রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০০৯

ভেড়ামারায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে কলেজ শিক্ষক নিহত ॥ আওয়ামী লীগ নেতা মেহেরুলসহ গুলিবিদ্ধ-৪



দেহ আর মাথা আলাদা করা ট্রিপল মাডারের মাত্র ৬ দিনের মাথায় এবার কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় একদল বন্দুকধারীর গুলিতে এক কলেজ শিক্ষক নিহত হয়েছেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে ভেড়ামারা শহরের জাহাঙ্গীরের কাপড়ের দোকানে এ ঘটনা ঘটে। এসময় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলি বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন এক আওয়ামী লীগ নেতাসহ আরো ৪জন। নিহত ব্যক্তি হলেন, ভেড়ামারার বিজেএম কলেজের প্রভাষক বান্দা ফাত্তাহ মোহন (৫০)। খবর ই-বার্তা'র।
গুলিবিদ্ধ অন্যরা হলেন, ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেরুল আলম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আজিজুল হকের ছেলে এনামূল হক পটল, কৃষি ব্যাংকের সুপারভাইজার হাফিজুর রহমান ও ব্যবসায়ী বিষু। হামলাকারি সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবীতে স্থানীয়রা ভেড়ামারা শহরে মিছিল করেছে। এলাকাবাসী কুষ্টিয়া-ভেড়ামারা মহাসড়ক অবরোধও করে রাখে। এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জাহাঙ্গীর গার্মেন্টেসের মালিক মহিদুল ইসলামকে আটক করেছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শিরা জানায়, হতাহতরা ভেড়ামারা শহরের রেল বাজারের কাপড়ের দোকান জাহাঙ্গীর স্টোরে বসে ছিলেন। রাত ৮টার দিকে দু’টি মটরসাইকেলে ৬ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী ঐ দোকানে প্রবেশ করে মেহেরুল আলম ও দোকানে থাকা লোকজনকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ী গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। চলে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা ফাঁকা গুলি বর্ষন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার ব্যবসায়ীরা আহতদের উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বি.জে.এম কলেজের প্রভাষক বান্দা ফাত্তাহ মোহন মারা যান। গুলিবিদ্ধ আহত মেহেরুল আলম ও ঠিকাদার এনামুল হক, আনোয়ারুল হক ও ব্যাংক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে পরিস্থিতির অবনতি হলে তাদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে মেহেরুলের অবস্থা গুরুত্বর বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা মেহেরুলকে দেখতে রাতেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে কুষ্টিয়া-৪ আসনের এমপি সুলতানা তরুনসহ জেলার শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষ ভীড় জমান।
ওদিকে এ ঘটনার পর পরই ভেড়ামারা শহরের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেছে। পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে। এ ঘটনার পর ভেড়ামারা থানা পুলিশ রেলবাজার এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর গার্মেন্টেসের মালিক মহিদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেপ্তার করেছে। ভেড়ামারা থানার এসআই ও অতিরিক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনূল ইসলাম বলেন, আওয়ামীলীগ নেতা মেহেরুল আলম ১৫ আগষ্টের জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি শেষ করে ঐ দোকানে বসে কথা বলছিল। এ সময় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা তাকে ও তার সাথে থাকা লোকজনকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ধারনা করা হচ্ছে মেহেরুল আলমকে হত্যার উদ্দেশ্যেই সন্ত্রাসীরা এঘটনা ঘটিয়েছে। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দীন খান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ভেড়ামারার গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ধরার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ দিকে ্ ঘেটনার পর কুষ্টিয়া শহরেও টহল জোরদার করা হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই: