবার পর তার প্রচুর সম্পত্তির মালিক হন তফেজ। তফেজ ৯ ছেলে ও ৩ মেয়ে সন্তানের জনক। ছেলে মেয়েরা সবাই প্রতিষ্ঠিত। তফেজ মন্ডলের মত আরেক ঘরজামাই আছালত মন্ডল (৭০)। শ্বশুর বাড়ির সম্পত্তি পেয়ে এখন অনেক টাকার মালিক আছালত।
ঘরজামাই ১১০
তফেজ মন্ডলকে দিয়ে শুরু হলেও ঘরজামাইয়ের সংখ্যা এখন ১১০। আশেপাশের বিভিন্ন গ্রাম ছাড়াও দেশের অন্য জেলার বাসিন্দারা এখানে কাজ করতে এসে আর ফিরে যায়নি। বিয়ে করে থেকে গেছেন ঘরজামাই। তবে ঘরজামাইদের বেশির ভাগই কৃষি শ্রমিক। কেউ কেউ ভ্যান নসিমন চালান। আবার অনেকেই ছোট ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছেন। তবে যারা শ্বশুর বাড়ির সম্পত্তি বাগিয়ে নিয়েছেন তারা বেশ আরামেই আছেন। কৃষি শ্রমিক ঘরজামাই কাসেম আলী জানান, তার বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলায়। এ গ্রামে কাজ করতে এসে বিয়ে করেন। আর ফিরে যাননি এলাকায়। মাঠে কাজ করে যা হাজিরা পায় তা দিয়ে কোন মতে চলে যায়। চা দোকানী ঘরজামাই বসির জানান, ঘরজামাই থাকাকে অনেকেই ভাল চোখে দেখে না। নিজের বাবার কোন জমি জায়গা ছিল না। তাই বিয়ের পর এ গ্রাম থেকে আর যায়নি। ঘরজামাই আবদার আলী, ঈসা সর্দ্দার সবাই প্রায় একই রকম কথা বলেন। একই পরিবারে একাধিক ঘরজামাইও রয়েছে। আমেনা ও রহিমা দুই বোন। তাদের স্বামীরা ঘরজামাই থাকেন। খোঁজনিয়ে জানাগেছে, একই এলাকার মহর আলী ঘটক বিয়ে করেন শংকরদিয়া গ্রামের জের আলীর মেয়েকে। মহর আলীর একমাত্র মেয়ের জামাই মসলেম উদ্দিন ঘরজামাই থাকেন। আবার মসলেম উদ্দিনের জামাইও আলম ঘরজামাই। আলম পরিচয় গোপন করে মসলেমের মেয়েকে বিয়ে করে কয়েক বছর আগে। পরে সবাই জানতে পারে সে সন্ত্রাসী। বর্তমানে সে জেলে রয়েছে।
সু-সংগঠিত ঘরজামাইরা
ঘরজামাইরা একসময় নানাভাবে নিগৃহিত হলেও এখন দিন বদলে গেছে। ঘরজামাইয়ের সংখ্যা বাড়তে থাকাই তাদের শক্তিও আগের থেকে অনেক বেশি। আগে বাইরে বের হলে নানাজনে নানা মন্তব্য করত। তবে জামাইদের এখন সবাই সমীহ করে চলে। গ্রামের ঘরজামাই আনিস জানান, এ গ্রামে ঘরজামাইয়ের সংখ্যা অনেক। ঘরজামাইদেও কোন সংগঠন না থাকলেও অচিরেই একটি কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটির মাধ্যমে এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজে অংশ নেবে সবাই এছাড়া সামনে ইউপি নির্বাচনে একজন প্রার্থী থাকবে আমাদের। সবাই মিলে আমরা কাজ করতে চাই। এলাকার মেম্বার জাকির হোসেন লালন বলেন, শংকরদিয়া গ্রামে ঘরজামাইয়ের সংখ্যা যে ভাবে বাড়ছে তাতে করে পুরো গ্রামই তাদের দখলে চলে যাবে। ঘরজামাইদের মধ্যে কোন বিভেদ নেই। তারা বেশ আরামেই বাস করছে এখানে।
যে কারণে ঘরজামাই বাড়ছে
এলাকার পরিবেশ অনেক শান্ত। সন্ত্রাসীদের কোন ঝামেলা নেই। রাস্তাঘাট যোগাযোগ ব্যবস্থারও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সারাবছরই কাজ থাকে এ এলাকার লোকজনের হাতে। তাই বাইরের লোকজন এসে শংকরদিয়া গ্রাম দেখে মুগ্ধ হন। তাই অনেকেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আর ফিরে যান নি। এছাড়া পরিবারের লোকজনের সাথে ঝগড়া বিবাদ করে এসেও অনেকেই বিয়ে করে ঘরজামাই আছেন। ঘরজামাই বেড়ে চলার পিছনে এসব যুক্তি দেখালেন শংকরদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, গ্রামটিতে ঘরজামাই বেড়েই চলেছে। এতে করে সুবিধার পাশাপশি বেশ কিছু অসুবিধাও হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। ঘরজামাই রবিউল জানান, শংকরদিয়া গ্রামটি এমনিতেই সুন্দর। এখানে সারা বছরই কাজ থাকে। ঘরজামাইদের বেশির ভাগই অন্যের জমি লিজ নিয়ে চাষ করেন। খোঁজনিয়ে দেখাগেছে, ঘরজামাইদের বেশির ভাগই দরিদ্র। দারিদ্রতার কারনেও ঘরজামাইয়ের সংখ্যা বাড়ছে বলে স্থানীয় অনেকেই মনে করেন। এ গ্রামটিতে ঘরজামাই খুবই সাধারন একটি ব্যাপার।

সোমবার, ১৯ অক্টোবর, ২০০৯

দারিদ্র দূরীকরণের ঘোষনা কতদুর পৌছায় ?

আবু বকর সিদ্দীক, সম্পাদক-দৈনিক সময়ের কাগজ
কুষ্টিয়ার বাজারে চিনির দাম ৬০ টাকা। পিঁয়াজ, রসুন, বেগুন সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। সবই কৃষকের উৎপাদিত পণ্য। কিন্তু তার মালিক আর কৃষক না। হাত ঘুরে তা এখন মজুদদারের গুদামে, মালিক টাকাওয়ালা মহাজন। এমপি-মন্ত্রীদের সঙ্গে তাদের গভীর সখ্যতা। রাজনীতির নিয়ন্ত্রনকর্তা। ভোট ও মিছিলে তারা টাকা দেয়। লোক দেয়। মামলা ও হামলায় সহযোগিতা করে। আইনপ্রণেতা, গণতন্ত্রের ছেলে মেয়েরা নতজানু। মজুদদারের ইশারায় তারা হাসেন, কাঁদেন এবং বিদেশ প্রমোদে যান। আয়েশ করে মজুদদার ব্যবসা করেন। রাস্ট্রের অস্ত্রসহ পুলিশ পাহারা দেন। র‌্যাব, আর্মি , বিডিয়ার নিরাপত্তা দেন। দ্রব্যমূল্যের দাম তার কাছে নস্যি। যত বাড়বে, বাড়াতে পারবে ততই সুখ। কৃষক জনসংখ্যার ৯০ ভাগ। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, সচিবালয় এবং রাজধানীর পাঁচ তারা হোটেলগুলোতে কৃষি কাজ হয় না। দেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের শরীর জুড়ে কৃষকের ছড়াছড়ি। কৃষি আবাদ। গণতন্ত্রের প্রথম ও শেষ ধাপজুড়ে কৃষকের প্রাধাণ্য থাকার কথা। নির্ভেজাল শ্রম বিকিয়ে মাটির গর্ভ থেকে তুলে আনে ফসল। এখানে ফাঁকি বা ঘুষ চলে না। নির্দিষ্ট সময়ের আগেও কোন ফসল ঘরে আসে না। ইচ্ছে করলেই জুন ফাইনালে রাতারাতি কোন কাজ শেষ করা যায় না। সময়, শ্রম, বিনিয়োগ ও পরিচর্যার মাধ্যমেই কৃষক উৎপাদন করে। সন-ানের মমতায় যে ফসল বড় করে, ঘরে আনে তা দুদিনের মাথায় চলে যায়। ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। সময়ের প্রয়োজনে সে যখন আর তা কিনতে যায় তখন দাম বেড়ে যায় কয়েকগুন। কোটি কোটি কৃষক, মুখ বন্ধ। আবু ইসহাকের জোঁক গল্পের সেই কৃষকের সঙ্গে সবাই মহাজনি সুদের কবলে জিম্মি। বেশীরভাগ মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন না হলে সেখানে সামগ্রিক উন্নতি সম্ভব নয়। এই সহজ কথা বোঝার জন্য বিদেশী ডক্টরেট ডিগ্রী এবং আপাদমস-ক রাজনীতিবিদ হতে হয় না। ৯০ ভাগ মানুষের উন্নয়ন চিন-া বাদ দিয়ে এদেশে চলছে ১০ ভাগ নিয়ে টানাটানি। সেখানেও সুবিধা ভোগ করছে হাজারে কয়েকজন। সব মিলে সারা দেশের এক হাজার বা দুই হাজার লোক সম্পদের পাহাড় গড়ছে, কোটি কোটি লোক বঞ্চিত হচ্ছে। সবই হচ্ছে রাজনৈতিক দুবৃত্তায়নের জালে। গণতন্ত্রের নামে এ দেশে লুটপাটতন্ত্র চলছে দীর্ঘ দিন। চুক্তি করে আওয়ামীলীগ-বিএনপি লিজ নিচ্ছে। কোটি কোটি কৃষকের মুখে টোনা বাঁধা। যেভাবে কৃষক গরুর মুখে বাঁধে। সব দেখবে, বুঝবে বলতে পারবে না কিছু। গণতন্ত্র এদের মুখে আছে। মাথায় ও অন্তরে প্রতিহিংসা। শোষণ করার লিপ্সা। কথিত সুশীলদের নিয়ে এরা দারিদ্র্য বিমোচনের শপথ নেয়। বিলাসবহুল আলোঝলমলে চীনমৈত্রী সম্মেলনে গরিবদের জন্য আহা করে। সামনে বসে থাকে মেদবহুল ব্যবসায়ী, সমাজের সুশীল। কৃষকের জন্য ( দেশের গরিব মানুষ) কান্না করে। টিসু বক্সের শেষ টিসুটি নিয়ে নাকের সর্দি ও চোখের পানি পরিস্কার করে। তৈলাক্ত টিভি ক্যামেরার পুজিবাদী মালিক সে দৃশ্য কৃষককে দেখায়। মাটির মতই গলে যায় কৃষকের মন। মঞ্চের নেতা-নেত্রীরা চশমার ফাঁক দিয়ে ডিজিটাল প্যানারোমা ব্যানার, ফেস্টুন ও নামী হোটেলের দামী ফাস্টফুড দেখেন। তখন কুষ্টিয়ার গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়নের দরিদ্য কৃষক খবির চিৎকার করে আকাশ কাঁপায়। আট বছরের শিশুপুত্র সেলিমকে সে ঠিকমত খেতে দিতে পারেনি। নিজে অসুস্থ, বউও। সংসারে টানাটানি। একটি এনজিওর কিস্তি না দিতে পারায় হারিয়েছে দোচালা টিনের ঘরটি। অভুক্ত, অপুষ্ট সেলিম ঠান্ডা জ্বরে শ্বাস নিতে পারছে না। অনেক কষ্টে টেনে এনেছে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের বারান্দায়। ৪০ এর ঘরে খবিরের বয়স। ভাঙাচোরা চেহারা। মুখ ভর্তি খোঁচা খোঁচা দাড়ি। চোখে মুখে ছেলেকে বাঁচানোর আর্তি। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল, আশে-পাশের মানুষ নির্বিকার। পড়ন্ত বিকেলে ১৬ অক্টোবর আমি গিয়েছিলাম বন্ধুবর আকাশকে দেখতে। সংবাদকর্মি, অসুস্থ। বেরিয়ে যাওয়ার সময় এমারজেন্সির সামনে একজন পিতার কান্না আটকে দিল। ফ্যাল ফ্যাল করে সেলিম তাকিয়ে আছে। হাসপাতালের ট্রলির উপর, হাড্ডিসার একটি শিশু। ছুটে ছুটে ডাক্তার, নার্স আর হাসপাতালের কর্মচারীদের পায়ে ধরছে পিতা। ছেলেকে বাঁচানোর জন্য চড়া সুদে ৫০০ টাকা এনেছে। খবিরও অসুস্থ। কাঁশছে। কিন্তু ছেলের জন্য উদগ্রীব। বার বার ছুটে গিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরছে। ছেলেটি নির্বিকার। সবগুলো টিভি চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রীর দারিদ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনার অনুষ্ঠান লাইভ দেখাচ্ছে। সুন্দর শাড়ীতে তাকে মানিয়েছে, সুশোভিত চীন-মৈত্রী সম্মেলন(বর্তমান নাম বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র) কেন্দ্রে তিনি দেশ থেকে দারিদ্য দূর করার যুদ্ধ ঘোষনা করছেন।

রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০০৯

শেষ দিনে লালন আখড়াবাড়িতে বিদায়ের সুর

উতসবের শেষ দিনে কুষ্টিয়ার লালন আখড়াবাড়িতে ছিল বিদায়ের সুর। রোববার বিকেল থেকেই ভবের হাট ছেড়ে যাওয়া শুরু হয় বাউল ভক্তদের। আগামী বছর দৌল পূর্ণিমা উৎসবে মিলনের আকাঙ্খা ও লালন পূণ্যভূমি ছুয়ে যাওয়ার তৃপ্তি নিয়ে আখড়াবাড়ি ছাড়ছেন তারা। বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ১১৯তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে পহেলা কার্তিক শুক্রবার ৩ দিনের এ স্বরনোৎসব শুরু হয়। এবারও দেশ বিদেশের হাজার হাজার লালন ভক্ত অনুসারির মিলন ঘটে কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায়। রোববার উৎসবের শেষদিনেও বাধভাঙা স্রোতের মতো ছেউড়িয়ার রাস্তায় রাস্তায় ছিল লাখো মানুষের ঢল। লালন মাজার এর খাদেম ফকির আলাউদ্দিন শাহ কুষ্টিয়া নিউজকে বলেন, লালন ছিলেন ভাববাদী আদর্শের এক মহান পুরুষ। তিনি চেয়েছিলেন জাত-পাত ভুলে মানুষ ভজে সব সোনার মানুষ হবে। তাইতো দেহত্যাগের শতবর্ষ পরেও তার আখড়াবাড়িতে আজ লাখো মানুষের ভীড়। দিন দিন লালনের গানের বানী ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বময়। এবার পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা দর্শনার্থীর সংখ্যাও ছিল অনেক। তারাও নেচে গেছে উৎসবে গা ভাষায়। বাউল সম্রাট জানতেন মিলনের আকাঙ্খা কখনই ফুরাবার নয়। তাইতো তিনি গাইলেন মিলন হবে কতদিনে, আমার মনের মানুষেরও সনে..ভেঙে যাচ্ছে ভবের হাট, এতোবড় মিলন মেলা। বাউলদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে জাগতিক দুরুত্ব। তাই মনখারাপ লালন ভক্তদের।উৎসবের শেষ দিনেও লালনের গানে গানে মানুষকে সুপথে ডাকা দেয়া হয়। ফকির রশিদ বলেন, লালনের ডাকে সাড়া দিয়ে একদিন জাত ভুলে সারা পৃথিবীর মানুষ এক কাতারে শামিল হবে।
সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে
সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে, ফকির লালন কয় জাতের কি রূপ দেখলাম না এ সংসারে...ডুবলে পারে রতন পাবি, ভাসলে পারে পাবিনা...দয়াল চাদ আসিয়া আমায় পার করে নেবে, এমন সৌভাগ্য আমার কবে হবে...বাউল সাঁইজির এসব আধ্যাত্মিক গানের সুরে গত তিসদিন মজে ছিল ছেউড়িয়া আখড়াবাড়ি। তিন পাগলে হলো মেলা নদে এসে...একবার আপনারে চিনতে পারলে যাবে অচেনারে চেনা...মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি..নিগুড় তত্ত্বের এসব গান রাতভর মন্ত্রমুগ্ধের মতো উপভোগ করছে লক্ষাধিক মানুষ। উৎসবের এই তিনদিনে সন্ধ্যায় আলোচনা অনুষ্ঠানের পরই শুরু হতো মনমাতানো লালন সংগীতের মুর্চ্ছনা। মুল মঞ্চে প্রথমে লালন একাডেমির শিল্পিরা দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর একের পর এক নামীদামি লালন সংগীতের শিল্পিদের সংগীত মোহিত করে তোলে দর্শকদের। বাউল গানের সাথে ভাব নৃত্যে একাকার হয়ে যায় উতসুকরাও। মুল মঞ্চের বাইরেও বাউল আঙিনা ও উন্মুক্ত চত্ত্বরে খন্ড-খন্ড পরিসরে চলেছে অনবরত গান।

শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০০৯

ডুবলে পারে রতন পাবি..

ডুবলে পারে রতন পাবি, ভাসলে পারে পাবিনা...দয়াল চাদ আসিয়া আমায় পার করে নেবে, এমন সৌভাগ্য আমার কবে হবে...বাউল সাঁইজির এসব আধ্যাত্মিক গানের সুরে মজে উঠেছে ছেউড়িয়া আখড়াবাড়ি। তিন পাগলে হলো মেলা নদে এসে...একবার আপনারে চিনতে পারলে যাবে অচেনারে চেনা...মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি..নিগুড় তত্ত্বের এসব গান রাতভর মন্ত্রমুগ্ধের মতো উপভোগ করছে লক্ষাধিক মানুষ। ফকির লালন সাঁইয়ের ১১৯তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আখড়াবাড়িতে শুরু হয়েছে ৩ দিনের স্বরনোতসব। শুক্রবার রাতে উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। বাউল সম্রাট লালন শাহ তার জীবদ্দশায় ছেউড়িয়ার এ আখড়া বাড়িতে প্রতি বছর চৈত্রের দৌলপূর্নিমা রাতে বাউল ফকিরদের উৎসব বসাতেন। ১৮১৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক তার মৃত্যুর পর ওই উতসবের পাশাপাশি মৃত্যু দিবসে আখড়া কমিটির উদ্যোগে এ স্বরণোতসব শুরু হয়। উতসবের প্রথম দিন শুক্রবার রাতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মাহবুব-উল আলম হানিফ। জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন খান, কুমারখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, নির্বাহী কর্মকর্তা মানিকহার রহমান, প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান ও একাডেমির কর্মকর্তারা। সকলের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধান অতিথি মাহবুব-উল আলম হানিফ লালন একাডেমিকে পূর্নাঙ্গ একাডেমি হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষনা দেন। কুষ্টিয়া নিউজকে তিনি বলেন, এখানে এখন সবচেয়ে বেশি দরকার একটি অতিথিশালা ও সংগীত বিদ্যালয়। এ ব্যাপারে বর্তমান সরকার আন্তরিক।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরই শুরু হয় মনমাতানো লালন সংগীতের মুর্চ্ছনা। মুল মঞ্চে প্রথমে লালন একাডেমির শিল্পিরা দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর একের পর এক নামীদামি লালন সংগীতের শিল্পিদের সংগীত মোহিত করে তোলে দর্শকদের। বাউল গানের সাথে ভাব নৃত্যে একাকার হয়ে যায় উতসুকরাও। মুল মঞ্চের বাইরেও বাউল আঙিনা ও উন্মুক্ত চত্ত্বরে খন্ড-খন্ড পরিসরে চলছে অনবরত গান। খুলনা থেকে আসা ব্যাংকার মাসুদ রানা কুষ্টিয়া নিউজকে বলেন, টিভি ক্যাসেটে তো লালন সংগীত শোনাই যায়। কিন্তু এখানে এসে সরাসরি গান শোনার মজাই আলাদা।বাউলদের অভিমত লালন সংগীত শুধু নিছক বিনোদনের জন্য নয় এতে রয়েছে নিগুড় তত্বকথা। লালন সংগীত মানবতাবাদী ও অহিংসার প্রতীক। তার এ অহিংসার বাণী বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে পারলেই কেবল সার্থক হবে সব আয়োজন। এদিকে এ উপলক্ষে বসেছে লালন মেলা। সেখানে রকমারী পণ্য সামগ্রীর পাশাপাশি বাশ ও কাঠের তৈরি লালনের মূর্তি, একতারা এবং দোতারা বিক্রি হচ্ছে ভাল।সাঁইজীর ভাব-দর্শনের নানা অনুসঙ্গ এবং উতসব ও মেলা চলবে রোববার রাত পর্যন্ত।

শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০০৯

ছেঁউড়িয়া আখড়া বাড়ি প্রস্তুত : আজ শুরু হচ্ছে ৩ দিনের লালন উতসব

জাত গেলো জাত গেলো বলেই, বাড়ির পাশে আরশী নগর, মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি এসব আধ্যাত্মিক গানের সুরে প্রকম্পিত এখন লালন আখড়াবড়ি। বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ১১৯তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার এ আখড়া বাড়িতে শুরু হচ্ছে ৩ দিনের স্বরনোৎসব। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। লাখ লাখ ভক্ত, অনুসারী ও দর্শনার্থীদের বরন করতে এখন সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত আখড়াবাড়ি।বাউল স¤্রাট লালন শাহ তার জীবদ্দশায় ছেউড়িয়ার এ আখড়া বাড়িতে প্রতি বছর চৈত্রের দৌলপূর্নিমা রাতে বাউল ফকিরদের উৎসব বসাতেন। ১৮১৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক তার মৃত্যুর পর ওই উৎসবের পাশাপাশি মৃত্যু দিবসে আখড়া কমিটির উদ্যোগে এ স্বরণোৎসব শুরু হয়। লালন একাডেমির পরিচালনায় ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রাণালয়ের আর্থিক সহযোগিতায় এবারও তিন দিন ব্যাপী ঐতিহাসিক এ উৎসব পালিত হচ্ছে। উৎসব ঘিরে লালন ভক্ত অনুসারীদের মধ্যে চরম উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছে। এবারও অনুষ্ঠান শুরুর আগেই সাধু-গুরু ও বাউল ভক্ত অনুসারীরা এসে গেছেন আখড়াবাড়িতে। সাঁইজীর চরণে ভক্তি দিয়ে আখড়াবাড়ি চত্বরে অবস্থিত বিশাল অডিটোরিয়ামের ফাকা নিচতলাসহ এখানে সেখানে ভক্ত অনুসারীরা স্থায়ীভাবে আসন পেতে বসছেন। মূল মাজারের বাইরেও আসন পাতছেন অনেকেই। খন্ড খন্ড ভাবে অবিরাম চলছে লালন সংগীতের অপূর্বসূর-মূর্ছনা। লালন হলেন মানবতা ও অহিংসার প্রতীক। তার মানব ধর্ম ও অহিংসার বাণী বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে পারলেই কেবল সার্থক হবে সব আয়োজন।

মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর, ২০০৯

খোকসায় র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গণমুক্তিফৌজের আঞ্চলিক নেতা ফরিদ বাহিনীর প্রধান ফরিদ নিহত

কুষ্টিয়া, ১৩ অক্টোবর ২০০৯
মঙ্গলবার রাত ১০টায় কুষ্টিয়ার খোকসায় পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের সময় এক শীর্ষ চরমপন্থি নেতা নিহত হয়েছে। নিহত ফরিদ নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন গণমুক্তিফৌজের আঞ্চলিক নেতা ও নিজের নামে গড়া ফরিদ বাহিনীর প্রধান। পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে ৩টি ও একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে। সে ওই অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী। কুষ্টিয়ার সহকারি পুলিশ সুপার সিএ হালিম ই-বার্তাকে জানান, দুর্ধর্ষ ফরিদ তার বাহিনী নিয়ে খোকসা উপজেলার সোমসপুরে ইটভাটার নিকটে বৈঠক করছে এ খবরে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টায় পুলিশ ও র‌্যাবের দুটি পৃথক দল একযোগে সেখানে অভিযান চালায়। চরমপন্থিরা পুলিশ ও র‌্যাব দেখে তাদের উদ্দ্যেশ্যে গুলিবর্ষন শুরু করে। পুলিশ ও র‌্যাব পাল্টা গুলি চালালে শুরু হয় বন্দুকযুদ্ধ। এক পর্যায়ে চরমপন্থিরা পিছু হটলে পুলিশ সেখান থেকে গুলিতে নিহত ফরিদের লাশ উদ্ধার করে। এছাড়াও সেখান থেকে একটি সাটার গান, ১০ রাউন্ড গুলি, ৪টি ককটেল বোমা ও দুইটি রামদা উদ্ধার হয়। নিহত ফরিদ খোকসা থানার অজৈল গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক জোয়ার্দ্দারের ছেলে। গতবছর খোকসার দুর্ধর্ষ চরমপন্থি টিক্কা র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হবার পর সে টিক্কা বাহিনীর নাম বদলে ফরিদ বাহিনী করে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে।

সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০০৯

কয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে গণমুক্তিফৌজের আঞ্চলিক নেতা আজবাহার

কুষ্টিয়া, ১২ অক্টোবর ২০০৯
কুষ্টিয়ার কয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন গণমুক্তি ফৌজের আঞ্চলিক নেতা আজবাহার ওরফে বাহার। আজ রোববার ভোরে কুমারখালী উপজেলার কয়া কলেজ মাঠে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়ার সহকারি পুলিশ সুপার সিএ হালিম জানান, কয়া কলেজ মাঠে একদল চরমপন্থী বৈঠক করছিল। এ খবর পেয়ে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কুষ্টিয়া ডিবি ও কুমারখালী থানা পুলিশের যৌথ টিম সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চরমপন্থিরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। এক পর্যায়ে চরমপন্থিরা পিছু হটলে পুলিশ সেখান থেকে আজবাহারের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহসহ ২টি সার্টারগান এবং ৪ রাউন্ড রাইফেলের গুলি উদ্ধার করে। নিহত আজবাহার কয়ার চরবানিয়াপাড়ার আজিল বিশ্বাস ওরফে আজিমুদ্দিনের ছেলে। নব্বই’র দশকের গোড়ার দিকে পদ্মা-গড়াই নদীতে নৌ ডাকাতি শুরু করে অপরাধ জগতে পা বাড়ান আজবাহার। এরপর অপহরন, চাঁদাবাজি শুরু করেন। ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ব্যবহার হতো আজবাহার। তার নামে চাঞ্চল্যকর বাচ্চু চেয়ারম্যান হত্যাসহ ৩টি হত্যা মামলা, ১টি অপহরন, ২টি বিস্ফোরক, ২টি দাঙ্গা, ২টি জিডিসহ অন্তত: ১২টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

কুষ্টিয়ায় ২দিনে গড়ে একবার বন্দুকযুদ্ধ : ৪৮দিনে নিহত ২৩, গুলিবিদ্ধ ১

আইন প্রয়োগকারি সংস্থার সাথে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় গত ২২ আগস্ট থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ৪৮দিনে শুধুমাত্র কুষ্টিয়া জেলায় নিহত হয়েছে ২৩জন চরমপন্থি সন্ত্রাসী। গুলিবিদ্ধ হয়েছে আরো একজন ডাকাত। পুলিশ ও র‌্যাব সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ হিসাব কষা হয়েছে। হিসেবমতে বন্দুকযুদ্ধে গড়ে প্রতি দুই দিনে একজন করে চরমপন্থি-সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এসময়ে অবশ্য পুলিশ বা র‌্যাবের কোন সদস্য নিহত বা গুলিবিদ্ধ হয়নি। নিহতের অধিকাংশই চিহ্নিত চরমপন্থি সন্ত্রাসী হলেও দু-একজনের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে বন্দুকযুদ্ধের গল্প বানিয়েছে। তবে এসময়ে শক্তিশালি চাপ প্রয়োগ বা অন্য কোনভাবে ম্যানেজ হয়ে বন্দুকযুদ্ধের বিশেষ এ পদ্ধতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ডাক সাইটের বেশ ক’জন চরমপন্থি সন্ত্রাসী। এ অবস্থা শুরু হবার পর বন্দুকযুদ্ধের ভয়ে চরমপন্থি সন্ত্রাসীরা যে যার মতো আত্মগোপনে চলে যায়। যে কারনে এসময়ের মধ্যে চরমপন্থি সন্ত্রাসীদের হাতে কোন হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেনি। কুষ্টিয়ার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়ানক অবনতিতে গত ২০ আগষ্ট কুষ্টিয়া সফরে আসেন পুলিশ ও র‌্যাবের প্রধান। তারা পুলিশের বিশেষ তকমা দিয়ে যাবার পরই শুরু হয় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা। উন্নতি হতে থাকে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির। গত ২২ আগষ্ট দৌলতপুর উপজেলার জগন্নাথপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি(এমএল জনযুদ্ধ) ক্যাডার নাহারুল নিহত হয়। ২৫ আগষ্ট কুষ্টিয়া শহর সংলগ্ন মহাশ্বশান এলাকায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধের সময় জাসদ গণবাহিনী (লাল) এর হরিপুর ইউনিটের কমান্ডার শাহীনুর রহমান ডাবলু নিহত হয়। ২৬ আগষ্ট শহরের মজমপুরে সন্ত্রাসীদের দুইপক্ষ ও পুলিশের ত্রিমুখী বন্দুকযুদ্ধে সুমন ও সোহেল নিহত হয়। এ ঘটনা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। চরমপন্থি সংগঠন লালপতাকা দাবি করে তারা ওই দুইজনকে হত্যা করেছে। পুলিশ বলে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। ২৯ আগষ্ট সদর উপজেলার ঝাউদিয়া বামনগ্রামে পুলিশ ও র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে গণবাহিনীর কমান্ডার বাউল মেম্বার নিহত হয়। ০৫ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার কয়া এলাকায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধের সময় জাসদ গণবাহিনী (লাল) এর হরিপুর ইউনিটের অন্যতম ক্যাডার মুরাদ হোসেন ওরফে ভোলা ডাকাত নিহত হয়। ৬ সেপ্টেম্বর মিরপুরের আমবাড়িয়ায় গণবাহিনীর নেতা আব্দুল হান্নান ওরফে হানা পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। ৭ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার দুর্বাচারায় জাসদ গণবাহিনী (লাল) এর অন্যতম ক্যাডার আশরাফুল ইসলাম ওরফে আশা নিহত হয়। ০৯ সেপ্টেম্বর মিরপুর উপজেলার আমলা-মহদীপুরে র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধের সময় পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি এমএল-লাল পতাকার শীর্ষ নেতা আনোয়ার হোসেন ওরফে কালো আনোয়ার নিহত নিহত হয়। ১০ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডিতে পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথ দলের সাথে বন্দুকযুদ্ধে গণমুক্তিফৌজের ক্যাডার সোহেল আহম্মেদ ওরফে টোকন নিহত হয়। ১১ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের বালিয়াপাড়ায় পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথদলের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গণমুক্তি ফৌজের কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ এলাকার দুর্ধর্ষ কিলার জিকো পারভেজ ওরফে সম্রাট নিহত হয়। ১২ সেপ্টেম্বর শহরতলীর বাড়াদিতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয় ডাকাত রেজাউল। সে মারা যায়নি। ১৩ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার আইলচারায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় গণবাহিনীর আঞ্চলিক নেতা মারফত বিশ্বাস। এদিনই শহরের হাউজিং-এ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় গণমুক্তিফৌজের শীর্ষ ক্যাডার বিপ্লব। ১৪ সেপ্টেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার বেড়বাড়াদীতে পুলিশের সংগে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় গণবাহিনীর সামরিক কমান্ডার সমির উদ্দিন ওরফে সমির মন্ডল। ২৩ সেপ্টেম্বর ভোররাতে কুষ্টিয়া শহরতলীর উত্তর লাহিনী মাঠে পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথ দলের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান কুষ্টিয়ার শীর্ষ মাদক সম্রাট রাশেদুল ইসলাম। সে কুষ্টিয়া শহর যুবলীগের সাংঘঠনিক সম্পাদক ছিলো। তার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয় রাশেদুল সম্প্রতি কোন সন্ত্রাসী কর্মাকন্ডের সাথে জড়িত ছিলনা। ২৫ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে মিরপুর উপজেলার বাঁশবাড়ীয়া বটতলায় ও কুষ্টিয়া শহরতলীর মোল্লাতেঘরিয়া জিকে ক্যানেলের পাশে পুলিশের সং্গে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা ইদু (৩৮) ও গণমুক্তি ফৌজের ক্যাডার আরজ আলী(৩৩)। ২৬ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর লালনগর বাজারের পাশে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি এমএল-লাল পতাকার মোহন মালিথা (৪৫) নিহত হয়। তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় এলাকায় তাদের প্রতিপক্ষ একটি মিথ্যা মামলায় অন্তর্ভূক্ত করে পুলিশ দিয়ে হত্যা করে। ৩০ সেপ্টেম্বর ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ফয়জুল্লাহ বেড়িবাধে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি এমএল লালপতাকার শীর্ষ ক্যাডার ও দূর্ধর্ষ পান্না বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড আশারাফুল ইসলাম আশা। ০৭ অক্টোবর উজানগ্রাম স্টিল ব্রিজের নিকটে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গনবাহিনীর আসলাম গ্রুপের সামরিক কমান্ডার সুন্নত আলী নিহত হয়। ৮ অক্টোবর ভোরে সদর উপজেলার ভাদালিয়া পাড়া জিকে ক্যানেলের কাছে র‌্যাব ও পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন গণমুক্তি ফৌজের সামরিক কমান্ডার সাকমল। ৯ অক্টোবর ভোরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার বিত্তিপাড়া মাধপুর কবরস্থানের কাছে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন গণ বাহিনী লাল গ্র“পের আঞ্চলিক কমান্ডার আমিরুল ইসলাম খা। ১০ অক্টোবর ভোরে মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের বড়বড়িয়া দক্ষিণপাড়া কবরস্থানের কাছে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা মজনু মন্ডল ওরফে আব্দুল্লাহ। এরমধ্যে গত ০২ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া সদরে পাঞ্জের নামের এক চরমপন্থি ও ২২ সেপ্টেম্বর কুমারখালীতে দুর্ধর্ষ টিক্কা বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড ফজু অস্ত্রসহ পুলিশের নিকট ধরা পড়লেও বন্দুকযুদ্ধের বিশেষ ব্যবস্থার আওতায় আসেনি। এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, সন্ত্রাসীরা পুলিশকে গুলি করলে পুলিশও পাল্টা গুলি চালাবে এটা খুবই স্বাভাবিক। সেখানে কোন সন্ত্রাসী মারা পড়লে আমাদের কিছু করার নেই। আর পুলিশ যে সকল অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পেরেছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় হত্যাকান্ড, মহাসড়কের পাশ থেকে লাশ উদ্ধার

কুষ্টিয়া, ১১ অক্টোবর ২০০৯
বন্দুকযুদ্ধে একের পর এক চরমপন্থি সন্ত্রাসী নিহত হওয়ায় অনেকটা শান্ত হয়ে আসা কুষ্টিয়ায় আবারো হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা খবর দিলে আজ সকালে পুলিশ ভেড়ামারার ১০ মাইল নামক স্থানে কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কের পাশ থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে। তবে নিহত যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ভেড়ামারা থানার এসআই আমিনুল জানান, পিটিয়ে ও গলায় ফাস লাগিয়ে তাকে অন্য কোথাও হত্যা করে রাস্তার পাশে লাশ ফেলে রেখে যায় সন্ত্রাসীরা। নিহতের গলায় লাইলনের রশি বাধা ছিল। হাতের আঙ্গুল ছিল ভাঙ্গা। নাক মুখে রক্তাক্ত জখম ছিল। প্রায় দুইমাস পর আবার হত্যাকান্ডের ঘটনায় কুষ্টিয়াবাসী আবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।

চ্যানেল আই'র যুগ্ম বার্তা সম্পাদক মাহবুব মতিন-এর অকাল মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত


তুমি দীর্ঘকাল রবে আমাদের অন্তরে--

তুমি বেচে রবে চ্যানেল আইতে--

তুমি ভাস্মর থাকবে সংবাদে--

তোমার তৈরি সংবাদগুলো

নিয়মিত যন্ত্রনাদগ্ধ করবে--

তোমার পিটিসিগুলো-------কান্নায় ভাসাবে;;;


মাহবুব মতিনের আত্মা শান্তি পাক-কুষ্টিয়া নিউজ।

শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০০৯

কুষ্টিয়ার মিরপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা মজনু মন্ডল ওরফে আব্দুল্লাহ

কুষ্টিয়া, ১০ অক্টোবর ২০০৯
কুষ্টিয়ার মিরপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা মজনু মন্ডল ওরফে আব্দুল্লাহ। আজ শনিবার ভোরে উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের বড়বড়িয়া দক্ষিণপাড়া কবরস্থানের কাছে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের ভাষ্য ওই কবরস্থানের কাছে একদল চরমপন্থির গোপন বৈঠকের খবর পেয়ে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়া ডিবি ও মিরপুর থানা পুলিশের যৌথ টিম সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় চরমপন্থিরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ বাধে। এক পর্যায়ে চরমপন্থিরা পিছু হটলে পুলিশ সেখান থেকে মজনু মন্ডলের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহসহ একটি এলজি এবং ৪টি বন্দুকের কার্তুজ উদ্ধার করে। নিহত মজনুর বিরুদ্ধে ২টি হত্যাসহ অন্ততঃ ৬টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। নিহত মজনু চকমন্ডলপাড়ার মৃত সওদাগর মন্ডলের ছেলে।

শুক্রবার, ৯ অক্টোবর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গণবাহিনী (লাল) এর নেতা আমিরুল খাঁ নিহত

কুষ্টিয়া, ৯ অক্টোবর ২০০৯
কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন গণবাহিনী (লাল) এর আঞ্চলিক কমান্ডার আমিরুল ইসলাম খাঁ। শুক্রবার ভোরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা এলাকার বিত্তিপাড়া-মাধপুর কবরস্থানের কাছে ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, একদল চরমপন্থি বৈঠক করছে এ খবর পেয়ে ভোর সোয়া ৫টার দিকে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এসময় চরমপন্থিরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা জবাব দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ বাধে। শেষে চরমপন্থিরা পিছু হটলে পুলিশ সেখান থেকে আমিরুলের গুলিবিদ্ধ লাশসহ একটি এলজি ও ৪ রাউন্ড বন্দুকের গুলি উদ্ধার করে। নিহত আমিরুলের নামে ৮টি হত্যা মামলাসহ অন্তত: ১২টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানায়। নিহত আমিরুল ঘটনাস্থলের অদুরে অবস্থিত মহিষাডাঙ্গা গ্রামের মৃত শামসেল খাঁ’র ছেলে।

বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গনমুক্তিফৌজের ক্যাডার সাকমল নিহত

কুষ্টিয়া : ০৮ অক্টোবর ২০০৯
কুষ্টিয়ায় পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে চরমপন্থি সংগঠন গনমুক্তিফৌজের ক্যাডার সাকমল(৩৬) নিহত হয়েছে। গত রাত সাড়ে ৩টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ক্যানেলের উপর এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।পুলিশ জানায়, ওই ক্যানেলপাড়ে একদল চরমপন্থী গোপন বৈঠক করছে এ খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ও র‌্যাবের পৃথক দল সেখানে অভিযান চালায়। এসময় চরমপন্থীরা পুলিশ ও র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশ ও র‌্যাব পাল্টা গুলি ছুড়লে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ বাধে। এক পর্যায়ে চরমপন্থীরা পিছু হটলে পুলিশ সেখান থেকে সাকমলের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ, একটি এলজি এবং ৬ রাউন্ড বন্দুকের গুলি উদ্ধার করে। সাকমলের নামে ৪টি হত্যাসহ ৬টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। তার বাড়ি সদর উপজেলার বড়িয়া গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত আকছেদ মন্ডল।

বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গণবাহিনীর কমান্ডার সুন্নত আলী নিহত

কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গনবাহিনীর আসলাম গ্রুপের সামরিক কমান্ডার সুন্নত আলী নিহত হয়েছে। বুধবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা এলাকার উজানগ্রাম স্টিল ব্রিজের নিকট এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার সিএ হালিম জানান, উজানগ্রাম স্টিল ব্রিজের নিকট একদল চরমপন্থী গোপন বৈঠক করছে এ খবরের ভিত্তিতে আজ ভোর সোয়া ৫টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এসময় চরমপন্থীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের লক্ষ করে গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ বাধে। এক পর্যায়ে চরমপন্থীরা পিছু হটলে পুলিশ সেখান থেকে সুন্নতের গুলিবিদ্ধ মৃত দেহ, একটি এলজি এবং ৫টি বন্দুকের গুলি উদ্ধার করে। সুন্নতের নামে ৪টি হত্যাসহ ৬টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ দাবি করছে।

মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর, ২০০৯

আলমডাঙ্গায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে চরমপন্থি কোরবান নিহত, হরিণাকুন্ডে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ধরা পড়েছে জানে আলম

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে মুক্তি-টগর বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড চরমপন্থি কোরবান আলী(৪১)। পুলিশ জানায়, সোমবার রাত দেড়টার দিকে আলমডাঙ্গার ঘোষবিলা গ্রামের একটি ফুটবল মাঠে চরমপন্থিরা গোপন বৈঠক চলছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযানে গেলে দুপক্ষের মধ্যে আধাঘন্টাব্যাপি বন্দুকযুদ্ধ হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কোরবানকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, কোরবান অপহরণ এবং হত্যাসহ অন্তত ৬টি মামলার পলাতক আসামি। সে আলমডাঙ্গা থানার মোস্ট ওয়ানটেড তালিকাভূক্ত চরমপন্থি। ঘটনাস্থল থেকে একটি শাটারগান, ১০ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত বন্দুকের গুলির খোসা ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে। নিহত চরমপন্থি নেতা কোরবানের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার বিনোদপুরে। সে ওই এলাকার মৃত ভাদু মণ্ডলের ছেলে।
অপরদিকে ঝিনাইদহ হরিণাকুণ্ডুর বিরামপুর গ্রামের জিনারুল ওরফে জানে আলম গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ধরা পড়েছে। সোমবার দেড়টার দিকে গোবরাপাড়া ব্রিজের নিকট পুলিশের সাথে গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ধরা পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে একটি শাটারগান ও কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ঝিনাইদহ হরিণাকুণ্ডুর বিরামপুর গ্রামের আমজাদ আলীর ছেলে জিনারুল (৩০) এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। সে বোমাবাজ হিসেবে পুলিশের মোস্টওয়ানটেড ছিলো। পুলিশ বলেছে, গতরাত দেড়টার দিকে দৌলতপুর ইউনিয়নের গোবরাপাড়া বেলি ব্রিজের নিকট একদল সন্ত্রাসী গোপন বৈঠক করছে খবর পেয়ে হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে থানার একদল পুলিশ অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি বর্ষণ করে। পুলিশও চালায় পাল্টা গুলি। গোলা-গুলির এক পর্যায়ে পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জিনারুল ধরা পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে একটি শাটারগান ও কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ জিনারুলকে ঝিনাইদহ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। জিনারুল বোমা হামলা মামলায় বেশ কিছুদিন জেলহাজতে থাকার পর মুক্ত হয়ে আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলো।

সোমবার, ৫ অক্টোবর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় রাইচমিল মনিটরিং : চালের দাম কমলো বস্তাপ্রতি ৪৫টাকা

কুষ্টিয়া নিউজ : জেলা বাজার মনিটরিং কমিটি সোমবার দুপুরে দেশের বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর-আইলচারা পর্যবেক্ষনে যাওয়ায় সেখানকার ব্যবসায়ীরা একলাফে চালের দাম বস্তাপ্রতি ৪৫টাকা কমিয়ে দিয়েছে। অটোমেটিক রাইচমিলে তৈরি ভালমানের ৪০ কেজি ওজনের প্রতিবস্তা মিনিকেট চাল রোববারও বিক্রি হয়েছে ১হাজার ৩শত ২৫টাকায়। যা সোমবার মনিটরিং কমিটির সামনে বিক্রি হয় ১হাজার ২শত ৮০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে তদন্ত কমিটির নিকট দাম কমাবার প্রতিশ্র“তি দেবার পরও ব্যবসায়ীরা রোববার পর্যন্তও দাম কমায়নি।
জেলা বাজার মনিটরিং কমিটি গতকাল দুপুরে খাজানগর-আইলচারার বিভিন্ন রাইস মিলসহ শহরের পাইকারি ও খুচরা বাজার পরিদর্শন করেন। কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নীতিশ চন্দ্র সরকার বলেন, আমরা দেখলাম বড় বড় রাইস মিলে এখনো বিপুল পরিমান ধান মজুদ রয়েছে। এসব ধান অনেক আগে কেনা। যে কারনে ধানের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে চালের দাম বাড়ানো অনৈতিক। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা প্রতিশ্র“তি দিয়েছে চালের দাম আরো কমিয়ে আনবে তারা।
ধানের দাম বৃদ্ধি ও মজুতদার সিন্ডিকেটের ইশারায় ঈদের পরপরই হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে যায়। রোজার মধ্যে ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের কড়া নজরদারি থাকায় সেসময় না বাড়িয়ে ঈদের পর চালের দাম বাড়ানো হয়। ঢাকার ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম ধান চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর-আইলচারার কয়েকজন শীর্ষ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান চাল মজুত রেখে কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করে বাড়িয়ে দেয় চালের দাম। দাম বাড়িয়ে দেবার পর তারা বর্ধিত দামে চাল বিক্রি করার জন্য আড়তে আড়তে ফোনও করে। কুষ্টিয়া থেকে চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে পত্রিকা ও মিডিয়ায় এ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশের পর ২৯ সেপ্টেম্বর ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক। ওই কমিটি ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর শহরের খুচরা বাজারসহ দেশের বৃহত্তম ধান চালের মোকাম খাজানগর আইলচারার বিভিন্ন রাইস মিল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে কমিটির প্রধান কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ফজলুর রহমান বলেন, বড় বড় রাইচ মিলে বিপুল পরিমান ধান মজুদ রয়েছে। মিল মালিকরা চালের দাম বৃদ্ধির জন্য ধানের দাম বাড়ার অজুহাত দেখালেও এসব ধান দাম বাড়ার আগেই কেনা। তিনি বলেন, চালের দাম বাড়ার কোন কারনই নেই। অহেতুক দাম বাড়ানোর সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি। চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীরা সেদিন তদন্ত কমিটির সদস্যদের নিকট চালের দাম কমাবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তদন্ত কমিটি গত ৩০ সেপ্টেম্বর সরকারের নিকট রিপোর্ট জমা দিয়েছে। কমিটির প্রধান কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ফজলুর রহমান জানান, রিপোর্ট-এ নিয়মিত চালকলগুলো মনিটরিংএর সুপারিশ করা হয়েছে। নিয়মিত চালকলগুলো চালু থাকছে কি না, কেউ অধিক হারে ধান চাল মজুদ করছে কি না বা চাল কিনতে এসে কেউ ফেরত যাচ্ছে কি না এ বিষয়গুলো তদারকি করলেই চালের দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে। এরই ধারাবাহিকতায় এ মনিটরিংএ যায় রাজার মনিটরিং কমিটি।

ডিভি-২০১১ : আবারও আমেরিকা যাওয়ার সুযোগ

কুষ্টিয়া নিউজ : বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশীদের জন্য আমেরিকা যাওয়ার সুযোগ এসেছে আবারও। গ্রিনকার্ড হিসেবে খ্যাত ডাইভারসিটি ইমিগ্রেশন ভিসা প্রোগ্রাম (ডিভি-২০১১) ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। গত ২রা অক্টোবর থেকে অনলাইনে বা ইন্টারনেটে ভিসা প্রার্থীদের আবেদনপত্র জমা নেয়া হচ্ছে। চলবে ৩০শে নভেম্বর আমেরিকার সময় দুপুর ১২টা পর্যন্ত। এবার আবেদন করা যাবে শুধু ইন্টারনেটের মাধ্যমে। ইন্টারনেটে আবেদনপত্র পাওয়া যাবে www.dvlottery.state.gov/application.aspx এই ওয়েবসাইটে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট www.dvlottery.state.gov/-এ এসব কথা বলা হয়েছে। জানা গেছে, অন্যবারের মতো এবারও বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, বাহরাইন, ভুটান, ব্রুনেই, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, পূর্ব তিমুর, বিশেষভাবে প্রশাসিত হংকং, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, ইসরাইল, জাপান, কুয়েত, মালয়েশিয়া, নেপাল, সৌদি আরব, আলজেরিয়া, বেনিন, বতসোয়ানা, ক্যামেরুন, মিশরসহ বিশ্বের আরও অনেক দেশের মানুষকে সর্বোচ্চ ৫৫ হাজার ডিভি ভিসা দেয়া হবে। এবার বাংলাদেশ পেতে পারে প্রায় ৩ হাজার ৮৫০টি ভিসা।
যারা ইতিমধ্যে আমেরিকার নাগরিকত্ব বা স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন তারা এতে আবেদন করতে পারবেন না। আবেদনকারিকে অবশ্যই কমপক্ষে (আমেরিকান মানের) হাইস্কুল পর্যায়ের বা তার সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। অর্থাৎ সবমিলিয়ে আপনার প্রাথমিক পর্যায় এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ১২ বছরের কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন থাকতে হবে। অথবা গত ৫ বছরের মধ্যে দুই বছরের কোন পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে যা যাচাই-বাছাই করবে সংশ্লিষ্টরা।
ডিভি-২০১১ আবেদন জমা দেয়ার পদ্ধতি
একই ব্যক্তি একাধিক আবেদন করলে, তিনি যেই হোন না কেন, তার আবেদনপত্র বাতিল হয়ে যাবে। আপনি আবেদনপত্র জমা দেয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সফলভাবে জমা দেয়া আবেদনের জন্য কম্পিউটারের মনিটরে আপনাকে একটি কনফার্মেশন রেজাল্ট দেবে। তাতে আপনার নাম এবং একটি কনফার্মেশন নম্বর দেয়া থাকবে। মনিটরের পর্দায় দেখানো এই তথ্যগুলো আপনাকে প্রিন্ট নিয়ে রাখতে হবে।
আপনি যে আবেদন ফর্ম পাবেন সেখানে অতি সাবধানে নিজের, প্রয়োজনে স্ত্রীর, ২১ বছরের নিচে বয়সের অবিবাহিত সন্তানের ছবি যোগ করতে হবে। তবে যে শিশু ইতিমধ্যে আমেরিকার নাগরিকত্ব, আইন অনুযায়ী আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছে তার ছবি সংযুক্ত করতে হবে না। গ্রহণযোগ্য হবে না কোন গ্র“প ছবি। আবেদনপত্রের সঙ্গে আপনার, আপনার স্ত্রীর, প্রতিটি সন্তানের আলাদা আলাদা ডিজিটাল ছবি ইন্টারনেটে পাওয়া ফর্মের নির্ধারিত স্থানে সংযুক্ত করতে হবে। এ ছবি তোলা যেতে পারে নতুন ডিজিটাল ফটো ব্যবস্থায় বা ডিজিটাল স্ক্যানারে স্ক্যান করা ছবি যোগ করতে হবে।
ডিজিটাল ছবি কেমন হবে
সরাসরি ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা ছবি বা ডিজিটাল স্ক্যানারে স্ক্যান করা ছবি আবেদনের সঙ্গে জমা দেয়া যাবে। আবেদনকারীদের ছবিগুলো হতে হবে ক্যামেরার দিকে সোজা মুখ করা। মাথা কোনভাবে ডানে-বামে, ওপরে-নিচে অবস্থান করানো যাবে না। চশমাপরা ছবি অগ্রহণযোগ্য হবে যদি চশমার ওপর আলো প্রতিফলিত হয়, চশমার ফ্রেমের ছাপ পড়ে চোখের ওপর। মাথার ওপরে চুল থেকে শুরু করে থুঁতনির ঠিক নিচ পর্যন্ত অংশের পরিমাপ হতে হবে মোট ছবির শতকরা ৫০ ভাগ থেকে ৬৯ ভাগের মধ্যে। মোট ছবির উচ্চতার শতকরা ৫৬ থেকে ৬৯ ভাগের মধ্যে হতে হবে দুচোখের উচ্চতা। ছবির পিছনের ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হবে হালকা রঙের। তবে ছবির সামনে থেকে কোন কালার ব্যবহার করা যাবে না। যদি ব্যাকগ্রাউন্ড কালো হয়, অস্পষ্ট হয়, কম্পোজিশন করা হয়, রেজুলুশন খুব কম হয় তাহলেও আবেদনপত্র অযোগ্য হতে পারে।
ছবির মাপ কি হবে
প্রথমত ডিজিটাল ছবির ক্ষেত্রে ছবি হতে হবে Joint Photographic Experts Group (JPEG) ফর্মেটের। এর সর্বনিম্ন মাপ হতে হবে ৬০০ বাই ৬০০ পিক্সেল। ছবির ফাইল সাইজ হতে হবে ২৪০ কিলোবাইটস। ২৪-বিটের রঙিন ছবি হতে হবে। তবে সাদা-কালো, ২-বিটের কালার, ৮-বিটের কালার বা ৮-বিটের সাদা-কালো ছবিও গ্রহণযোগ্য হবে না। অন্যদিকে ছবি যদি স্ক্যান করে পাঠান তাহলে স্ক্যানারের রেজুলুশন কমপক্ষে ১৫০ ডট প্রতি ইঞ্চিতে (dpi) থাকতে হবে। এক্ষেত্রেও ছবি হতে হবে JPEG ফরমেটের। ইমেজ ফাইল সাইজ হতে হবে ২৪০ কিলোবাইটস। ইমেজ রেজুলুশন থাকতে হবে কমপক্ষে ৬০০ বাই ৬০০ পিক্সেল। অন্যান্য শর্ত আগের মতোই। এক্ষেত্রে নির্দেশনা দেখতে ব্রাউজ করতে পারেন www.dvlottery.state.gov/photo.aspx এই ঠিকানায়।
সব ঠিকঠাক মতো গুছিয়ে নিয়ে বসে পড়ুন ইন্টারনেটে
কম্পিউটারে বসে চলে যান www.dvlottery.state.gov/application.aspএই ঠিকানায়। আপনার সামনে খুলে যাবে ইলেক্ট্রনিক ডাইভারসিটি ভিসা এন্ট্রি ফর্ম (ই-ডিভি ইন্ট্রি ফর্ম)। এই ফর্মটি যথাযথভাবে পূরণ ও জমা দিতে ব্যর্থ হলে আপনার আবেদনপত্র অযোগ্য হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে নিজের ফর্ম নিজেকে পূরণ করতে উৎসাহিত করেছে আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইন্টারনেটে ওপরের ঠিকানায় ব্রাউজিং করলেই কম্পিউটারের মনিটরে ভেসে উঠবে ফর্ম। সেখানে যেসব তথ্য চাওয়া হবে তা অনেকটা এরকম-
1. FULL NAME- Last/family name, First name, Middle name.
2. DATE OF BIRTH- Day, Month, Year.
3. GENDER-Male or Female
4. CITY WHERE YOU WERE BORN-
5. COUNTRY WHERE YOU WERE BORN-
6. COUNTRY OF ELIGIBILITY OR CHARGEABILTY FOR THE DV PROGRAM-
7. ENTRY PHOTOGRAPH(S)-
8. MAILING ADDRESS-
9. COUNTRY WHERE YOU LIVE TODAY
10. PHONE NUMBER (optional)
11. E-MAIL ADDRESS-
12. WHAT IS THE HIGHEST LEVEL OF EDUCATION YOU HAVE ACHIVED, AS OF TODAY?- (1) Primary school only, (2) High school, no degree, (3) High school degree, (4) Vocational school, (5) Some university courses, (6) University degree, (7) Some graduate level courses, (8) Master degree, (9) Some doctorate level courses, and (10) Doctorate degree.
13. MARITAL STATUS- Unmarried, Divorced, Widowed, or Legally Separated.
14. NUMBER OF CHILDREN-
15. SPOUSE INFORMATION-
16. CHILDREN INFORMATION-
এখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে দেয়ার মতো তথ্য উপাত্ত ফর্মেই দেয়া আছে। সেখান থেকে শুধু প্রযোজ্যটি নির্বাচন করে দিতে হবে কম্পিউটারের কার্সরের সাহায্যে। ডিভি আবেদনের ফর্মে দুটি ভাগ আছে। ওপরে দেয়া হলো এর প্রথম অংশ। এই অংশটি ঠিকঠাক মতো পূরণ করে ফর্মের শেষে Continue বাটনে চাপ দিলে এই অংশ জমা হয়ে যাবে। তখন কম্পিউটারের মনিটরে ভেসে উঠবে ফর্মের দ্বিতীয় অংশ। একই পদ্ধতিতে তা পূরণ করে Submit বাটনে চাপ দিলে চূড়ান্তভাবে জমা হয়ে যাবে আবেদনপত্র। এ সময় মনিটরের স্ক্রিনে ভেসে উঠবে আপনার নাম ও কনফার্মেশন নম্বর। এটি প্রিন্ট নিয়ে নিজের কাছে খুব যত্ন সহকারে রেখে দিতে হবে।
সফলভাবে পূরণ করা ফর্ম যাচাই-বাছাই শেষে কম্পিউটারের মাধ্যমে চূড়ান্ত ড্র করা হবে। এতে যারা বিজয়ী হবেন তাদেরকে ফর্মে দেয়া ই-মেইল এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। এক্ষেত্রে আমেরিকার কোন দূতাবাস বা কনসুলেটসে বিজয়ীদের তালিকা পাওয়া যাবে না বলে জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বার্ষিক এই ডিভি লটারির জন্য কোন চার্জ বা ফি নেয়া হবে না। আমেরিকা নিয়োজিত কোন কর্মচারী, বাইরের কোন কনসালটেন্ট অথবা বেসরকারি কোন সংস্থা ডিভি লটারি কর্মসূচি পরিচালনা করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে সফলভাবে জমা দেয়া আবেদনকারীদের সবারই জেতার সম্ভাবনা সমান।
নিজে পূরন করতে না পারলে কোথায় যাবেন
নিজে ফরম পুরণের ব্যাপারে কনফিডেন্ট না থাকলে বা প্রয়োজনীয় উপকরন যেমন কম্পিউটার, ডিজিটাল ক্যামেরা, স্কানার বা ইন্টারনেট লাইন না থাকলে অন্যের সহযোগিতা নিতে পারেন। এরজন্য কুষ্টিয়া শহরেই রয়েছে বেশকিছু বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের বাইরে সাইনবোর্ড লাগিয়ে তারা দৃষ্টি আকর্ষন করছে। খেয়াল রাখবেন দক্ষ অপারেটর ছাড়া ফরম পূরণ করলে আপনার কষ্ট, টাকা ও সময় সবই নষ্ট হবে। আর একটি বিষয় খেয়াল রাখবেন সেটি হলো-কোন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে হাতে লেখা ফরম পূরণ করে দিয়ে আসবেন না যারা পরে আপনাকে কনফার্মেশন লেটার দিবে। সে কেমন করে আপনার ফরম পূরন করলো, ঠিকমতো ছবি দিলো কিনা বুঝতে পারবেন না। সেজন্য অবশ্যই আপনি বসে থেকে আপনার সামনেই ফরম পূরন করতে বলবেন। আরো খেয়াল রাখবেন আপনার নিজের ঠিকানা না দিয়ে অনেকেই অন্য ঠিকানা বা মেইল ব্যবহার করতে চাইবে। তাহলে বিজয়ী হলে আপনি জানতেই পারবেন না। তারা জানবে আগে। তাই নিজে বসে থেকে অবশ্যই আপনার লটারী ফরম পূরন করবেন। এক্ষেত্রে কুষ্টিয়া নিউজ এর কার্যালয়ে (মিডিয়া জোন, থানার সামনে, কুষ্টিয়া) যোগাযোগ করতে পারেন। এখানেও ফরম পূরন করে দেয়া হচ্ছে।
বাদ পড়ছে যেসব দেশ
আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এবার ডিভি লটারিতে অংশ নিতে পারছে না বেশকিছু দেশ। সেগুলো হলো- ভারত, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, কলম্বিয়া, ডোমিনিক প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েডর, এল সালভাদর, গুয়াতেমালা, হাইতি, জামাইকা, মেক্সিকো, পাকিস্তান, পেরু, ফিলিপাইনস, পোল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর আয়ারল্যান্ড বাদে যুক্তরাজ্য এবং এর উপর নির্ভরশীল অঞ্চল এবং ভিয়েতনাম।

রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০০৯

ঘড়ির কাটা না পিছালে এবার উল্টো ফল হবে

শীতকাল অতি নিকটে। এখন আবার ঘড়ির কাটা পিছিয়ে আগের স্থানে নিয়ে যাওয়া উচিত। তা না হলে যে উদ্দেশ্যে ঘড়ির কাটা এগিয়ে আনা হয়েছিল তার উল্টো কাজ হবে। কারণ শীতকালের বেশিরভাগ সময়জুড়ে সকালে কুয়াশা থাকে। এ কারনে র্বতমান সময় নয়টায় (পূর্বের আটটা) বিদ্যুত ছাড়া অফিস আদালতে কাজ করা সম্ভব হবেনা। ফলে দিনের আলো ব্যবহার করে বিদ্যুত সাশ্রয়ের উদ্দেশ্য ব্যহত হবে। এছাড়া চাকুরিজীবী বিশেষ করে মহিলাদের শীতের সময় বর্তমান সময় সকাল ৯ টায় অফিস করা সত্যিই খুব কষ্টকর হবে। শীতের সময় এমনিতেই দেরিতে সকাল হয়, তাদের পক্ষে সময়মত অফিসে পৌছানো কঠিন হয়ে যাবে।
গত ১ জুন মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯ জুন রাত ১১ টায় ঘড়ির কাটা এক ঘণ্টা এগিয়ে এনে রাত ১২ টা করা হয়। তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে ৩০ সেপ্টেম্বরের পর আবার পূর্বের সময়ে ফিরে যাওয়া হবে। ৩০ সেপ্টেম্বরের পর ঘড়ির কাঁটা পেছানোর ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা না হলেও গতকাল বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার (অব.) এনামুল হক এ ব্যপারে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন সময়সূচী বদলানোর পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। এ প্রসঙ্গে পিডিবির চেয়ারম্যান এএসএম আলমগীর কবিরও মন্ত্রীর বক্তব্য সমর্থন করেন।

কুষ্টিয়ায় চালের দাম কমেনি

কুষ্টিয়া নিউজ : তদন্ত কমিটির নিকট প্রতিশ্রুতি দিলেও দেশের বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর-আইলচারার ব্যবসায়ীরা চালের দাম একটুও কমায়নি। তবে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের নজরদারির পর গত ৫দিনে চালের দাম বাড়াতেও সাহস করেনি তারা। ৪০ কেজির এক বস্তা সাধারন মানের মিনিকেট চাল এখনো আগের দাম অর্থাত ১হাজার ২শত ৩০ টাকা থেকে ১হাজার আড়াইশত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর অটোমেটিক রাইস মিলে তৈরি ভাল মানের মিনিকেট রোববার বিক্রি হয়েছে ১হাজার ৩শত ২৫টাকা দরে। খুচরা বাজারেও চালের দাম কমেনি একটুও। রোববার কুষ্টিয়া পৌরবাজারে মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকা কেজি দরে। আর বিভিন্ন রকমের মোটা চাল বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ২২-২৬ টাকা দরে। পৌর বাজারের শাপলা ট্রেডার্সের বিক্রেতা আশরাফুল কুষ্টিয়া নিউজকে বলেন, চালের দাম কমবে বলে শুনছি। তবে এখনো কমেনি। মুন্নি স্টোরের মানিসুর কুষ্টিয়া নিউজকে জানান, গত ১০দিন ধরে ৩২ টাকা কেজি দরে মিনিকেট বিক্রি করছি। এরমধ্যে দাম কমা-বাড়া করেনি। তবে শুনেছি দাম কমবে। ধানের দাম বৃদ্ধি ও মজুতদার সিন্ডিকেটের ইশারায় ঈদের পরপরই হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে যায়। ঢাকার ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম ধান চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর-আইলচারার কয়েকজন শীর্ষ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান চাল মজুত রেখে কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করে বাড়িয়ে দেয় চালের দাম। দাম বাড়িয়ে দেবার পর তারা বর্ধিত দামে চাল বিক্রি করার জন্য আড়তে আড়তে ফোনও করে। কুষ্টিয়া থেকে চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে পত্রিকা ও মিডিয়ায় এ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশের পর ২৯ সেপ্টেম্বর ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক। ওই কমিটি ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর শহরের খুচরা বাজারসহ দেশের বৃহত্তম ধান চালের মোকাম খাজানগর আইলচারার বিভিন্ন রাইস মিল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে কমিটির প্রধান কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ফজলুর রহমান বলেন, বড় বড় রাইচ মিলে বিপুল পরিমান ধান মজুদ রয়েছে। মিল মালিকরা চালের দাম বৃদ্ধির জন্য ধানের দাম বাড়ার অজুহাত দেখালেও এসব ধান দাম বাড়ার আগেই কেনা। তিনি বলেন, চালের দাম বাড়ার কোন কারনই নেই। অহেতুক দাম বাড়ানোর সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি। চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীরা তদন্ত কমিটির সদস্যদের নিকট চালের দাম কমাবার প্রতিশ্রুতি দেন। তদন্ত কমিটি গত ৩০ সেপ্টেম্বর সরকারের নিকট রিপোর্ট জমা দিয়েছে। কমিটির প্রধান কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ফজলুর রহমান কুষ্টিয়া নিউজকে জানান, রিপোর্ট-এ নিয়মিত চালকলগুলো মনিটরিংএর সুপারিশ করা হয়েছে। নিয়মিত চালকলগুলো চালু থাকছে কি না, কেউ অধিক হারে ধান চাল মজুদ করছে কি না বা চাল কিনতে এসে কেউ ফেরত যাচ্ছে কি না এ বিষয়গুলো তদারকি করলেই চালের দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে। তিনি বলেন, তদন্ত করে আসার পর একজন ম্যাজিষ্ট্রেট এর নেতৃত্বে একটি দল একবার মনিটরিং এ যান। পুলিশের মনিটরিং দলও খাজানগর আইলচারা মোকামে কাজ করছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান কুষ্টিয়া নিউজকে জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নীতিশ চন্দ্রের নেতৃত্বে সোমবার থেকে মাঠে নামছে জেলা বাজার মনিটরিং টিম। কোন অনিয়ম পেলেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। চিকন চাল বিশেষ করে মিনিকেট চালের জন্য বিখ্যাত কুষ্টিয়ার মোকাম। এখানকার পাঁচশতাধিক রাইচমিলে প্রতিদিন ১হাজার ৫শত থেকে ১হাজার ৮শত টন চাল উৎপাদন হয়ে থাকে। এখানকার ফোর স্টার রাইচ মিলের মালিক শরীফুল ইসলাম কুষ্টিয়া নিউজকে বলেন, ধানের দামের সাথে পড়তা করেই চালের দাম নির্ধারন করা হয়। ধানের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে চালের দাম এর চেয়ে কমার আশা নেই। এখন চালের দাম স্থিতিশীল থাকলে সেটাই বরং ভাল। রশিদ এগ্রো ফুড প্রডাক্ট এর ম্যানেজার আবু সায়েম কুষ্টিয়া নিউজকে বলেন, আমরা তদন্ত কমিটির নিকট চালের দাম কমাবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। কিন্তু উৎপাদন খরচ বেশি হবার কারনে কমানো সম্ভব হয়নি। তবে দু-একদিনের মধ্যে দাম কমতে পারে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

কুষ্টিয়ায় কিয়াম মেটাল ইন্ডাষ্ট্রি’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন

দেশসেরা তৈজষপত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কিয়াম মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেডের ১৯তম প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে রবিবার সকালে কুষ্টিয়া বিসিক শিল্পনগরীর কারখানা চত্বরে মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় জাতীয় ও প্রতিষ্ঠানের পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব মজিবর রহমান দিনব্যাপী কর্মসুচীর উদ্বোধন করেন। কিয়াম মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজবাউর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিআরবি গ্র“পের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মজিবর রহমান, এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামসুর রহমান, বিআরবি কেবলস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক পারভেজ রহমান ইসলামী ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাইজুল কবির। পরে প্রতিষ্ঠানের উত্তরোত্তর সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। কিয়াম মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জেলার শিল্প মালিক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, পেশাজীবি, সুধীজনসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে কিয়াম প্রিন্টিং প্রেস’র উদ্বোধন করা হয়।

বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০০৯

ইকবাল সোবহান চৌধুরীর উপর হামলা মামলায় সাবেক এমপি শহীদুল, মেহেদীসহ ১৪ আসামীর নামে চার্জ গঠন

কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর উপর হামলার চাঞ্চল্যকর মামলায় সাবেক এমপি শহীদুল ইসলাম ও মেহেদী আহমেদ রুমীসহ ১৪ আসামীর নামে চার্জ গঠন করা হয়েছে। কুষ্টিয়া চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক আব্দুল আজিজ মন্ডল আসামীদের উপস্থিতিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর চার্জ গঠন করে আগামী ১লা নভেম্বর মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহনের জন্য দিন নির্ধারন করেছেন। দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে ২০০৬ সালের ৯মে জেলা বিএনপির সভাপতি তৎকালীন এমপি শহীদুল ইসলাম ওই পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হাসান জাহিদ, সমকাল প্রতিনিধি মুন্সী তরিকুল ইসলাম ও যুগান্তর প্রতিনিধি আল মামুন সাগরের নামে মামলা দিয়ে কুষ্টিয়া ছাড়া করেন। পরবর্তিতে স্থানীয় আন্দোলনের বাজার পত্রিকার সম্পাদক ও চ্যানেল আই প্রতিনিধি মনজুর এহসান চৌধুরীকেও কুষ্টিয়াছাড়া করেন বিএনপির ক্যাডাররা। এরপর এ ঘটনার প্রতিবাদে ওই বছরের ২৯মে কুষ্টিয়ায় আয়োজিত সাংবাদিক সমাবেশে সাবেক দুই এমপি শহীদুল ইসলাম ও মেহেদী আহমেদ রুমীর নির্দেশে বিএনপি দলীয় ক্যাডাররা ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে বাংলাদেশ অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরীসহ ঢাকা ও কুষ্টিয়ার ২৫ জন সাংবাদিক আহত করে সামাবেশ পন্ড করে দেয়। সে ঘটনায় মামলা করা তো দুরের কথা দীর্ঘ ২ মাস ৪ দিন কুষ্টিয়া ছাড়া ছিলেন মানবজমিন প্রতিনিধিসহ ৪ সাংবাদিক। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ক্ষমতা শেষ হবার পর গত ২০০৭ সালের ২৫ মে মামলা দায়ের করতে সক্ষম হন কুষ্টিয়ার সাংবাদিকরা। দৈনিক খবরের প্রতিনিধি শামীম বিন সাত্তার বাদী হয়ে ১২ আসামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এরপর হামলার ভিডিও চিত্র দেখে পুলিশ আরো দুই আসামীকে গ্রেফতার করে। তাদের নাম যুক্ত করে মোট ১৪ আসামীর বিরুদ্ধে চার্জশটি দেন কুষ্টিয়া থানার এসআই সাজ্জাদ হোসেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর মামলার চার্জ গঠনের দিনে আসামী পক্ষের আইনজীবিরা ২৪১(ক) ধারায় আসামীদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে বিচারক তাদের বিরুদ্ধে ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩৭৯, ৪২৭, ১১৪ ও ৩২৩ ধারায় চার্জ গঠন করেন। সাবেক এমপি শহীদুল ও মেহেদী ছাড়াও মামলার অন্য আসামীরা হলেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক খ. সাজেদুর রহমান বাবলু, জেলা যুবদলের সভাপতি মহসীন আলী, সাধারন সম্পাদক শহীদুল্লাহ শহীদ, সৈয়দ নূরুল ইসলাম চাঁদ, মিজানুর রহমান ডিউক, আল আমীন রানা কানাই, গোলাম হাফিজ পিপলু, মিরাজুল ইসলাম মিন্টু, আতিয়ার, আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু, হাসান জামাল হাসান ও আরিফুল ইসলাম সুমন। এদিকে চার্জ গঠনের সময় মামলার জন্য নিযুক্ত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি অতিরিক্ত পিপি আক্তারুজ্জামান মাসুম কৌশলে এড়িয়ে আদালত থেকে বের হয়ে যান। পরে এপিপি আব্দুর রহিম রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন। আইনজীবি আক্তারুজ্জামান মাসুমের বিরুদ্ধে আসামীদের সাথে আতাতের অভিযোগ করেন বাদীপক্ষ।