বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১০

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর


অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হলো। বুধবার রাত ১২টার পর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা পাঁচ আসামি হলেন লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, মেজর বজলুল হুদা, লে. কর্নেল এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ (ল্যান্সার), লে. কর্নেল মুহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি) ও লে. কর্নেল সুলতান শাহারিয়ার রশিদ খান। তাঁরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর সাতজনের মধ্যে আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, মোসলেমউদ্দিন, রাশেদ চৌধুরী ও আব্দুল মাজেদ বিদেশে পালিয়ে আছেন। তাদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের পরোয়ানা রয়েছে। দণ্ডিত অপরজন আব্দুল আজিজ পাশা পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভোর রাতে একদল বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে সপরিবারে প্রাণ হারান বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু-পরিবারের অধিকাংশ সদস্যও সেই নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হন। নিহতরা হলেন, বেগম ফয়জুন্নেছা মুজিব, শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, সুলতানা কামাল, পারভিন জামাল রোজি, শেখ আবু নাসের, আবদুর সেরনিয়াবত, শেখ ফজলুল হক মনি, বেগম আরজু মনি, বেবি সেরনিয়াবাত, সুকান্ত আবদুল্লাহ, শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নাইন খান রিন্টু ও আরিফ সেরনিয়াবাত। ওই তাঁর মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরের থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। শেখ হাসিনা বর্তমানে দেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী।বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন হওয়ার পর খন্দকার মোশতাকের সরকার ক্ষমতা গ্রহণ এবং কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করে দেয়। পরে জিয়াউর রহমানের সরকার ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি জাতীয় সংসদে পাস করে। এর ফলে ২১ বছর ধরে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচারপ্রক্রিয়া বন্ধ থাকে। একই সঙ্গে কারাগারে জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের বিচারও বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় বঙ্গবন্ধু সরকারের তত্কালীন মন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাতসহ আট হত্যা এবং কামানের গোলায় মোহাম্মদপুরের শের শাহসুরী রোডের ১৪ জনকে হত্যার বিচার কার্যক্রম।১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শুরু হয় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম। ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কাজী গোলাম রসুল রায় ঘোষণা করেন। এতে ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ও মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণের শুনানি হয় হাইকোর্টে। ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বিভাগ রায় প্রদান করেন। বিচারপতি মো. রুহুল আমিন ১০ জন আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। অপর বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ১৫ জন আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।

কোন মন্তব্য নেই: