মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০০৯

খোকসায় আলোচিত এসিড নিক্ষেপের ঘটনার মূল হোতা শিলার দুলাভাই আটক

কুষ্টিয়ার খোকসার আলোচিত এসিড নিক্ষেপের ঘটনার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। পুলিশ এ ঘটনার মূল হোতা স্ত্রী ও শালিকার উপর এসিড ছুড়ে মারা অলককে আটক করেছে। মঙ্গলবার ভোররাতে আটক অলক কি কারনে এসিড মারা হয় তার সবই জানিয়েছে পুলিশকে। সে পুলিশকে জানায়, এসিডের শিকার দু বোন শিমূল শিলার মুখমন্ডল ঝলসে দেয়ার কথা তাদের বাবাও ইদ্রিস আলীও জানতো। খোকসা থানা পুলিশ স ত্রে জানা গেছে, সহকারি পুলিশ সুপার সি এ হালিমের নেতৃত্বে গতকাল দুপুর ২ টার সময় অলককে নিয়ে তার সহযোগি অন্য অপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু হয়েছে। অলকের স্বীকারোক্তিতে ইতিমধ্যেই এ ঘটনার অনেক কিছুই খোলাসা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ অনেক তথ্য জানায়নি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশিদের মামলা দিয়ে শায়েস্তা করা ও ব্র্যাকের এসিড সারভাইভ ফাউন্ডেশন থেকে মোটা অংকের অনুদান পাবার উদ্দেশ্যে নাটকীয় এ এসিড হামলা হয়। এছাড়াও শিলা’র সাথে অলকের অনৈতিক সম্পর্কও কারন হিসেবে দেখছে পুলিশের একটি সূত্র। এসব বিষয় খতিয়ে দেখতে পুলিশ অলককে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করছে। একই সাথে তার সহযোগিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।ব্র্যাকের স্থানীয় সমিতির সদস্য শিলা-শিমুল ও তাদের বাবা। তারা জানতো কোন সদস্য এসিডে ঝলসে গেলে ব্র্যাক মোটা অংকের টাকা ক্ষতিপূরন দেয়। এ ক্ষতিপূরন পাবার আশায় ও অনেক টাকার জমি জমা নিয়ে বিরোধী প্রতিবেশিদের মামলা দিয়ে শায়েস্তা করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে এ এসিড দগ্ধের ঘটনা ঘটানো হয়। উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর রাতে কামালপুর গ্রামের সরকারি কর্মচারী ইদ্রিস আলী খা’র ঘরের জানালা দিয়ে বাশের কঞ্চির মাথায় বোতল বেধে শিলা ও শিমুলের মুখে ও শরীরে এসিড ঢেলে দেয়া হয়। তাদেরকে দ্রুত খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে ব্র্যাক এসিড সারভাইভরস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঢাকায় ফাউন্ডেশনের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনার একদিন পরই শিলার বিয়ে হবার দিন ধার্য্য ছিল। ২৯ অক্টোবর এসিড দগ্ধ শিলা শিমুলীর বাবা ইদ্রিস আলী খোকসা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৯। এরপর তিনি প্রতিবেশী ৪জনের নাম বলে তাদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের উপর চাপ দিতে থাকেন। পুলিশ তদন্তে নেমে তাদের জড়িত থাকার তেমন কোন প্রমান খুজে পায়না। ঘটনার দিন রাতে শিলার মোবাইলে আসা ফোন ও মেসেজের সূত্র ধরে পুলিশ আগাতে থাকে। অবশেষে পুলিশ নিশ্চিত হয়ে শিলার দুলাভাই শিমুলীর স্বামী অলককে আটক করে। এরপর সব পরিস্কার হয়ে যায়। এসিড হামলার ঘটনা শিলার বাবা আগেই জানতো বলে অলকের দাবি। সে প্রতিবেশিদের শায়েস্তা আর ব্র্যাক থেকে মোটা টাকা পাবার লোভে এসিড দিয়ে সামান্য ঝলসে দেবার ঘটনায় রাজি হয়। আর শিলার সাথে সম্পর্কের কারনে বিয়ের আগে এ ঘটনা ঘটায় তার দুলাভাই অলক। এসব কথা সে স্বীকার করেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

কোন মন্তব্য নেই: