বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০০৯

সন্ত্রাসীরা একটি গুলি করলে পুলিশ ৫০ টি করতে বাধা কোথায়-কুষ্টিয়ায় পুলিশ প্রধান



কুষ্টিয়ায় আইন-শৃংখলা বিষয়ক সুধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) নুর মোহাম্মদ বলেছেন, আপনাদের ভয়-ভীতির কথা শুনে আমি হতাশ হচ্ছিনা বরং আরো সাহস পাচ্ছি। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা একটি গুলি করলে পুলিশের ৫০টি গুলি করতে বাধা কোথায়। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলার যে অবনতি হয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের যে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন তার সবই করা হবে। আইজিপি আরো বলেন, এখন থেকে কুষ্টিয়ায় পুলিশের গাড়ী, অস্ত্র, লোকবলসহ সকল প্রকার সাপোর্ট অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি দেয়া হবে। সন্ত্রাসী বা গডফাদার যেই হোক তাকে গ্রেফতার করতে কোন বাধা নেই। এর সাথে যদি সরকার দলের কেউ জড়িত থাকে তাকেও ধরতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে জনগনের সহায়তা ছাড়া পুলিশ কিছুই করতে পারবে না বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, জনগনের শক্তি সবচেয়ে বড় শক্তি। জনগন এক হলে সবই করা সম্ভব। খবর ই-বার্তা'র। তার সাথে এ সমাবেশে যোগ দেন র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) হাসান মাহমুদ খন্দকার। তিনি বলেন, সামনের দিনে আর রং বা বর্ণ দেখে আইন প্রয়োগ করা হবে না। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এমনটিই আমাদের বলা হয়েছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাস দমনে আগামী দিনে কুষ্টিয়া পুলিশের সাথে র‌্যাব যৌথভাবে কাজ করবে। তিনি হুশিয়ার উচ্চারণ করে বলেন, এখন থেকে যে কোন কঠোর সিদ্ধান্ত দিতে কুষ্টিয়ার আইন প্রয়োগকারি সংস্থা কোন দ্বিধা করবে না। জনগনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন আপনারা দিশেহারা হবেন না আগে যেভাবে সন্ত্রাসীদের দমন করা হয়েছে ভবিষ্যতেও সেভাবে দমন করা হবে। সন্ত্রাসীদের সাথে ফুটবল খেলার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ-র‌্যাব হলো গোল রক্ষক। আর জনগনকে বিভিন্ন অংশে কেই ফরোয়ার্ড কেউ উইং-এ খেলতে হবে। জনগণ ভালো না খেললে গোল পোষ্টের উপর চাপ আসবে। আর জনগণ ভাল খেললে প্রতিপক্ষ মিড লাইনের উপরে আসতে পারবে না।
কুষ্টিয়া পৌরসভা অডিটোরিয়ামে বেলা সাড়ে ১১টায় এ সূধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা শুরু হয়। সভায় কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা জনপ্রতিনিধি, কমিউনিটি পুলিশের নেতা, সুধী, সাংবাদিক ও দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের শীর্ষ পুলিশ এবং র‌্যাব কর্মকর্তাবৃন্দ এ এলাকায় চরমপন্থী-সন্ত্রাস দমনে তাদের মতামত প্রকাশ করেন। জানান, আতংকের কথা, নানা সমস্যার কথা। সভায় পুলিশ ও র‌্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তা ছাড়াও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর এম. আলাউদ্দিন, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান, কুষ্টিয়া পৌরসভা মেয়র আনোয়ার আলী প্রমূখ।
সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় খুন-খারবি বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পুলিশ ও র‌্যাব প্রধান এ সফরে এসেছেন বলে সভায় জানানো হয়। উল্লেখ্য, গত ১১ দিনে কুষ্টিয়ায় ৯ জন খুন হয়েছে। এর মধ্যে ৪ জনের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়।
সুধীবৃন্দ এ সভায় পুলিশের শক্তি বাড়ানো ও হোয়াইট কালার ক্রিমিনাল অর্থাৎ গডফাদারদের গ্রেফতারের তাগিদ দেন। ক্রসফায়ারের কথা তুলে ধরে অনেকেই বলেন, এর আগে যে বিশেষ ব্যবস্থায় সন্ত্রাস দমন করা সম্ভব হয়েছিল জোরে শোরে সেই ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া উচিত। কুষ্টিয়ায় আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি হলেও কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের নেতারা পুলিশের ও তাদের ভূয়সী প্রশংসা করে বক্তব্য রাখায় বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

কোন মন্তব্য নেই: