সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০০৯

কামরুল ইসলাম সিদ্দিক-এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ, অকৃতজ্ঞ কুষ্টিয়াবাসী গুনীর কদর করতে জানেনা


এলজিইডির প্রতিষ্ঠাতা অবসরপ্রাপ্ত সচিব কুষ্টিয়ার কৃতি সন্তান কামরুল ইসলাম সিদ্দীক এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। গতবছর ১ সেপ্টেম্বর রাতে নিউইয়ার্কে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেন। এলজিউিডির প্রধান প্রকৌশলী ও পিডিবির চেয়ারম্যান থাকাকালে তিনি কুষ্টিয়া অঞ্চলে গ্রামীণ অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করেন। কুষ্টিয়ার উন্নয়নে সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তার হাতের ছোয়া। এছাড়াও কুষ্টিয়া অঞ্চলের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে তিনি এ অঞ্চলের মানুষের ভালবাসা অর্জন করেন। আইটি সেক্টরেও তার ছিল অসামান্য অবদান। ই-বার্তা। কামরুল ইসলামের মৃত্যুর পর কুষ্টিয়াবাসী শোকে পাথর হয়ে যায়। সবসময় তিনি যেমন কুষ্টিয়াবাসীর সমব্যাথী ছিলেন তেমনি কুষ্টিয়াবাসীও বেদনাক্লিষ্ট হয়ে পড়ে তার মৃত্যুর খবরে। সর্বস্তরের মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। কুষ্টিয়ার মানুষ কখনই তার কাছ থেকে নিরাশ হয়নি। সেজন্যইতো মৃত্যুর খবর পেয়ে সেদিন অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেদিন মনে হয়েছিল কুষ্টিয়াবাসী যেন এতিম হয়ে গেছে। যার অবদান ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কুষ্টিয়ার আনাচে কানাচে। যার কলমের খোচায় যেখানে সেখানে সড়ক নির্মিত হয়েছে, বিদ্যুতের আলো পৌছে গেছে প্রত্যন্ত গ্রামে। অথচ মাত্র একবছরেই আমরা বেমালুম ভুলে গেলাম তাকে। আজ ১ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যুবার্ষিকী কিন্তু শোকে কাতর সেই কুষ্টিয়াবাসী কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেনি। কেউ আজ তার স্মৃতিচারন করবে না। অথচ তার বর্ণময় জীবন নিয়ে দিনের পর দিন আলোচনা করা যেত। বড়িয়া মসজিদে পরিবারের পক্ষ থেকে আজ দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। আগামীকাল ২ সেপ্টেম্বর বিকেলে কুষ্টিয়া এলজিইডি চত্বরে কামরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা, দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এলজিইডির কর্মকর্তা কর্মচারীরা এ আয়োজন করেছে। খবর ই-বার্তার। এ সামান্য আয়োজনটুকুও করতে পারতো কুষ্টিয়ার কোন সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা নাগরিক সংগঠন।
জীবন বৃত্তান্ত ঃ কামরুল ইসলাম সিদ্দীক কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বড়িয়া গ্রামে ১৯৪৫ সালের ২০ জানুয়ারী জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম সিদ্দীক ও মাতার নাম বেগম হামিদা সিদ্দীকি। কামরুল ইসলাম সিদ্দীক নিজে (মেজো) ও ছোট ভাই ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলাম সিদ্দীক ছাড়া বাকিরা সবাই আমেরিকা প্রবাসী। কামরুল ইসলাম সিদ্দীক ১৯৬০ সালে কুষ্টিয়া মুসলিম হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও ১৯৬২ সালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে সাফল্যের সাথে এইচএসসি পাশ করেন। বুয়েট থেকে ১৯৬৬ সালে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর অর্জন করেন। এরপর যৌথ স্নাতক কর্মসূচীর অধীনে বুয়েট ও যুক্তরাষ্ট্রের শেফিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৮ সালে আরবান ও রিওজিনাল প্লানিং বিষযের উপর উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭৯ সালে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদে প্রকৌশলী হিসাবে তার চাকরী জীবন শুরু হয়। অত্যন্ত মেধাবী কামরুল ইসলাম অল্প সমযের মধ্যে প্রকৌশলী হিসাবে নিজের অবস্থান শক্ত করেন। দীর্ঘ চাকরী জীবনে কামরুল ইসলাম এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, যমুনা সেতুর সচিব, গনপূর্তের সচিব, পিডিবির চেয়ারম্যানসহ সরকারী অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের দ্বায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন গ্লোবাল ওয়াটার পার্টনারশীপের এশিয়া অঞ্চলের চেয়ারম্যান।

কোন মন্তব্য নেই: