বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০০৯

মালয়েশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরেছেন মাহবুবুল আলম হানিফ



বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, বর্তমান সরকার প্রবাসী বাংলাদেশীদের কল্যাণে বাস্তব ও কল্যাণমুখী নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কঠোর প্ররিশ্রম করে উপার্জন করা প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি গত ২৭ ডিসেম্বর রবিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মালয়েশিয়া শাখার উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস-২০০৯ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন। এদিকে, মাহবুব-উল-আলম হানিফ ৫ দিনের এক সফরে গত শুক্রবার মালয়েশিয়া যান। গতকাল বুধবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে মালয়েশিয়ান এয়ার লাইন্সের এম এইচ-১৯৬ নম্বরে একটি ফ্লাইটে তিনি দেশে ফিরেছেন। এ সময় জিয়া আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে তাকে স্বাগত জানাতে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক গোলঅম রাব্বানী চিনু, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাঃ সম্পাদক খান মইনুল ইসলাম, মাহবুব-উল-আলম হানিফ’র একান্ত সহকারী কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ সাইফুল ইসলাম রানা, দৈনিক আন্দোলনের বাজার পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক চ্যানেল ওয়ানের স্টাফ রিপোর্টার মুন্সী তরিকুল ইসলাম, মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক রুহুল আজম, ভেড়ামারা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আমজাদ হোসেন রাজু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ খান, রিয়াজতুল্লা মালিথা ছাড়াও তাঁর নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।মাহবুব-উল-আলম হানিফ মহান বিজয় দিবস-২০০৯ এর আলোচনা সভায় আরো বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি বিরোধী দল বিএনপির মদদে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সম্মুখীন হতে যাতে না করা যায় সে জন্য তাদের রক্ষা করতে নানাভাবে দেশকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদের এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, এই দেশ বিরোধী শক্তিটি দেশের বাইরেও তৎপর রয়েছে। বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে তাদের মোকাবেলা করার ঘোষনা দিয়ে তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রধান বিরোধী দল বিএনপি দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। বিচ্ছিন্ন সব ঘটনাকে ইস্যুকে বানিয়ে দেশে একটি অরাজক পরিবেশ তৈরীই তাদের মূল উদ্দেশ্য। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মালয়েশিয়া শাখার আহবায়ক আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সমন্বয়কারী দৈনিক আন্দোলনের বাজার পত্রিকার সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক মনজুর এহসান চৌধুরী, ডাঃ মাহমুুদুল হাসান, মকবুল হোসেন মুকুল, আজিজুল হক, জসিম চৌধুরী, রাসেদ বাদল, গোলাম মহসিন, জোসেফ, মাসুদুর রহমান মাসুদ ও গৌতম রায় প্রমুখ। প্রবাসীদের উন্নয়নের জন্য বর্তমান সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে হানিফ বলেন, সরকার প্রবাসী বাংলাদেশীদের ব্যাপারে খুবই সংবেদনশীল। তাদের পাঠানো কষ্টার্জিত রেমিটেন্স দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। আওয়ামী লীগ সরকার প্রবাসীদের সাথে দেশের নিবিড় সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য নানা পদক্ষেপও ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে। ওই আলোচনা সভায় হানিফ বিভিন্ন তথ্য দিয়ে বলেন, ইতোমধ্যে সরকার প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের কষ্টার্জিত অর্থ সহজে দেশে প্রেরণের সুবিধার্থে দেশে মানি ট্রান্সফার সিস্টেমকে ডিজিটালাইজড করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়াও প্রবাসীদের ভিসা জটিলতা নিরসন, তাদের ভোটার করা, বিদেশে শ্রমিক নির্যাতন বন্ধের ব্যাপারে নানা উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে বলেও জনাব হানিফ উল্লেখ করেন। তিনি উপস্থিত বক্তাদের বক্তব্যের সূত্র ধরে বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ওয়াদানুযায়ী বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলার মাটিতে করবেই। সরকার ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার উচ্চ আদালতের মাধ্যমে আইনী লড়াইয়ে সম্পন্ন করেছে। যার রায় অচিরেই কার্যকর হবে। ঠিক এমনি করেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা, উদীচী হামলা, সাংবাদিকদের উপর মামলঅ-হামলাসহ সকল হত্যা-নির্যাতনের বিচার করবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক কুষ্টিয়ার কৃতি সন্তান মাহবুব-উল-আলম হানিফ তার সরকারের এক বছরের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের নানা দিক উল্লেখ করে বলেন, যদিও সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ঠ হচ্ছে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ৫ বছর ও জুলূবাজ বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২ বছরের জঞ্জাল ছাড়াতে। তবুও সরকার এই অল্প সময়ের মধ্যেই দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অসংখ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার সুফল ইতোমধ্যে দেশবাসী পেতে শুরু করেছে। কৃষিখাতে সর্বাধিক ভর্তূকি প্রদান করে কৃষি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটিয়েছে। আগামী দিনগুলোতে কৃষি ভর্তুকি আরো বাড়ানো হবে। যার ফলে উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশ শুধু একটি খাদ্য স্বয়ংস¤পূর্ণ দেশেই পরিণত হবে তা নয় উদ্বৃত্ত খাদ্য রপ্তানী করতে সমর্থ হবে। তিনি বলেন, সরকার দেশে বিনিয়োগের একটি সুনিবিড় পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছে। হানিফ প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে দেশে এখন বিনিয়োগের উজ্জল সম্ভাবনা ও সুযোগের কথাও উল্লেখ করে তিনি প্রবাসীদের দেশের বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগের আহবান জানান। ইতোমধ্যে বিশ্বের নানা দেশে বসবাসকারী প্রবাসীরা বিনিয়োগে উৎসাহী হয়েছে। তিনি প্রবাসী মালয়েশিয়ানদের দেশে বিনিয়োগেরও উদাত্ত আহবান জানান।

কোন মন্তব্য নেই: