শনিবার, ১১ জুলাই, ২০০৯

কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের উপর গ্রামবাসীর হামলা, র‌্যাবের পাল্টা লাঠিচার্জে আহত অর্ধশত

অপহরনের সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে এসে এলাকাবাসীর হামলার শিকার হয়েছে র‌্যাব-৬ এর সদস্যরা। হামলার ঘটনা আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন র‌্যাব সদস্য। পরে র‌্যাবের পাল্টা লাঠিচার্জে আহত হয়েছে অর্ধশত গ্রামবাসী। শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। অপহরনের সাথে জড়িত সন্দেহে র‌্যাব সদস্যরা মহিলাসহ ৩ জনকে আটক করে নিয়ে গেছে।
র‌্যাব-৬ এর কমান্ডিং অফিসার মেজর তারিক জানান, কুমারখালী উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের কয়েক যুবক সম্প্রতি ঝিনাইদহে ঘটে যাওয়া কয়েকটি অপহরনের সাথে জড়িত বলে জানতে পারি। তথ্য সুত্রের ভিত্তিতে র‌্যাবের সাদা পোষাকধারী একটি দল শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে কাঞ্চনপুর গ্রামে যায়। আমাদের সদস্যরা সাদা পোষাকে থাকায় গ্রামবাসীরা সন্দেহ করে ঘীরে ধরে। পরিচয় দেয়ার পরও তারা র‌্যাব সদস্যদের গালিগালাজ করতে থাকে।
কাঞ্চনপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, সিভিল ড্রেসে আসায় র‌্যাব সদস্যদের অপহরনকারী চক্রের সদস্য মনে করে গ্রামবাসীরা ঘীরে ফেলে। র‌্যাব সদস্যরা অপহরনের সাথে জড়িত সন্দেহে, গ্রেফতার করে এলাকার তহশিলদার কামরুজ্জামানের ছেলে নাজিমকে। নাজিমের স্বীকারোক্তিতে পরে একই গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে বিল্লালের স্ত্রী সাইদাকে। পরে সোহাগ নামের আরেক জনকে গ্রেফতার করে তারা। তাদের নিয়ে র‌্যাব চলে যেতে চেষ্টা করলে গ্রামবাসী সন্ত্রাসী ভেবে প্রতিরোধ গড়ে তোলে । মসজিদের মাইক থেকে গ্রামবাসীদের ডাক দেয়া হয়। মাইকে বলা হয়,সন্ত্রাসীরা গ্রাম থেকে দু’জনকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিরোধের মুখে র‌্যাব সদস্যরা আইডি কার্ড দেখালেও গ্রাম্য অস্ত্র নিয়ে সাধারণ জনতা র‌্যাবের উপর আক্রমণ করে। এ সময় গ্রামবাসীর ছোড়া ইটপাটকেলে আহত হয় দুই র‌্যাব সদস্য। খবর পেয়ে কুমারখালী থানা পুলিশের একটি দল সেখানে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে র‌্যাবের মেজর তারিক জানান, গ্রামবাসীরা আমাদের উপর চড়াও হলেও কোন সদস্য আহত হয়নি। এদিকে, খবর পেয়ে মুহুর্তেই ঝিনাইদহ থেকে অতিরিক্ত র‌্যাব এসে গ্রামবাসীর উপর অচমকা লাঠিচার্জ শুরু করে। ঘটনাস্থল কাঞ্চনপুৃর গাম ছাড়াও কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিনারায়নপুর বাজারের লোকজনের উপরও লাঠিচার্জ করে তারা। এ সময় র‌্যাবের লাঠিচার্জে স্থাণীয় ক্যাম্প পুলিশের কয়েকজন সদস্য, মসজিদের মুয়াজ্জিন, পশু চিকিৎসক, ফোন ব্যবসায়ীসহ আহত হয় অর্ধশত গ্রামবাসী। আহতদের মধ্যে আশরাফুল, দুলাল হোসেন, জিল্লুর রহমান, হান্নান, পরজ আলী, হবি শেখ, আনিচুর ও আবদুল্লাহকে স্থাণীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
রাতে র‌্যাবের অভিযানের ভয়ে পুরো এলাকা পুরুষ শুন্য হয়ে পড়ে। গতকাল শনিবার দিনের বেলাতেও একই অবস্থা বিরাজ করছিল এলাকায়। কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ খালেদ হোসেন জানান, র‌্যাব-৬ এর সদস্যদের সাথে কাঞ্চনপুর গ্রামের লোকজনের সামান্য সংঘর্ষ হয়েছে। সিভিল পোষাক থাকায় ভুল বোঝাবুঝির কারনে এমনটা হয়েছে। কয়েকজন অপহরনকারীকে গ্রেফতার করতে এসে এ ঘটেছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত।

কোন মন্তব্য নেই: