শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১০

বাবা গলাটিপে শিশুকন্যাকে হত্যা করে পুতে রাখে গড়াই’র চরে



কুষ্টিয়া শহরতলীর লালন মাজার সংলগ্ন ছেউড়িয়া মন্ডলপাড়া গ্রামে নেশাখোর বাবা নিজে তার শিশুকন্যাকে গলাটিপে হত্যা করে বস্তাবন্দি করে বালুচরে পুতে রাখে। পচেঁ গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে শিয়াল কুকুর বালু সরিয়ে মৃত শিশুটির পেটের অংশ থেকে খাওয়া শুরু করে। ১৮ জানুয়ারী রাতে হত্যা করা ওই শিশুর লাশ ১০ দিন পর বৃহস্পতিবার বিকেলে বিকট গন্ধে মানুষ টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। বাধবাজার এলাকায় গড়াই’র চরে বালুর খুড়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। শুক্রবার শেষ বিকেলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত করে শিশুর লাশ তার নানী বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেই মারিয়ার লাশ দাফন করার সময় হৈচৈ পড়ে যায়। নিজ শিশুকন্যার লাশ দেখে মা রুপা খাতুন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। নিহত শিশু কন্যার নাম মারিয়া (দেড় বছর)। এ নিয়ে কুমারখালী থানায় নিহত মারিয়ার মা রুপা খাতুন বাদী হয়ে ঘাতক বাবা মাহাবুল ইসলামের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এর আগেই পাষন্ড বাবা ঘরে তালা দিয়ে আত্মগোপন করেছে। পুলিশ ও এলাকাবাসি জানিয়েছে, আয়ের সব টাকা নেশা করে শেষ করে এসে নিহত মারিয়ার রিক্সাচালক বাবা প্রায় প্রতিরাতেই স্ত্রী রুপা খাতুনের উপর নির্যাতন চালাতো। মেয়ে বড় হচ্ছে, খেতে দিতে হবে, বিয়ে দিতে হবে এইসব বলে স্ত্রীকে মেয়ে মেরে ফেলার কথা কলতো। ভয়ে স্ত্রী রুপা খাতুন স্থানীয় বড়বাজারে কাজ নেয়া তুলার ফ্যাক্টরিতে যাওয়া বাদ দিয়ে শিশু কন্যাকে পাহারা দিত। গত ১৮ জানুয়ারী ঘরে চাল না থাকায় রুপা কাজে যায়। রাতে ফিরে এসে শিশুকন্যা মারিয়াকে না পেয়ে স্বামীর কাছে জানতে চাইলে শুরু করে মারধর। গভীর রাতে স্বামী তাকে জানায় তোর মেয়েকে গলাটিপে মেরে ফেলেছি, লাশ পুতে রেখেছি। এই খবর স্থানীয় পুলিশিং কমিটির মাধ্যমে পুলিশকে জানালে, পুলিশ প্রমাণ চায়। শেষমেশ রুপা খাতুন নিজেই বালু চরের উচু উচু ঢিবি সরিয়ে লাশ খুজতে শুরু করে। পায় না। প্রতিদিনই সে পাগলের মতো আদরের ধনকে এভাবে খুঁজে বেড়াতো। ১০ দিন পর বৃহস্পতিবার বিকেলে বিকট গন্ধে বালু চরে শিশুর লাশ আবিস্কার করে এলাকাবাসি। পরে রুপা এসে তার মেয়ে শনাক্ত করে সেখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে। বাবার হাতে নিহত মারিয়ার লাশ ইতিমধ্যে শিয়াল কুকুরে পেটের অংশ খেয়ে ফেলেছে বলে জানান ময়না তদন্তকারি ডাক্তার। শুক্রবার ময়না তদন্ত শেষে সন্ধায় শিশু মারিয়ার লাশ তার নানী বাড়ি দাফন হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই: