বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন, ২০০৯

কুমারখালিতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বেত্রাঘাতে ছাত্রী আহত


কুমারখালিতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বেত্রাঘাতে ছাত্রী আহত
বাবলু জোয়ারদার :
গত ১৫ জুন সোমবার উপজেলার দূর্গাপুর দাখিল মাদ্রার শিক্ষক আফতাব উদ্দিন ক্লাসে পড়া না পাড়ার অপরাধে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক মেধাবী ছাত্রীকে বেত্রাঘাতে আহত করেছে মাদ্রাসা শিক্ষক। আহত ছাত্রী দুর্গাপুর গ্রামের আলতাফ হোসেনের মেয়ে আল্পনা খাতুন (১১)। ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তার স্থান দ্বিতীয়। সে উক্ত মাদ্রাসায় প্রথম শেণী হতে অধ্যায়ন করে আসছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার কুমারখালির দূর্গাপুর দাখিল মাদ্রাসায়। আলপনার বাবার অভিযোগে জানাযায়, গত বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা কতৃপক্ষের নিকট হতে আল্পনার জন্য তার বাবা মৌখিকভাবে শনি ও রবিবারের ছুটি মঞ্জুর করায়। ছুটি শেষে আল্পনা সোমবার মাদ্রাসায় গেলে ক্লাসে ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক আফতাব উদ্দিন পড়া না পাড়ার অপরাধে আল্পনাকে বেত দিয়ে বেদম মারপিট করে। এতে আল্পনার শরীরের বিভিন্নস্থান আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এঘটনার পর ঐদিন মাদ্রাসায় টিফিনে সকল শিক্ষার্থীরা বাড়িতে খেতে গেলেও আল্পনাকে যেতে দেয়া হয়না। এব্যাপারে আল্পনা জানায়, ছুটিতে থাকার কারনে সোমবার ক্লাসে কোন পড়া ছিলো তা আমি জানতাম না। সেকারনে আমি ইংরেজি পড়া মুখস্ত করতে পারি নাই। ক্লাসে আফতাব সারকে আমি বিষয়টি অবগত করার পরও আমাকে মারপিট করে। এমনটি ঐদিন দুপুরে আমাকে বাড়িতে গিয়ে সহপাঠিদের মতো খেয়ে আসার সুযোগ দেয়নি সিরাজ স্যার। আমি নিয়মিত ক্লাসে পড়া মুখস্ত করে আসি। সেকারনে আমার ক্লাসে রোল নম্বর-২। ইংরেজি শিক্ষক আফতাব উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, পড়া মুখস্ত না করলে আমরাতো শিক্ষার্থীদের মারবোই। না মারলে তারা অবাধ্য হয়ে যাবে। পড়া না পাড়ার অপরাধে শিক্ষার্থীদের শারিরীক নির্যাতন অথবা বেত্রাঘাত করার নিয়ম আছে কি’না জানতে চাইলে তিনি নিরব থাকেন। এব্যাপারে মাদ্রাসা সুপার আসলাম উদ্দিনকে প্রশ্ন করা হলে তাকে থামিয়ে দিয়ে মাদ্রাসার সহকারি সুপার মসলেম উদ্দিন দাপট দেখিয়ে বলেন, আমরা আমাদের নিয়মে মাদ্রাসা পরিচালনা করে থাকি। শিক্ষার্থীদের বাধ্য রাখার জন্য অনেক কিছুই করতে হয়। আলপনার বাবা আলতাফ হোসেন জানান, আমি মাদ্রাসা সুপারকে বিষটি জানালেও তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। এমনকি আমি অভিযোগ দায়ের করায় মাদ্রাসা শিক্ষকরা আমার সঙ্গে পর্যন্ত খারাপ আচরণ করেছেন। এঘটনা সম্পর্কে কুমারখালি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এজাজ কায়সার বলেন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীর গায়ে আঘাত অথবা বেত্রাঘাত করতে পারবে না। এধরনের ঘটনা কোনো প্রতিষ্ঠানে ঘটলে যথাযথ আইনে বিচারের বিধান রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দূর্গাপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অবিভাবক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই: