সোমবার, ৫ অক্টোবর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় রাইচমিল মনিটরিং : চালের দাম কমলো বস্তাপ্রতি ৪৫টাকা

কুষ্টিয়া নিউজ : জেলা বাজার মনিটরিং কমিটি সোমবার দুপুরে দেশের বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর-আইলচারা পর্যবেক্ষনে যাওয়ায় সেখানকার ব্যবসায়ীরা একলাফে চালের দাম বস্তাপ্রতি ৪৫টাকা কমিয়ে দিয়েছে। অটোমেটিক রাইচমিলে তৈরি ভালমানের ৪০ কেজি ওজনের প্রতিবস্তা মিনিকেট চাল রোববারও বিক্রি হয়েছে ১হাজার ৩শত ২৫টাকায়। যা সোমবার মনিটরিং কমিটির সামনে বিক্রি হয় ১হাজার ২শত ৮০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে তদন্ত কমিটির নিকট দাম কমাবার প্রতিশ্র“তি দেবার পরও ব্যবসায়ীরা রোববার পর্যন্তও দাম কমায়নি।
জেলা বাজার মনিটরিং কমিটি গতকাল দুপুরে খাজানগর-আইলচারার বিভিন্ন রাইস মিলসহ শহরের পাইকারি ও খুচরা বাজার পরিদর্শন করেন। কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নীতিশ চন্দ্র সরকার বলেন, আমরা দেখলাম বড় বড় রাইস মিলে এখনো বিপুল পরিমান ধান মজুদ রয়েছে। এসব ধান অনেক আগে কেনা। যে কারনে ধানের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে চালের দাম বাড়ানো অনৈতিক। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা প্রতিশ্র“তি দিয়েছে চালের দাম আরো কমিয়ে আনবে তারা।
ধানের দাম বৃদ্ধি ও মজুতদার সিন্ডিকেটের ইশারায় ঈদের পরপরই হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে যায়। রোজার মধ্যে ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের কড়া নজরদারি থাকায় সেসময় না বাড়িয়ে ঈদের পর চালের দাম বাড়ানো হয়। ঢাকার ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম ধান চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর-আইলচারার কয়েকজন শীর্ষ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান চাল মজুত রেখে কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করে বাড়িয়ে দেয় চালের দাম। দাম বাড়িয়ে দেবার পর তারা বর্ধিত দামে চাল বিক্রি করার জন্য আড়তে আড়তে ফোনও করে। কুষ্টিয়া থেকে চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে পত্রিকা ও মিডিয়ায় এ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশের পর ২৯ সেপ্টেম্বর ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক। ওই কমিটি ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর শহরের খুচরা বাজারসহ দেশের বৃহত্তম ধান চালের মোকাম খাজানগর আইলচারার বিভিন্ন রাইস মিল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে কমিটির প্রধান কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ফজলুর রহমান বলেন, বড় বড় রাইচ মিলে বিপুল পরিমান ধান মজুদ রয়েছে। মিল মালিকরা চালের দাম বৃদ্ধির জন্য ধানের দাম বাড়ার অজুহাত দেখালেও এসব ধান দাম বাড়ার আগেই কেনা। তিনি বলেন, চালের দাম বাড়ার কোন কারনই নেই। অহেতুক দাম বাড়ানোর সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি। চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীরা সেদিন তদন্ত কমিটির সদস্যদের নিকট চালের দাম কমাবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তদন্ত কমিটি গত ৩০ সেপ্টেম্বর সরকারের নিকট রিপোর্ট জমা দিয়েছে। কমিটির প্রধান কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ফজলুর রহমান জানান, রিপোর্ট-এ নিয়মিত চালকলগুলো মনিটরিংএর সুপারিশ করা হয়েছে। নিয়মিত চালকলগুলো চালু থাকছে কি না, কেউ অধিক হারে ধান চাল মজুদ করছে কি না বা চাল কিনতে এসে কেউ ফেরত যাচ্ছে কি না এ বিষয়গুলো তদারকি করলেই চালের দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে। এরই ধারাবাহিকতায় এ মনিটরিংএ যায় রাজার মনিটরিং কমিটি।

কোন মন্তব্য নেই: