শনিবার, ১৩ জুন, ২০০৯

কুষ্টিয়া রেনউইকে ৮৬ টাকা দরে ৪৫ টাকার কয়লা সরবরাহ

কুষ্টিয়া রেনউইকে ৮৬ টাকা দরে ৪৫ টাকার কয়লা সরবরাহ
নিুমানের ৩০ টন কয়লা কিনে বিপাকে পড়েছে কুষ্টিয়া রেনউইক এন্ড যজ্ঞেশ্বর কোং। কার্যাদেশ অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রতি কেজি কয়লার মূল্য বাবদ ৮৬ টাকা বিল তুলে নিলেও সরবরাহ করেছে ৪৫ টাকা দরের নিুমানের কয়লা। প্রতি কেজি কয়লাতেই অতিরিক্ত গুনতে হয়েছে ৪৩ টাকা। আর সব মিলিয়ে সরকারের লোকসান গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। আর এ জালিয়াতির সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা ও সিবিএ নেতা। সারা দেশের চিনি কলের যন্ত্রাংশ মেরামত ও তৈরির একমাত্র বড় এ প্রতিষ্ঠানটির অবস্থা এমনিতেই নাজুক। তার উপর নিম্নমানের কয়লা নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে ওর্য়াকশপের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। কোন ভাবেই কয়লা জ্বালানো সম্ভব হচ্ছে না বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করেছে। যার কারনে যন্ত্রাংশ মেরামত ও তৈরির কাজ ব্যাহত হচ্ছে। নিম্নমানের এ কয়লা দিয়ে কোন ভাবেই কাজ চালানো সম্ভব নয় বলে ওয়ার্কশপে কর্মরত শ্রমিকরা জানিয়েছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও এখন আর কয়লা ফেরত নিতে চাচ্ছেন না। ঠিকাদার প্রভাবশালী সিবিএ নেতার ভাই হওয়ায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
খোঁজনিয়ে জানা গেছে, গত মাসে কুষ্টিয়া রেনউইক এন্ড যজ্ঞেশ্বর কোং কয়লা কেনার জন্য প্রকাশ্যে দরপত্র আহবান করে। প্রভাব খাটিয়ে কুষ্টিয়া রেনউইকের প্রভাবশালী সিবিএ নেতা তৌহিদুল ইসলাম তার ভাই বাবুকে কাজটি পাইয়ে দেন। কার্যাদেশ অনুযায়ী এ মাসের প্রথম সপ্তাহে কয়েক চালানে কয়লা সরবরাহ করেন বাবু। প্রথম কিস্তিতে আনা কয়লার মান কিছূটা ভাল হলেও পরের চালান গুলোতে নিয়ে আসা কয়লা একেবারেই নিম্নমানের। এ কয়লা দিয়ে কোন কাজই করা সম্ভব নয় বলে জানা গেছে। দরপত্রের সিডিউল অনুযায়ী, ৮৬ টাকা মুল্যের সবচেয়ে ভাল কয়লা সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। ঠিকাদার বাবু খনি থেকে এ কয়লা না কিনে বাইরের কয়েকটি ইটভাটা মালিকের মাধ্যমে ৪৫ টাকা দরের সবচেয়ে নিুমানের কয়লা সরবরাহ করেছে কুষ্টিয়া রেনউইকে। কয়লা সরবরাহের পর যাবতীয় বিলও তুলে নিয়েছে ঠিকাদার বাবু। এদিকে কয়লা নিয়ে বিপাকে পড়েছে রেনউইক। এ কয়লায় ঠিক মত আগুন না ধরায় বড় বড় লোহার পাত ঠিক মত পুড়ানো যাচ্ছে না। ফলে চরম ভাবে ব্যহত হচ্ছে ওয়ার্কশপের কাজ।
বাবুর ভাই তৌহিদুল রেনউইকের প্রভাবশালী সিবিএ নেতা হওয়ার কারনে কেউ মূখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এমনকি এখানকার এমডি হারেজ উদ্দিন পর্যন্ত তার ভয়ে কাবু। কয়লার পরিমান নিয়েও লুকোচুরি খেলছে রেনউইকের কর্মকর্তারা। প্রতিষ্ঠানটির এমডি হারেজ উদ্দিন কয়লার পরিমান সাড়ে ১৬ টন দাবী করলেও স্টোর কিপার জানিয়েছেন কেনা কয়লার পরিমান ৩০ টন। হারেজ উদ্দিন জানান, কয়লা নিয়ে কিছূ সমস্যা হয়েছে। পুরো বিষয় জানতে হলে আমার অফিসে আসতে হবে। ফোনে এতকিছূ বলা যাবে না। সিবিএ নেতা তৌহিদুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, কয়লার মানের ব্যাপারে আমি কিছূ বলতে পারব না। এ ব্যাপারে ডিজিএম (প্রশাসন) আবুল রফিকের সাথে কথা বললে উনি আপনাকে ভাল বুঝিয়ে দিতে পারবে। ভাইয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের তালিকাভূক্ত কোন ঠিকাদার নেই। তাই যে কেউ ওপেন টেন্ডারে অংশ নিতে পারে। এক্ষেত্রে আমার ভাই যদি কাজ পেয়ে থাকে তাহলে অপরাধের কিছূ দেখছি না। কোম্পানীর ডিজিএম (প্রশাসন) আবুল রফিকের সাথে কথা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোন মস্তব্য করতে রাজী হননি।

কোন মন্তব্য নেই: