সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১০

বাংলা একাডেমীর সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন ড. আবুল আহসান চৌধুরী


বাংলা একাডেমীর সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কুষ্টিয়ার কৃতি সন্তান ড. আবুল আহসান চৌধুরী। শুক্রবার বিকেলে বাংলা একাডেমী চত্বরে আয়োজিত মাসব্যাপী একুশের বই মেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা শেষে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক ও বিশিষ্ট লোক বিজ্ঞানী অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান এ পুরস্কার ঘোষণা করেন। লালন সাইজির উপর গবেষণার জন্য পাওয়া এ সম্মান ড. আবুল আহসান চৌধুরী বাউল ফকির লালন সাঁইকেই উৎসর্গ করেছেন। প্রফেসর ড. আবুল আহসান চৌধুরী বাংলা একাডেমীর পুরস্কার পাওয়ায় কুষ্টিয়ার সর্বস্তরের মানুষ আনন্দে-উদ্বেলিত। জানা গেছে, আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারী বিকেল ৪টায় বাংলা একাডেমী আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে কুষ্টিয়ার কৃতি সন্তান প্রফেসর ড. আবুল আহসান চৌধুরীর হাতে এ পুরস্কার প্রদান করা হবে। পুরস্কারটি তিনটি ভাগে বিভক্ত। সম্মাননা পত্র, সম্মাননা প্রতিক ও একটি নির্ধারিত অংকের চেক।

ড. আবুল আহসান চৌধুরী
ড. আবুল আহসান চৌধুরী ছাত্রজীবন থেকেই লেখা-লেখি শুরু করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তাঙ্গন থেকে প্রকাশিত “স্বাধীন বাংলা” পত্রিকায় তিনি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নানা কবিতা ও গল্প লিখে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাগ্রত করেছেন। এরপর তিনি শিক্ষকতায় আত্মনিয়োগ করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি এপার বাংলা ওপার বাংলার সাহিত্যিক, লেখক ও কবিদের নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তিনি দীর্ঘকাল ধরে অমর কথা সাহিত্যিক বিষাদ সিন্ধু রচয়িতা মীর মোশাররফ হোসেনকে নিয়ে গবেষণা করে মীর মোশাররফ হোসেন’র সাহিত্য ও শিল্পকর্মের উপর ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। এর পর থেকেই তাঁর গবেষণাধর্মী লেখা-লেখি আরও বৃদ্ধি পায়। তিনি একাধারে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিলাইদহের জীবন, এই উপমহাদেশের প্রথম গ্রামীণ সাংবাদিকতার প্রবাদ পুরুষ কাঙ্গাল হরিণাথ মজুমদার, জলধর সেন এবং সর্বপরি বাউল সম্রাট লালন ফকিরকে নিয়ে তার গবেষণাধর্মী লেখা বই দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমাদৃত হয়। তাঁর ৫০ বছর পূর্তিতে তাঁকে নিয়ে এপার বাংলা ও ওপার বাংলার প্রখ্যাত লেখক, সাংবাদিক ও গবেষকদের একটি গবেষণাধর্মী ৫শ পৃষ্ঠার বই ‘সুবর্ণ রেখার আল্পনা’ প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত প্রফেসর ড. আবুল আহসান চৌধুরীর বইয়ের সংখ্যা ৭০। এবারও একুশের বই মেলায় ড. চৌধুরীর ৭টি বই প্রকাশিত হয়েছে। এ সম্পর্কে ড. আবুল আহসান চৌধুরী মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বাংলা একাডেমীর পুরস্কার পেয়ে আমি বিষ্মিত ও আনন্দিত। বিষ্মিত এ কারণে যে, এতদিন পর বাংলা একাডেমী আমার মত একজন মানুষকে পুরস্কৃত করলো। আর আনন্দিত বাংলা একাডেমী আমাদের ভাষা আন্দোলনের ফসল সেই বাংলা একাডেমী আমাকে পুরস্কৃত করেছে সে জন্য। তিনি আরও জানান, কুষ্টিয়া আমার জেলা আমার এ অর্জণ কুষ্টিয়াবাসীর জন্য তাই এ পুরস্কার আমি বাউল ফকির লালন সাঁইকেই উৎসর্গ করলাম।

কোন মন্তব্য নেই: