সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

আত্মীয়তার সূত্রে হানিফকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের পদ দিয়েছেন শেখ হাসিনা-আব্দুল জলিল

লন্ডনে বাংলা টিভিকে দেয়া আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুল জলিলের সাক্ষাতকার নিয়ে দলের ভেতরে ও বাইরে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও দলের নীতি নির্ধারনের বিরুদ্ধে ও সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের সাথে আতাত করে নির্বচনে জয়লাভের কথা বলে রীতিমতো বোমা ফাটিয়েছেন জলিল। ওই সাক্ষাতকারে জলিল কুষ্টিয়ার কৃতি সন্তান মাহবুব উল আলম হানিফকে জড়িয়েও নানা কথা বলেছেন। মেধাবী এ রাজনীতিকের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জলিল। এ নিয়ে কুষ্টিয়ার আওয়ামী নেতা-কর্মি ও সমর্থকরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জলিল সাক্ষাতকারে বলেছেন, আমাদেরকে রাজনীতি থেকে দুরে সরিয়ে দিয়ে উনার (হাসিনা) নিজস্ব লোক প্রেসিডিযাম ও ওয়ার্কিং কমিটিতে নিয়ে এসে আমাদের সাথে অবিচার করা হয়েছে এবং আইওয়াশ করা হযেছে। উপদেষ্ঠা পরিষদের কোন ফাংশন নেই, ৬মাসে একটা মিটিং হতে পারে, সেখানে দিয়ে আমাদের মতো একটিভিষ্ট লোককে ইনেক্টিভ করে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করার চক্রান্ত করা হয়েছে। এটা খুব খারাপ। আমাদের এই পদে আসতে লেগেছে ৫০ বছর। ৭৯ তে আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির মেম্বার হই। ৮১ তে হই আন্তর্জাতিক সম্পাদক, ৮২ তে হই যুগ্ম সম্পাদক, তারপর আবার যুগ্ম সম্পাদক, তৃতীয়বার আবার যুগ্ম সম্পাদক হই। তারপর আমাকে প্রেসিডিয়াম মেম্বার করা হয়। তারপর আরেকবার প্রেসিডিয়াম মেম্বার করে। তারপর আমাকে সেক্রেটারী করে। বর্তমান কমিটিতে যারা আসছে তারা অভিজ্ঞ নন। অভিজ্ঞতা খুবই দরকার উল্লেখ করে আব্দুল জলিল ওই সাক্ষাতকারে মাহবুব উল আলম সম্পর্কে বলেন, যেমন ধরেন আমাদের হানিফ জয়েন্ট সেক্রেটারী, তার অভিজ্ঞতা টা কোথায়? সে একজন থানার নেতা। থানা থেকে এসে পার্টির সেকেন্ডে পজিশন পেয়েছেন। সেক্রেটারীর পরেই তো সে। তার অভিজ্ঞতা টা কোথায়? সে অরগানাইজেশন সম্পর্কে কি জানে? অরগানাইজেশন সম্পর্কে কি বোঝে? আত্মীয়তার সূত্র ছাড়া তাকে ওই পদে বসানোর কোন কারণ তো দেখিনা। নতুন এ কমিটি কোন কাজই শুরু করেনি এখনো। উল্লখ্যে, জরুরি অবস্থা জাররি পর ২০০৭ সালরে ২৮ মে জললিকে গ্রফেতার করা হয়। ২০০৮ সালরে ২ র্মাচ প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার পর চকিৎসার জন্য সিংগাপুর যান তিনি। ছয় মাস পর ৩১ আগস্ট দেশে ফেরেনে। এরপর অবৈধভাবে সম্পত্তি অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনরে অভিযোগে র্দুনীতি দমন কমশিনরে করা মামলায় ২০ অক্টোবর হাইকোর্ট থেকে জলিলকে জামিন দেয়া হয়। জামিন পাওয়ার পর আদালত চত্ত্বরে বসেই সাধারণ সম্পাদকরে পদে দায়ত্বি পালনের ঘোষণা দিলে এ নিয়ে দলের মধ্যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এর কারণ, জলিল গ্রেফতার অবস্থায় নিজের স্বাক্ষর করা একটি চিঠিতে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েচিলেন। কারামুক্তরি পর আব্দুল জলিল চিঠির সব বক্তব্য অস্বীকার করনে। এরপর থেকে তাকে দলরে পদে রাখা হলেও দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি কাউন্সিলের কোনও কাজে তাকে যুক্ত করা হয়ন। ওই ক্ষোভ থেকেই গত জুলাইয়ে দলের জাতীয় কাউন্সলিরে মাত্র তিনদিন আগে পদত্যাগ করেন আব্দুল জলিল। তিনি র্বতমানে সপরিবারে ব্যতক্তিগত সফরে লন্ডন রয়েছেন।
সরকার ও দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে বারবার বিরূপ মন্তব্য করায় এবার বহিষ্কার হতে চলছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সাংসদ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল। দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক এ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আগামী ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে প্রথমে বিষয়টি তোলা হবে। এরপর দলের প্রেসিডিয়াম সভা, প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিষদের সভা করে সর্বসম্মতিক্রমে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বা সুপারিশ করা হবে। চূড়ান্ত দায়িত্ব দলীয় সভানেত্রীর ওপরও দেয়া হতে পারে। আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব খবর জানা গেছে। সূত্রটি আরো জানান, যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে আব্দুল জলিল মিডিয়ায় যেসব বক্তব্য দিয়েছেন সেটা সত্য হলে তাকে দল থেকে বাদ দেয়া ছাড়া আর বিকল্প কিছু থাকবে না। কারণ তার বক্তব্য দলের শৃঙ্খলাবিরোধী। তার বক্তব্য দলের কার্যনির্বাহী কমিটির কেউই গ্রহণ করেননি। সবাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

কোন মন্তব্য নেই: