শনিবার, ১ আগস্ট, ২০০৯

নসিমন-করিমন বন্ধের দাবীতে কুষ্টিয়া অঞ্চলের ৬ জেলায় পরিবহণ ধর্মঘট শুরু


স্যালো ইঞ্জিনচালিত নসিমন, করিমনসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবীতে গতকাল শনিবার সকাল ৬টা থেকে কুষ্টিয়াসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলায় একযোগে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলা পরিহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এর ফলে দক্ষিনাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে হাজার হাজার যাত্রীকে।
অন্যান্য জেলা থেকে ছেড়ে আসা পরিবহনও আটকে দেয় পিকেটার পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। সেখানে অসংখ্য বাস ট্রাকের জট লেগে আছে। রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা গাংচিল পরিবহন কুষ্টিয়ার মজমপুরে ভাঙচুর করা হয়। kushtianews.blogspot.com
বাস মালিক সমিতিগুলো দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কে নসিমন করিমনসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে। এর আগেও তারা বেশ কয়েকবার কর্মসূচী পালন করেছে। কুষ্টিয়া বাস মিনিবাস মালিক গ্র“পের সাধারন সম্পাদক ও ৬ জেলা ঐক্য পরিষদের আহবায়ক হাসান আবুল ফজল সেলিম বলেন, নসিমন করিমনসহ এসব অবৈধ যানবাহনে ভাল ব্রেক না থাকায় মহাসড়কে চলাচলের সময় ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ থাকেনা। তাছাড়া এসব অবৈধ পরিবহনের চালকরাও দক্ষ বা লাইসেন্সধারী না। যে কারনে মহাসড়কে চলমান দ্রুতগামী বাস-ট্রাক এদের কারনে নানা অসুবিধায় পড়ে। প্রায়ই ওইসব সালো ইঞ্জিনের পরিবহন বাস-ট্রাকের সাথে ধাক্কা দেয়। ঘটে প্রাণহানির ঘটনা। বাস মালিকরা জানান, দুর্ঘটনার পর আইনী ঝামেলা পোহাতে হয় বাস ট্রাকের মালিককে। কারণ লাইসেন্স না থাকার কারনে পুলিশ স্যাালো চালিত ওইসব পরিবহনের নামে মামলা দিতে পারেনা পুলিশ। তখন অপরাধ না থাকলেও মামলা টানতে হয় বাস মালিকদের।
গত ২১ জুলাই চুয়াডাঙ্গায় ৬ জেলার বাস, মিনিবাস, ট্রাক, ট্র্যাংকলরি, মাইক্রোবাস ও বেবি টেক্সিসহ ভাড়ায় চালিত বিভিন্ন পরিবণ মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এক বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ৩১ জুলাই এর মধ্যে সড়কের জন্য বিপদজনক নসিমন, করিমনসহ সব ধরণের অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে সরকারী প্রশাসন পদক্ষেপ না নিলে ১ আগষ্ট ধেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘট শুরু করা হবে। জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এর প্রেক্ষিতে বৃস্পতিবার কুষ্টিয়ায় ফের বৈঠকে বসেন পরিবহণ মালিক ও শ্রমিক নেতারা। এ বৈঠকে ১ আগষ্ট থেকে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়।
এদিকে নসিমন-করিমন চালক এসোসিয়েশনের আহবায়ক বাহার বলেছেন, কুষ্টিয়া অঞ্চলেই প্রায় ৫ হাজার নসিমন করিমন রয়েছে। যা গ্রামীন যোগাযোগ ব্যবস্থায় খুবই উপকারে আসছে সাধারন মানুষের। কৃষকদের সবজিসহ ফসল, অসুস্থ্য রোগী হাসপাতালে নেয়া, লাশ পরিবহন ও গ্রামাঞ্চলে পুলিশের অভিযান চালনার ক্ষেত্রে আমাদের কোন বিকল্প নেই। তিনি মনে করেন, এ পরিবহন চলাচল বন্ধ করা হলে এর সাথে জড়িত ১০ হাজার পরিবারের জীবন জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। বরং তিনি এসব পরিবহনের লাইসেন্স দেবার দাবি তোলেন।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান বলেন রোববার দু-পক্ষকে নিয়ে বসে এর একটি সমাধান করা হবে।

কোন মন্তব্য নেই: