বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০০৯

জীবন রক্ষা করতে যেসব ঔষধ খাচ্ছি আমরা



স্টাফ রিপোর্টার: জীবন রক্ষার জন্য দোকান থেকে ঔষধ কিনে সেবন করে নিশ্চিত থাকি আমরা। কিন্ত অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় এসব ঔষধে কোন কাজই হচ্ছেনা। এর কারন হলো বিভিন্ন কোম্পানীর নাম দিয়ে জীবন ধ্বংসকারি নকল ঔষধ তৈরী করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। কুষ্টিয়া শহরতলীর কুমারগাড়ায় এমনি এক নকল ঔষধ তৈরীর কারখানা আবিষ্কার করেছে র‌্যাব।
গত মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়ায় র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)- ১২ এর একটি টিম অভিযান চালিয়ে এ কারখানাটির সন্ধ্যান পায়। ঢাকায় কর্মরত সহকারী জজ ইসমাইল হোসেনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে একবছর আগে পাবনা পলিটেকনিক্যাল ইনষ্ট্রিটিউটের মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষক প্রকৌশলী আকসার আলী গোপনে এ নকল ঔষধের কারখানা বানায়। স্থানীয় লোকজনকে ওই বাড়িতে কখনই ঢুকতে দেয়া হতো না। গতরাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব সদস্যরা ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সেভ, মেডিকো ও কোয়ালিটি ফার্মাসিউটিক্যালস-এর নামে তৈরী প্রায় ১০ লাখ পিচ এ্যামোক্সিসিলিন ক্যাপ্সুল, জন্ম নিয়ন্ত্রন সুখী ট্যাবলেট, থাইল্যান্ডের তৈরী পিরিয়াক্টিন নামের ক্ষুধামন্দার ট্যাবলেট, নকল ঔষধ তৈরীর পাউডার, ৩টি ম্যাশিন ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ নকল কারখানার মালিককে ধরতে না পারলেও এসময় গ্রেফতার করা হয়েছে তার ছেলে আইয়ুব আলী, শ্রমিক কবীর হোসেন ও মিরাজকে। র‌্যাব জানায়, মঙ্গলবার সন্ধায় ওই কারখানা থেকে ভ্যানযোগে যখন নকল ঔষধ অন্যত্র বাজারজাত করার জন্য পাঠানো হচ্ছিল তখন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে টহলরত র‌্যাব সদস্যদের চোখে পড়ে যায়। এ সূত্র ধরেই র‌্যাবের ডিএডি রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ঔষধ তৈরীর গোপন কারখানায় অভিযান শুরু করে রাত সাড়ে ৯টায়।
অভিযানে নেতৃত্ব দানকারি ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রহমান বলেন, অনেক সময়ই ঔষধে কোন কাজ করেনা। এর কারন হলো এ ধরনের নকল কারখানা। এসব ঔষধ মানবস্বাস্থ্য বিরোধী। তিনি বলেন, কোন অনুমোদন ছাড়াই আটা আর বরিক পাউডার মিশিয়ে প্রতিদিন অন্তত ২০ হাজার পিস নকল ঔষধ তৈরী করা হচ্ছিল এখানে। এসব নকল ঔষুধ ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে সারা দেশে বিক্রি করা হয় বলে গ্রেফতাকৃতরা স্বীকার করেছে।
এ কারখানা আবিষ্কারের খবর শুনে জজের বাড়িতে রাতেই হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। এখান থেকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমান নকল ঔষধ বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছিল এ কথা জানতে পেরে মানুষ যেমন শংকিত তেমনি প্রতিবাদও করেছে। অবিলম্বে কারখানা মালিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা। এ কারখানা আবিষ্কারে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসি জীবন বিধ্বংসী এ নকল ঔষধ প্রস্তুতকারীর শাস্তি দাবি করেছে।

কোন মন্তব্য নেই: