সোমবার, ২৭ জুলাই, ২০০৯

কয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাচ্চুর লাশ নিয়ে কুষ্টিয়া শহরে মিছিল


http://kushtianews.blogspot.com/
কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা জামিল হোসেন বাচ্চুর মৃতদেহ নিয়ে কুষ্টিয়া শহরে মিছিল করেছে তার এলাকার মানুষ। গতকাল রোববার সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে বচ্চুর লাশ নিয়ে মিছিল করতে করতে এলাকায় নিয়ে যায় জনতা। মিছিলে হত্যাকারিদের ফাসি দাবি করে শ্লোগান দেয়া হয়। বিকেল ৩টায় কয়া ইউনিয়নের বাড়াদী গোরস্থানে জানাজা শেষে বাচ্চুতে ওই গোরস্থানে দাফন করা হয়। এতে স্থানীয় এমপি সুলতানা তরুন, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রউফসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও হাজার হাজার এলাকাবাসী অংশ নেন।
কুমারখালী তানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, জানাযা হতে দেরী হওয়ায় এখনো কেউ মামরা দেয়নি। মামলা দায়েরের পর পুলিশ এ হত্যাকান্ডের ক্লু উদ্ধার করতে মাঠে নামবে। ইতোমধ্যেই কয়া ঘাট দখল, দলীয় কোন্দল ও সামনের ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার যে কোন একটি প্রাথমিক কারণ হিসেবে ধরছেন তারা। হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে সাহেব মিয়া নামের একজনকে পুলিশ আটক করেছে।
জামিল হোসেনের ভাই জিয়াউল ইসলাম স্বপন জানান, সামনে ইউপি নির্বাচন। জনপ্রিয় বাচ্চুকে না সরাতে পারলে কেউই নির্বাচনে সুবিধা করতে পারবে না। তাই প্রতিপক্ষ আজবাহার, ইব্রাহিম ও ডাবলু আমার ভাইকে খুন করেছে। স্থানীয়রা জানান, কয়া ঘাট নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে জামিল হোসেন বাচ্চুর তার প্রতিপক্ষর সাথে বিরোধ চলে আসছে।
সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন শেখ বলেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যাওয়ার মত কোন অবস্থা নেই। টিআর কাবিখার কাজ করতেও সন্ত্রাসীদের চাঁদা দেয়া লাগে। মজমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বশিরুল আলম চাঁদকে হত্যার হুমকি দিয়ে সন্ত্রাসীরা শহরে লিফলেট ছাড়ে কিছুদিন আগে। এখনও তাকে মোবাইলে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে বশিরুল আলম চাঁদ জানান, কুষ্টিয়ার মাটি চেয়ারম্যানদের জন্য নিরাপদ নয়। বিভিন্ন সময় মোবাইলে হুমকি দেয় সন্ত্রাসীরা। এ অবস্থায় প্রশাসনকে আরও সতর্ক হওয়া দরকার।
শিলাইদহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন তারেক বলেন, মানুষের কোন নিরাপত্তা নেই। দিনে দুপুরে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে লোকজনকে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আর কেউ চেয়ারম্যান হতে চাইবে না। শংঙ্কা প্রকাশ করে বারখাদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শুধূ চেয়ারম্যানই নয় কোন মানুষই নিরাপদ নয়। তবে জনপ্রতিনিধিরা সব সময় হুমকির উপর থাকে। তারপরও কাজ চালিয়ে যেতে হয়। বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরাম কুষ্টিয়া জেলার আহবায়ক জগতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন সালাউদ্দিন চেয়ারম্যান বাচ্চু নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, চেয়ারম্যানদের খবর কেউ রাখে না। আমরা নানাভাবে নির্যাতিত। একদিকে প্রশাসনের অন্য দিকে সন্ত্রাসীদের হুমকি। নানা ঝামেলা মাথায় নিয়ে কাজ করতে হয়। তিনি আরও বলেন, ফোরামের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমš¿xর নিকট নিরাপত্তা চাইব। অনেকে আমার নিকট ফোন করে তাদের ভীতির কথা জানিয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলী বলেন, কুষ্টিয়ায় চেয়ারম্যান হত্যাকান্ডের ঘটনা নতুন কোন বিষয় নয়। প্রভাবশালী বিএনপি নেতা কুতুব উদ্দিন জানান, চরমপন্থিদের তৎপরতা আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় কেউ নিরাপদ নয়।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের এএসপি (হেডকোয়ার্টার) আলমগীর হোসেন জানান, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ন মোড় গুলোতে তল্লাসী চালানো হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই: