রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় চিনি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ইচ্ছামতো বাড়াচ্ছে দাম






কুষ্টিয়ার একটি শক্তিশালী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ইচ্ছামতো বাড়িয়ে দিচ্ছে চিনির দাম। গতকাল রোববার চিনি খুচরা বিক্রি হয়েছে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে। সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে এরা ইচ্ছামাফিক কেনা বেচা করছে এ রকম অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাজার মনিটরিং এর জেলা কমিটি গতকাল দুপুরে বের হয় বাজার মনিটরিং-এ। অতিরিক্ত জেলা ম্যজিষ্ট্রেট ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মল্লিক সাঈদ মাহমুদ, ম্যাজিষ্ট্রেট এহতেশামুল হক, বিপুল পরিমান পুলিশ ও র‌্যাবের সমন্বয়ে ওই মনিটরিং দল সিন্ডিকেটের নেতা চিত্তরঞ্জন পাল, সুনীল সুরেকা ও সুবল চন্দ্রসাহার গুদামসহ শহরের বেশ কয়েকটি চিনির গুদাম পরিদর্শন করেন। তারা চিনি কেনা বেচায় নানা অনিয়মের সন্ধান পান। খবর ই-বার্তার। কোনরূপ রেজিষ্টার মেইনটেইন হয়না এসব গুদামে। যাদের কাছে বিক্রি করা হয় ভাউচারে তাদের নাম ঠিকানা ঠিকমতো লেখা হয়না। বিক্রয়কেন্দ্রে ক্রয় বিক্রয়ের তালিকা টানানো থাকলেও তার ঘরগুলো ফাকা পাওয়া যায়। আবার অনেক স্থানে তালিকা থাকলে সে মোতাবেক বিক্রি হয়না। গুদামে চিনি মজুদ রাখা হয় ইচ্ছামতো। এসব গুদামে অন্তত ৫হাজার বস্তা চিনি মজুদ আছে বলে মনিটিরিং কমিটি নিশ্চিত হয়েছে। মজুদের যে তালিকা টানানো হয়েছে তার সাথে গুদামের মিল নেই। চিনির আমদানী বা ক্রয় স্লিপে দর উল্লেখ না থাকায় ব্যবাসায়ীরা কেজিপ্রতি কত টাকা লাভ করছে তা নিরুপন করতে পারেনি মনিটরিং দল জেলা চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি চিত্তরঞ্জন পাল এর গুদামে পরিদর্শনে গেলে ব্যবসায়ীরা মনিটরিং দলের নেতৃবৃন্দর উপর চড়াও হয়। এসময় কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ই্ন্ডাষ্ট্রির সভাপতি আশরাফ উদ্দিন নজু ও অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতা এবং পুলিশ র‌্যাবের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে জেলা চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি চিত্তরঞ্জন পাল হুমকি দেন, বেশি কড়াকড়ি আরোপ করা হলে ব্যবাসায়ীরা চিনি কেনা-বেচা বন্ধ করে দেবে। ই-বার্তার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, সিন্ডিকেটের নেতারা ক্রয় স্লিপে মূল্য উল্লেখ না করে যোগসাজসের মাধ্যমে ৪২-৪৪টাকা দরে চিনি কিনে এনে ইচ্ছামতো ৫৬-৫৮টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। এছাড়াও কুষ্টিয়া সুগার মিলের ডিলার এখানকার অনেক প্রভাবশালী ব্যবাসায়ী ৩৩টাকা কেজি দরে চিনি ক্রয় করে বিপুল পরিমান লাভে মিল গেটেই বিক্রি করে দিচ্ছেন। আবার অনেকেই ডিও (ক্রয় অর্ডার) বিক্রি করে দিচ্ছেন।
এদিকে গতকাল বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাজার মনিটরিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয় পরবর্তিতে ঠিকমতো রেজিষ্টার মেইনটেইন না করলে বা কেজিপ্রতি ১ টাকার বেশি লাভ করলে সেইসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এছাড়াও দর যাচাইএর জন্য মনিটরিং কমিটির একটি দল আজ খুলনার নওয়াপাড়ায় পরিদর্শনে যাবেন বলেও সিদ্ধান্ত হয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যজিষ্ট্রেট ফজলুর রহমান ই-বার্তাকে বলেন, কয়েকদিন আগে এসব ব্যবাসায়ীদের চিনি ক্রয় বিক্রয়ের ব্যাপারে সরকারি নীতিমালা মেনে চলার জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়। কিন্তু তারা ইচ্ছামতো ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় ঈদের সামনে করে চিনির বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই: