শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০০৯

পোল্ট্রি বাচ্চা ও ফিডের দাম কমানোর দাবিতে দানা বেধে উঠছে আন্দোলন

ঈদকে সামনে রেখে হটাৎ করে পোল্ট্রি বাচ্চা ও ফিডের দাম বাড়িয়ে দেয়ায় চরম লোকসানের মুখে পড়েছে পোল্ট্রি খামারী ও ব্যবসায়ীরা। এ কারনে পোল্ট্রি হ্যাচারী ও ফিড কোম্পানীর মালিকদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তারা। খবর ই-বার্তা’র।
এক সপ্তাহ আগে চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে এ আন্দোলনের সূচনা হলেও এখন তা দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যেই পোল্ট্রি খামারী ও ব্যবসায়ীরা কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, যশোর, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গায় দফায় দফায় বৈঠক করছেন। যেসব জেলায় পোল্ট্রি ফিড এন্ড বাচ্চা ব্যবসায়ী সমিতির কমিটি গঠন করা হয়নি সেখানে নেতৃবৃন্দ গিয়ে কমিটি গঠন করছেন। প্রতিদিন মাইত্রোবাসের বহর নিয়ে জেলায় জেলায় গিয়ে বৈঠক করছেন নেতৃবৃন্দ। যৌক্তিক কারণ উপস্থাপন করে আন্দোলনের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন নেতারা। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার পরপর দুইদিন কুষ্টিয়ায় ৫ জেলার নেতৃবৃন্দ বৈঠক করেছেন। এরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের আন্দোলন সমন্বয় করছেন। বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা থেকে মাইক্রোবাস যোগে নেতৃবৃন্দ কুষ্টিয়া এসে বৈঠক করে সেখানকার নেতাদের সাথে নিয়ে মেহেরপুরে গিয়ে বৈঠকে মিলিত হন। ওদিকে একই দিনে ঝিনাইদহ থেকে আরেকটি গাড়ির বহর বের হয়। বহরটি মাগুরায় গিয়ে সেখানকার নেতাদের সাথে আলোচনা করেছেন।


কুষ্টিয়ার চৌড়হাসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কুষ্টিয়া জেলা পোল্ট্রি ফিড এন্ড বাচ্চা ব্যবসায়ী সমিতির আহবায়ক হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা করেন, চুয়াডাঙ্গা সমিতির সভাপতি মোঃ খোকন, সাধারন সম্পাদক সামসুল আলম, মেহেরপুর সমিতির সভাপতি খোকন মিয়া ও সাধারন সম্পাদক বশির আহমেদসহ বিভিন্ন জেলার নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ বলেন, আসাধু মুনাফাখোর পোল্ট্রি হ্যাচারী ও ফিড কোম্পানীর মালিকরা হঠাৎ করে বাচ্চা ও ফিডের(খাবারের) দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ১ লাফে ১০ টাকা বাড়িয়ে একদিনের বাচ্চা বিক্রি করছে তারা ৪৮ টাকায়। আর পোল্ট্রি ফিডের দাম ধীরে ধীরে বাড়িয়েই যাচ্ছে কোম্পানীর মালিকরা। বর্তমানে ৫০ কেজির এক বস্তা ফিড বিক্রি হচ্ছে ১৩৬০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলেন, দেড় বছর আগেও এক বস্তা ফিডের দাম ছিল মাত্র ৯শত টাকা। আর ২বছর আগে এক দিনের বাচ্চার দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। পোল্ট্রি খামারীরা বলেন, ৪৮টাকা পিচ বাচ্চা কিনে তা ৩৫থেকে ৩৭দিন ধরে খাবার খাইয়ে মেডিসিন দিয়ে যতœ করলে ওই পোল্ট্রির ওজন হয় ১কেজি ৫০০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম। এরজন্য তিনকেজি খাবারের প্রয়োজন হয় যার বর্তমান মূল্য ৮৪টাকা, মেডিসিনসহ অন্যান্য খরচ হয় প্রায় আরো ১৫ টাকা। বর্তমানে যে হারে পোল্ট্রি মুরগীর দাম কমেছে তাতে এ খরচ করে পুষিয়ে উঠতে পারছেন না পোল্ট্রি খামারীরা। বর্তমানে ৮৫টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে পোল্ট্রি। অথচ মাত্র ১৫-২০টাকা উৎপাদন খরচ হলেও হ্যাচারী মালিকরা একদিনের বাচ্চা বিক্রি করছেন ৪৮ টাকায়। আন্দোলনকারিরা ৩৫টাকায় বাচ্চা আর ১২শ টাকায় ফিডের বস্তা বিক্রি করার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, তা না হলে দ্রুত বর্ধনশীল এ ব্যবসা এবার মুখ থুবড়ে পড়বে। নেতৃবৃন্দ কুষ্টিয়ার বৈঠক থেকে প্রতি জেলার পোল্ট্রি খামারী ও ব্যবাসায়ীদের এ আন্দোলনে শরীক হবার আহ্বান জানান। তারা আগামী রোববার কুষ্টিয়ায় দক্ষিণ পশ্চিমের সকল জেলার পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের সমাবেশ ডেকেছেন। সমাবেশ থেকে প্রতিবাদ মিছিল বের হবে। তারপর জেলা প্রশাসকের নিকট স্বারকলিপি দেবার কর্মসূচী ঘোষনা দেয়া হয়। নেতারা আরো ঘোষনা দেন দাবি মানা না হলে আরো কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে।

কোন মন্তব্য নেই: