শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০০৯

বঙ্গবন্ধু ঘাতকেরা কে কোথায়

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে পলাতক ছয়জনকে এখনো দেশে ফিরিয়ে আনা হয়নি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরও তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ৯ আসামির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল রেড এলার্ট জারি করেছে। গত জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ফ্রান্সে অবস্থিত ইন্টারপোলের সদর দফতর থেকে এই রেড এলার্ট জারি করা হয়। এসব আসামি বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন।
এরা হলেন লে.কর্নেল (অব.) এসএইচ এমবি নূর চৌধুরী, লে.কর্নেল (অব.) শরীফুল হক ডালিম, লে.কর্নেল (অব.) খন্দকার আব্দুর রশিদ, লে.কর্নেল (অব.) এম এ রাশেদ চৌধুরী, মেজর (অব.) আহমেদ শরীফুল হোসেন, ক্যাপ্টেন (অব.) হাশেম কিসমত, ক্যাপ্টেন (অব.) নাজমুল হোসেন আনসার, ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন। অবশ্য এদের মধ্যে মেজর (অব.) আহমেদ শরীফুল হোসেন, ক্যাপ্টেন (অব.) হাশেম কিসমত ও ক্যাপেন্ট(অব.) নাজমুল হোসেন আনসারকে মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন একজন বিচারক।
ওয়ান ইলেভেনের পর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একজনকে দেশে ফিরিয়ে আনার পর বর্তমানে কারাগারে পাঁচজন আটক রয়েছে। এক ঘাতকের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারেনি। রিসালদার মোসলেম উদ্দীন সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ গোলাম রসুলের আদালত সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচারে ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। হাইকোর্টের তৃতীয় আদালতের বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে তিনজনকে নির্দোষ ঘোষণা করেন। এই তিনজন হলেন ক্যাপ্টেন (অবঃ) আবদুল মাজেদ, লে: (অবঃ) কিসমত হাসেম ও লে: (অবঃ) নাজমুল হক আনসারী। নিম্ন আদালতে লেঃ কর্নেল (অবঃ) সৈয়দ ফারুক রহমান, লেঃ কর্নেল (অবঃ) সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও লেঃ কর্নেল মুহিউদ্দিন আহমেদ আর্টিলারী’র উপস্থিতিতে বিচার কাজ পরিচালিত হয়। বিগত আমলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে থাইল্যান্ড থেকে পলাতক মেজর (অবঃ) বজলুল হুদাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার লেঃ কর্ণেল একেএম মহিউদ্দিন আহমদ ল্যান্সারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরিয়ে আনে। এই পাঁচজন কারাগারে আটক রয়েছেন।
হাইকোর্টে ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। এদের মধ্যে সাতজনই বিদেশে পলাতক রয়েছে। বেসরকারি তথ্য অনুযায়ী লেঃ কর্নেল (অবঃ) আবদুল আজিজ পাশা ২০০২ সালে জিম্বাবুয়েতে মারা যান। অপরদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়ীদ তার একটি গ্রন্থে লিখেছেন, সেনাবাহিনীর মধ্যে ক্যুতে জড়িত থাকার অপরাধে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনামলে রিসালদার মোসলেম উদ্দিনকে ফাঁসি দেয়া হয়। অবশ্য মামলা চলাকালীন সময় সরকার পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবীরা গ্রন্থের ঐ তথ্য সমর্থন করেননি। এখনো জানা যায়নি রিসালদার মোসলেম উদ্দিন জীবিত নাকি মৃত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক অপর পাঁচজন বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। লেঃ কর্নেল (অবঃ) খন্দকার আবদুর রশিদ লিবিয়াতে, লেঃ কর্নেল (অবঃ) শরিফুল হক ডালিম পাকিস্তানে, লেঃ কর্নেল (অবঃ) এএম রাশেদ চৌধুরী ও মেজর (অবঃ) এসএইচএমবি নূর চৌধুরী কানাডায় এবং ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ ভারতে রয়েছেন জানা গেছে ।

কোন মন্তব্য নেই: