বুধবার, ১৭ জুন, ২০০৯

কুমারখালিতে বাবু হত্যা,আতংকিত সাইড ঠিকাদাররা

বাবলু জোয়ারদার, কুমারখালি :
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার হাফিজুর রহমান বাবু হত্যাকান্ডের পর কুমারখালিতে সর্বত্র দেখা দিয়েছে মোবাইল আতংক। হত্যাকান্ডের পর দূবৃত্তরা নিহত বাবুর হাতে একটি চিরকুট রেখে যায়। চিরকুটে লেখা ছিল ওবায়দুল, কুষ্টিয়া ও একটি নাম্বার। ঐ মোবাইল নম্বরে হাসিমপুর এলাকার বেশ কয়েকজন আলাপ করলে অপর প্রান্ত হতে এ হত্যাকান্ডের দায়ভার স্বীকার করে মোবাইল রিসিভকারি বলেন, ঠিকাদার চাঁদা না দেয়ায় ম্যানেজারকে হত্যা করেছি। কেনো ঠিকাদারের ওপর রাগের খেসারত ম্যানেজারকে বহন করতে হলো এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ম্যানেজার একজন সাধারন মানুষ, তাকে হত্যা করা ভূল হয়েছে। তবে আতংক সৃষ্টি এবং চাঁদা আদায়ের স্বার্থে দু’একটি খুন করতে হয়। এ বিষয়ে কুমারখালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ খালেদ হোসেন বলেন, ঐ মোবাইল নম্বরে আমি ফোন করেছিলাম, তখন বন্ধ ছিলো। তিনি বলেন, এ হত্যাকান্ডের বিষয়ে থানা পুলিশ তদন্ত করছে। আমি আশাবাদি অল্প সময়ের মধ্যে হত্যাকারিরা গ্রেফতার হবে। এদিকে বাবু হত্যাকান্ডের পর হাসিমপুর, দয়রামপুর ও মির্জাপুর এলাকার বেশ কয়েকজন গা ঢাকা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাবু হত্যা মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই মতলেবুর রহমান বলেন, মামলার বাদীর আরজি মোতাবেক সন্দেহভাজন একজন আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতর নাম বাবুল হোসেন প্রামানিক। তিনি ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হাসিমপুর পদ্মা নদীর গ্রোয়েন নির্মান কজের নৈশ প্রহরী। এলাকাবাসি সুত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত নৈশ প্রহরী বাবুল হোসেন প্রামানিক একজন হত দরিদ্র সাধারন মানুষ। তার বিরুদ্ধে এলাকায় তেমন কোনো অপকর্মের অপবাদ নেই। হতদরিদ্রতার কারনে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে নৈশপ্রহরীর কাজ নেয়। এদিকে নিহত হাফিজুর রহমান বাবুর চাচা মোঃ আব্দুল মজিদ মোল¬া বাদী হয়ে কুমারখালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলা নম্বর-১৫, তারিখ-১২-০৬-২০০৯। ধারা ৩০২/৩৪ দঃবিঃ। এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার বাবু হত্যাকান্ডের পর ব্যপক হতাশার মধ্যে পড়েছে ঐ কাজের সাইড ঠিকাদাররা। সাইড ঠিকাদারদের মোটা অংকের বিল পড়ে আছে এস এস ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ফার্মের নিকট। চাঁদাবাজদের ভয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আদৌ অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে পারবে কি’না এ ধরনের প্রশ্ন বিদ্যমান। অপরদিকে নদীতে ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্রুত বাঁধের কাজ সম্পন্ন করতে না পারলে এ পর্যন্ত যে পরিমান কাজ হয়েছে তা সবই জলে ধুয়ে যাবে। উল্লেখ্য ১২ জুন সকালে কুমারখালির জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হাসিমপুর চর হতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস এস ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ফার্মের ম্যানেজার হাফিজুর রহমান বাবুর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যায়ে বিগত ছয় মাস ধরে পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে কুমারখালির হাসিমপুর গ্রোয়েন বাঁধ নির্মান কাজ করছে ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শুক্রবার সকালে পথচারিরা ঘটনাস্থলে তার গুলিবিদ্ধ লাশ দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। নিহত হাফিজুর রহমান বাবু পাবনা জেলার বেড়া পৌরসভা এলাকার সানিলা গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।

কোন মন্তব্য নেই: