সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০০৯

চলতি বছরেই কুষ্টিয়ায় বাইপাস সড়ক, হরিপুর সেতু ও সুইমিং পুল কাজ শুরু হচ্ছে

সাজ্জাদ রানা, কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া গড়াই নদীর উপর হরিপুর সেতু, শহর বাইপাস সড়ক ও সুইমিং পুলের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। নতুন বছরের শুরুতেই প্রকল্প গুলোর কাজ শুরু হবে বলে জানাগেছে। এসব প্রকল্প গুলো নিয়ে দীর্ঘদিন ভোটের রাজনীতি হয়ে আসলেও অবশেষে কুষ্টিয়াবাসীর চাওয়া-পাওয়া পূরণ হতে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন পর এ সবই সম্ভব হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক প্রধান মন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুব-উল-আলম হানিফের প্রচেষ্টায়।স্বাধীনতার পর কুষ্টিয়া থেকে এই প্রথম কোন নেতা জাতীয় গুরুত্বপূর্ন পদে আসীন হয়েছেন। আর কারনেই স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে বলে সবাই মনে করছেন। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে কুষ্টিয়াবাসীর দূর্ভোগ দূর্দশা অনেকাংশে লাঘব হবে বলেও মনে করছেন সংশিষ্টরা। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মতায় আসার পর কুষ্টিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি হরিপুর সেতু , বাইপাস সড়ক ও সুইমিং পুল নির্মানের ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাইপাস সড়ক নির্মানের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের একটি সুত্র জানিয়েছে, বাইপাস সড়ক নির্মানের প্রাথমিক সব কাজই প্রায় শেষ হয়ে গেছে। ভুমি জরিপ ও অধিগ্রহনের কাজও শেষ হয়েছে অনেক আগে। ছোট খাট কিছু সমস্যা রয়েছে তাও অতি দ্রুত নিরসন হয়ে যাবে। এরপরই কাজ শুরু করা যাবে বলে আমরা আশা করছি। বটতৈল থেকে ত্রিমহোনী পর্যন্ত বাইপাস সড়ক না থাকায় প্রায়ই দূঘর্টনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখা সুত্রে জানাগেছে, বাইপাস সড়ক নির্মান প্রকল্পটি নিয়ে আর কোন সংশয় নেই। এ জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এদিকে বাইপাস সড়ক নির্মাণ হতে চলায় এলাকাবাসীর মধ্যেও খুশির ভাব ল্য করা গেছে। চৌড়হাস এলাকার ব্যবসায়ী নরুল হক জানান, বাইপাস সড়ক কুষ্টিয়াবাসীর প্রাণের দাবী। এর আগে উদ্বোধন করা হলেও তা ছিল লোক দেখানো। বিএনপি নেতারা বাইপাস সড়ক নিয়ে ভোটের রাজনীতি করেছে। আমলার সাতারুদের সুইমিং পুলের দাবিও নতুন নয়। গত বিএনপি সরকার আমলে সুইমিং পুল নির্মাণের আশ্বাস দেয়া হলেও তা শেষ পর্যন্ত আর হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি মাহবুব-উল-আলম হানিফের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সুইমিং পুলও পেতে যাচেছ কুষ্টিয়াবাসী। একনেকের বৈঠকে কুষ্টিয়ায় সুইমিং পুল নির্মানের জন্য ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সুইমিং পুল নির্মানের জন্য জায়গা নির্ধারণের কাজ চলছে। আগামী বছরের প্রথম দিকে এ কাজ শেষ হবে বলে জানাগেছে। কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি অনুপ কুমার নন্দী জানান, সুইমিং পুল কুষ্টিয়ার সাতারুদের জন্য অতীব দরকার। এদিকে সুইমিং পুল নির্মাণ হলে কুষ্টিয়া থেকে জাতীয় পর্যায়ে আরও অনেক সাতারু তাদের অবদান রাখতে পারবে। জানাগেছে, কুষ্টিয়ায় যে সুইমিং পুলটি নির্মাণ করা হবে তাতে আধুনিত সকল সুযোগ সুবিধা থাকবে বলে জানাগেছে। এদিকে হরিপুরের সাথে কুষ্টিয়া শহরের মানুষের নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ বাড়াতে গড়াই নদীর উপর একটি সেতুর দাবি অনেক দিনের। এ সেতু নিয়ে হরিপুর বাসী কুষ্টিয়া শহরে মানববন্ধন থেকে শুরু করে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। তবে গত এক যুগ ধরে কুষ্টিয়ার প্রাণ হরিপুর বাসীর সে দাবি পূরণ হয়নি। গত বিএনপি সরকারের শেষের দিকে হরিপুর জিকে ঘাটের ওপারে বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি নির্মাণ কাজের একটি ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। তবে সে কাজ আর হয়নি। খোঁজনিয়ে জানাগেছে, সে সময় ভোটের আগে হরিপুর বাসীর ভোট পেতে বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি সোহরাব উদ্দিন এ নাটক করেছিলেন। হরিপুর সেতু প্রকল্পটি আওয়ামী লীগ সরকার মতায় আসার পর মাহবুব-উল-আলম হানিফ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের উচ্চ মহলে দাবি তোলেন। তার সুপারিশ অনুযায়ী সরকার ইতিমধ্যে সেতু নির্মানের ব্যাপারে সকল পদপে নিয়েছে। গড়াই নদীর জিকে ঘাটে সেতু নির্মানের ব্যাপারে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। একনেকের বৈঠকে এ সেতুটি বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নদী শাসন ও সব মিলিয়ে সেতুটি নির্মান কাজে ৫০ কোটি টাকার মত ব্যায় হবে বলে জানাগেছে। এদিকে হরিপুর সেতু বাস্তবায়ণের খবরে হরিপুরসহ কুষ্টিয়া শহরের লোকজন সস্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। হরিপুর সেতু বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল বলেন, হরিপুর ও কুষ্টিয়া এক আত্মা। হরিপুর ও কুষ্টিয়াকে আলাদা করে দেখলে চলবে না। সেতু নিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত সেতুটি হচ্ছে এটা জেনে আমরা আনন্দিত। সেতু নির্মান হলে কুষ্টিয়ার অর্থনীতির চাকা আরও সচল হবে বলে তিনি জানান। দীর্ঘদিন পর সেতুটি বাস্তবায়ন হলে হরিপুরের সাথে কুষ্টিয়ার যোগাযোগ যেমন সহজ হবে তেমিন সকল সুবিধা নিশ্চিত হবে হরিপুর বাসীর। সম্প্রতি কুষ্টিয়া সফরে এসে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি মাহবুব-উল-আলম হানিফ অবহেলিত কুষ্টিয়ার জন্য সকল প্রকার উন্নয়নের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, আমি কথা দিয়ে মানুষকে ভোলাতে চায় না। আমি কাজ করে আমার কথার কথা প্রমাণ দিতে চায়। তিনি বলেন, আগামী ৫ বছরে কুষ্টিয়া বাংলাদেশের মধ্যে ডিজিটাল জেলা পরিণত হবে। কুষ্টিয়ায় আইটি ভিলেজসহ সকল প্রকার আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

কোন মন্তব্য নেই: