মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় মোবাইল কোর্ট পুলিশের দুঃব্যবহারে ব্যবসায়ীদের থানা ঘেরাও


ডিলিং লাইসেন্স আছে কি না পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়ার দোকানে দোকানে মোবাইল কোর্টের অভিযান চলছিল গতকাল দুপুরে। এসময় জরিমানা দিতে না চাওয়া এক দোকানীকে কলার ধরে টেনে পুলিশের গাড়ীতে তুলতে গেলে ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এতে মোবাইল কোর্টের কেউ আহত না হলেও তারা ব্যবসায়ীদের ধাওয়া খেয়ে অভিযান বন্ধ করে দ্রুত কুষ্টিয়া থানায় অবস্থান নেয়। ব্যবসায়ীকে অপমানের প্রতিবাদে মুহুর্তের মধ্যে শহরের সমস্ত দোকান পাট বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা কুষ্টিয়া থানা ঘেরাও করে রাখে।
জানা গেছে, বেবী ফুড, কাপড়, লৌহজাত দ্রব্য, সিমেন্ট, সোনা, সুতা ও টিনজাতীয় দ্রব্য বিক্রির জন্য জেলা প্রশাসকের ডিলিং লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। এ লাইসেন্স আছে কিনা পরীক্ষার জন্য আজ দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাজেদুল ইসলামের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্টের অভিযান শুরু হয়। কয়েকটি দোকানে তারা এক হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করে।ই বার্তার নিকট ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কোথাও তারা ডিসিআর কেটে জরিমানার টাকা আদায় করছিলেন আবার কোথাও সাদা কাগজে লিখে রসিদ দিচ্ছিলেন। এনএস রোডের লালন শাহ বিপনী বিতানের ঝলক ক্লথ স্টোর এর মালিকের নিকট থেকে সাদা কাগজে লেখা স্লিপ দিয়ে ১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করতে গেলে বিপত্তি বাধে। ওই দোকানের মালিক ইকবাল হোসেন ডিসিআর ছাড়া টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মোবাইল কোর্টের সদস্য এএসআই মাসুদ তাকে কলার ধরে টানা হেচরা করে পুলিশের গাড়ীতে তুলতে যান। এসময় ব্যবসায়ীরা উত্তেজিত হয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এতে মোবাইল কোর্ট বন্ধ করে ওই ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে থানায় অবস্থান নেয় ম্যাজিষ্ট্রেটসহ সবাই। এরপর সকল ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান প্রতিষ্টান বন্ধ করে থানা ঘেরাও করে। পরে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থানায় এসে ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করেন। আলোচনা চলাকালে ব্যবাসায়ীরা থানা ঘেরাও করে রাখে। এসময় জেলা প্রশাসনের পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ফজলুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) গিয়াস উদ্দিন, এনডিসি জালাল সাইফুর রহমান, পুলিশের পক্ষে ছিলেন সহকারি পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন আর ব্যবসায়ীদের পক্ষে ছিলেন জেলা দোকান মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি পারভেজ মাজমাদার ও সাধারন সম্পাদক মকবুল হোসেন। আলোচনা শেষে সাদা রসিদে টাকা নেবার কারনে পেশকার আব্দুল মোতালিবকে সাময়িক বরখাস্ত করার ঘোষনা দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ফজলুর রহমান। ব্যবসায়ীকে টানা হেছড়া করার অভিযোগে এএসআই মাসুদকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করার ঘোষনা দেন এএসপি আলমগীর হোসেন। এরপর ব্যবসায়ীরা তাদের ঘেরাও কর্মসূচী ও ধর্মঘট তুলে নেন।
এ ব্যাপারে এনডিসি জালাল সাইফুর রহমান ই-বার্তাকে জানান, কয়েকদিন আগে দোকানীদের ডিলিং লাইসেন্স এর ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছিল। তারপরও তারা এ লাইসেন্স-এর ব্যাপারে আগ্রহ দেখান নি। কুষ্টিয়ায় হাজার হাজার দোকান থাকলেও মাত্র তিনশ জনের মতো এ লাইসেন্স আছে বলে তিনি জানান। সাদা কাগজে লিখে টাকা আদায়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, একজন দোকানী পাচশত টাকা দিয়ে বাকী টাকা পরে দেবার কথা বললে তাকে সাদা কাগজে লিখে দিয়ে টাকা নেয়া হয়। বলা হয় পরে অফিসে এসে বাকী ৫শত টাকা দিয়ে ডিসিআর নিয়ে যাবেন। তবে তিনি একজন ব্যবাসাযীর সাথে পুলিশের অসদাচরন করার কথা স্বীকার করেন।

কোন মন্তব্য নেই: