সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় ফের সক্রিয় চাঁদাবাজরা, ৩ মাসে থানায় ২৫ জিডি

সাজ্জাদ রানা, কুষ্টিয়া
ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে কুষ্টিয়া এলাকার চাঁদাবাজরা। পলাতক বিভিন্ন বাহিনী প্রধানের নাম করে মোবাইল ফোনে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে সমাজের বিত্তবানদের কাছে। বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজনের নিকট প্রতিনিয়ত ফোনে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। চাঁদা না দেয়া হলে হত্যার হুমকিও দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে গত তিন মাসে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন থানায় ২৫টি জিডি হয়েছে। থানা ও বেশ কয়েকটি সুত্রে খবর নিয়ে জানাগেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও এক অধ্যাপকের কাছে চাঁদা চেয়ে ফোন করেছে চাঁদাবাজ চক্র। শহরের কোর্টপাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মাহাবুব আলম ফিরোজের অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ নভেম্বর ঢাকার মহাখালী এস এ পরিবহন অফিস থেকে চাঁদার টাকা নেয়ার সময় সর্বহারা পার্টির কথিত সদস্য ফরিদপুর জেলার সালতা পান্টি গ্রামের কোরবান আলীকে কুষ্টিয়া পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে তার স্বীকারোক্তিতে যশোর থেকে সর্বহারা পার্টিপ্রধান মহিউদ্দিন পরিচয়দানকারী মাদারীপুরের রাজৈর থানার লুন্ডি গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে আসাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। কুষ্টিয়া সদর থানা পুলিশ তাদের জেলহাজতে পাঠায়। বেশকিছু দিন চুপচাপ থাকার পর চাঁদাবাজ চক্র আবার মহিউদ্দিনের পরিচয়ে দিয়ে চাঁদাবাজি শুরু করেছে একটি চক্র। পুলিশের একাধিক সুত্র জানিয়েছে, কুষ্টিয়া চরমপন্থি অধ্যুষিত এলাকা। এখানে চাঁদাবাজির বিষয়টি নতুন নয়। সন্ত্রাসীরা পলাতক থেকেই ফোনে চাঁদা সংগ্রহ করছে। তাদের লোকজন চাঁদা নিয়ে যাচ্ছে। তবে একটি চক্র আছে যারা নিজেদেরকে চরমপন্থি নেতা পরিচয় দিয়ে লোকজনকে ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে আসছে। সম্প্রতি যে চাঁদবাজি শুরু হয়েছে সেটা এই চক্রের কাজ হতে পারে। গত বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর শাহজাহান আলীকে ০১৯১১৬১০৩০২ নাম্বার মোবাইল থেকে ফোন করে এক চাঁদাবাজ। ফোনে সে নিজেকে সর্বহারা পার্টির প্রধান মহিউদ্দিন পরিচয় দেয় এবং তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দাবি করা ওই ব্যক্তি প্রফেসর শাহাজাহানকে হত্যার হুমকি দিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর অরবিন্দ পোদ্দারের কাছেও চাঁদা চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। কুষ্টিয়ার অনেকের কাছে চাঁদাবাজরা ফোন করে চাঁদা দাবি করেছে।প্রসঙ্গত কুষ্টিয়ায় কমরেড সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টির কোনো অস্তিত্ব নেই। দীর্ঘদিন ধরে চরমপন্থীদের নামে ভুয়া চাঁদাবাজ চক্র চাঁদা দাবি করে আসছে। কুষ্টিয়ার এএসপি হেড কোয়ার্টার আলমগীর হোসেন জানান, মাদারীপুরের কিছু প্রতারক রয়েছে, যারা বিভিন্ন চরমপন্থী সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি করে। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এ চক্রের দুই সদস্যকে নভেম্বরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতারক চক্রের সব সদস্যকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

কোন মন্তব্য নেই: