সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০০৯

কুষ্টিয়া পুলিশে বদলি আতংক, এবার সদর সার্কেলের এএসপি


ই-বার্তা : কুষ্টিয়া পুলিশে চলছে বদলি আতংক। তিনজন এসআই, দুজন ওসির পর সর্বশেষ বদলি করা হয়েছে সদর সার্কেলের এএসপি কামরুল হাসানকে। রোববার বিকেলে আসা ফ্যাক্সবার্তায় সোমবারের মধ্যে তাকে পুলিশ হেডকোয়ার্টাসে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। কুষ্টিয়ার আইন-শৃংখলার চরম অবনতির কারনে এসব বদলি করা হচ্ছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে অতি স্পর্শকাতর এ জেলায় বদলিজনিত এসব শুন্য পদ সাথে সাথে পূরন না করায় পুলিশের কাজে স্থবিরতা আসতে পারে বলে অনেকেই আশংকা করেছেন। আবার বদলিজনিত আতংকে কাজে অনাগ্রহের আশংকাও করা হচ্ছে। খবর ই বার্তার। আমারও বদলি হতে পারে আজ-কালের মধ্যেই এমন ভেবে অফিসাররা মানসিক চাপে রয়েছেন। অথচ আইন-শৃংখলার চরম অবনতির পর এ জেলায় পুলিশের অপারেশন জোরদার করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করার জন্য আরো দুইশত পুলিশ সদস্যর চাহিদার কথা জানানো হয়েছে। সেই সময়ে পুলিশের কমান্ডিং পর্যায়ে এ ধরনের শুন্যতা চলমান অপারেশনের সফলতা নিয়ে সংশয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। একজন পুলিশ ওফিসার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, যেভাবে বদলি হচ্ছে সেভাবে পদ পূরন হচ্ছে না। বর্তমান সময়ে কুষ্টিয়ার জন্য একাজটি করা উচিত হচ্ছে না। একবারে বদলির চার্ট করে সেই স্থানে বিকল্প লোক সেট করে বদলি করলে কোন সমস্যা হতো না। কিন্তু এভাবে একদিকে আতংক অন্যদিকে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
গত মাসে খোকসা থানার ওসি শেখ আতিয়ার রহমানকে বদলি করা হয়। তার স্থানে বদলি হয়ে আসা খোকসা থানার ওসি বেলাল উদ্দিন আছেন তিনদিনের ছুটিতে। দায়িত্ব পালন করছেন এসআই রবিউল ইসলাম। ২০ আগষ্ট পুলিশ প্রধান নূর মোহাম্মদ যখন কুষ্টিয়ায় সুধী সমাবেশ করছিলেন তখন সদর থানার ওসি বাবুল উদ্দিনের স্ট্যান্ড রিলিজের অর্ডার আসে। ২০ তারিখেই দায়িত্ব হস্তান্তর করে তিনি চলে যান চট্রগ্রাম রেঞ্জে। তার স্থলে এখনো সদর থানায় কোন ওসি দেয়া হয়নি। কাজ চালাচ্ছেন এসআই জিয়া। সদর থানার সেকেন্ড ওফিসার মাহাবুবকে বাগেরহাট জেলায়, এস আই হোসাইনকে নড়াইল ও এসআই আজিজ পিপিএমকে এরমধ্যে ডিবি শাখা বদলি করা হয়েছে।
কুমারখালী ওসি খালেদ হোসেনও ২০ তারিখে দায়িত্ব হস্তান্তর করে চট্রগ্রাম রেঞ্জে বদলি হয়ে গেছেন। থানার সেকেন্ড অফিসার আতিকও ছুটি নিয়ে ট্রেনিং এ আছে। এসআই আব্দুল গফুর ওসির দায়িত্ব পালন করছেন।
ওদিকে দুই মাস আগে গত ২০ জুন ভেড়ামারা এএসপি প্রত্যুষ কুমারকে নোয়াখালী পুলিশ ট্রেণিং সেন্টার-এ বদলি করা হয়। এএসপি হেডকোয়ার্টার্স আলমগীর হোসেন সেপদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। জানা গেছে, ভেড়ামারা ও দৌলতপুর থানার সাবেক ওসি পদোন্নতিপ্রাপ্ত সিএ হালিমকে একমাস আগে ওই সার্কেলের দায়িত্ব হলেও তিনি এখনো যোগদান করেননি। নানা কারন দেখাচ্ছেন তিনি। তিনি এ এলাকার অস্থি-মজ্জ্বা চেনেন তো, তাই এই মুহুর্তে আসতে চাচ্ছেন না বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। অত্যধিক সন্ত্রাস কবলিত এই জেলায় এখন তিন এএসপির স্থলে রয়েছেন মাত্র একজন। অনেকটা সবে ধন নীলমনি। তিনি হলেন আলমগীর হোসেন। ফাইল ওয়ার্ক, মামলার কাজ, তদন্ত রিপোর্ট দেখা, সন্ত্রাস দমন পরিকল্পনা সবই বর্তেছে তার উপর। সন্ত্রাসীদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় হিমশিম অবস্থা তার।
অথচ ২০ আগষ্ট আইজিপি(পুলিশ প্রধান) নূর মোহাম্মদ কুষ্টিয়ায় বলেছিলেন, অন্যান্য জেলার তুলনায় কুষ্টিয়ায় পুলিশের ফোর্স, গাড়ী, অস্ত্রসহ সকল সাপোর্ট তুলনামুলক বেশি দেয়া হবে। কিন্তু বেশিতো দুরের কথা শুন্যপদ পূরনই হচ্ছেনা এখন।
এসব ব্যাপারে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন খান ই-বার্তাকে জানান, সদর থানায় প্রাপ্যতা অনুযায়ী এসআই ঠিকই আছে। তিনি বলেন, পুলিশের অভিযান জোরদার করা হয়েছে। নতুন নতুন প্লান চলছে। এজন্য অতিরিক্ত ২শ পুলিশ চাওয়া হয়েছে। দ্রুত পাবেন বলে আশাবাদী। এসআইদের তেমন শুন্যতা নেই। বদলি নিয়মিত ব্যপার। অচিরেই সকল পদ পূরন করা হবে বলে তিনি আশাবাদী। অপারেশন চলছে তবে সিনিয়র অফিসারের শুন্য পদগুলি পূরণ করা হলে তা আরো গতিশীল হবে। জনগনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের সক্ষমতা রয়েছে হতাশ হবার কিছু নেই।

কোন মন্তব্য নেই: