বুধবার, ১৯ আগস্ট, ২০০৯

ঢাকার পথে পথে ট্রাকে চাঁদাবাজি

কুষ্টিয়া অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকা যাবার পথে ট্রাক থামিয়ে চলছে চাঁদাবাজি। তবে এ চাঁদাবাজিতে কোন রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মি বা কোন চাঁদাবাজ বাহিনীর সদস্যরা জড়িত নয়। এসব চাঁদা তোলেন থানা ও হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা। পয়েন্টে পয়েন্টে চাঁদা দিতে দিতে ট্রাক ড্রাইভাররা চরম অতীষ্ট। কুষ্টিয়ার মজমপুর গেটে এক ড্রাইভারের কাছে চাঁদাবাজির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাই বোধহয় সাংবাদিক। কি করবেন চাঁদাবাজির কথা শুনে। লিখবেন আর আমাদের চাঁদার পরিমান বেড়ে যাবে। তিনি কোন মতে তার নাম বা কোথায় কোথায় চাঁদা দেন তা বললেন না। কথা হয় ট্রাক ড্রাইভার সেলিম, হারুন ও ট্রাক মালিক মিজানুরের সাথে। তাদের দেয়া হিসেব মতে, কুষ্টিয়া থেকে রাজবাড়ী হয়ে ঢাকা যেতে ৫ পয়েন্টে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা চাঁদাবাজি করে থাকেন। আর সিরাজগঞ্জ অর্থাৎ যমুনা সেতু হয়ে গেলে চাঁদাবাজি হয় তিনটি পয়েন্টে। রাজবাড়ী দিয়ে যাবার পথে কুষ্টিয়ায় খোকসায় থানা পুলিশ ট্রাক দাড় করিয়ে ৫০টাকা থেকে ১০০টাকা চাঁদা তোলেন। এরপর রাজবাড়ীর গান্দিমারা পৌছালে সেখানে হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা অপেক্ষা করেন চাঁদার জন্য। গাড়ীর কত সমস্যা, রং ভাল না, ফিটনেস নেই, ড্রাইভারের জুতা পরা নেই। যদি এসব বলেও আটকানো না যায় তাহলে বলা হয় রিকুইজিশন করা হবে। এরপর ১০০ টাকা দিলেই সব ভাল। চলে যাওয়া যায় বিনা বাধায়। এরপর রাজবাড়ী মোড়ে থানা পুলিশের জন্য ৫০ টাকা নির্ধারিত। না দিলেই শুরু হয়ে যায় নানা বাহানা। গোয়ালন্দ ঘাটে গিয়ে মুধুমাত্র ৫৭০ টাকার ফেরী টিকিট দিয়ে আজ পর্যন্ত কোন ট্রাক পার হতে পারেনি। অতিরিক্ত ১০০/১৫০ টাকা না দিলে সারাজীবন লাইনে পড়ে থাকতে হবে ট্রাক নিয়ে। ঘাট পার হবার পরপরই রেডি হয়ে থাকে মানিকগঞ্জ পুলিশ। ১০০ টাকা না দিয়ে যাবার কোন উপায় নেই। আর যমুনা সেতু পার হয়ে ঢাকায় যাবার পথে কুষ্টিয়া পাবনার মাঝখানে লালন শাহ সেতু পেরুনোর পরই অপেক্ষায় থাকে পুলিশ। তাদের দিতে হয় ৫০ থেকে ১০০টাকা। এরপর বানিয়াপাড়া ও সিরাজগঞ্জ মোড়ে আরো ১০০টাকা করে দিতে হয়। আর ঢাকা শহরে প্রবেশের পর প্রতি ১০ কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত একবার টাকা দিতে পুলিশকে।

কোন মন্তব্য নেই: